করোনা রোগী ও তাদের স্বজনের লাঞ্ছনা-গঞ্জনা
- আপডেট সময় : ০১:১২:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০
- / ১৫১১ বার পড়া হয়েছে
করোনা রোগী ও তাদের স্বজনরা যেন সমাজে বসবাসের অধিকারই হারিয়ে ফেলেছেন। সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেই তাদের শুধু একঘরেই নয়, সইতে হচ্ছে নানা ধরনের লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। এমন সামাজিক রোষানল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না হোম-কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরাও। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরনের অমানবিক আচরণে রোগীদের মনোবল ভেঙে পড়ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে গোপনীয়তার পথও ধরছেন। যা হতে পারে আরো ভয়াবহ।
ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা শেষে গেল ৭ এপ্রিল বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন রাজশাহী কলেজের ছাত্রী জিন্নাত আরা। ওইদিনই তাদেরসহ অন্তত ৪০ জনকে যশোর হাসপাতালের একটি কক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় এভাবেই গাদাগাদি করে। কিন্তু কোনো উপসর্গ না থাকায় চারদিন পর পাঠিয়ে দেয়া হয় রাজশাহীতে।
বাসা ফিরেও মাকে নিয়ে স্বস্তিতে নেই তিনি। সরকারি নির্দেশনা মেনে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও পাড়ার লোকজনের লাঞ্ছনা ও ভর্ৎসনায় বিষিয়ে উঠেছে জীবন। এমনকি বাড়িওয়ালা বের করে দেয়ারও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এরকম সামাজিক অনাচারে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি।
করোনা রোগীদের সামাজিক অবস্থা আরো ভয়াবহ। নিজঘরে বন্দি থাকলেও মানসিক নির্যাতনে হতাশা গ্রাস করেছে তাদের। পাড়া-প্রতিবেশীর অপমানে অনেকেই হারিয়ে ফেলছেন সুস্থ জীবনে ফেরার মনোবলও। সমাজে এমন নিগৃহীত হওয়ায় দুঃসহ হয়ে উঠেছে তাদের দিনগুলো।
তবে সমাজে কিছু মানুষের এ ধরনের আচরণকে চরম অমানবিক বলছেন চিকিৎসকরা।আর মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক ও অজ্ঞতা থেকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
করোনা সংক্রমিত বা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের কোনোভাবেই লাঞ্ছনা নয় বরং মানসিক শক্তি যোগানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি সমাজের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ তাদের।