মানুষের নৃশংসতার শিকার কিংবা দুর্ঘটনায় আহত কোন পশু পাখির খবর পেলেই ত্রাণকর্তা হয়ে পাশে দাড়ান চট্টগ্রামের হালিশহরের সুমি বিশ্বাস। পরম মমতায় আহত পশু পাখিদের তুলে আনেন তার সেল্টার হোমে। সেবা শুশ্রূষায় সুস্থ করে তোলার পর, অবমুক্ত করে দেন পশু-পাখিদের। আর যাদের পুরোপুরি সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকে না তাদের স্থায়ী ঠাঁই হয় সুমির সেল্টার হোমেই। গত ৬ বছর ধরে পশুপ্রেমের এমন উজ্জল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন তিনি।

অটোরিক্সা চাপায় এক পা হারানো এই কুকুর ছানাটির নাম পাংশি। গেল মাসের শুরুতে মারাত্মক আহত অবস্থায় নগরীর স্টিলমিল এলাকা থেকে উদ্ধার করে আনে সুমি বিশ্বাস। এরই মাঝে পাংশির পায়ের ঘাঁ অনেকটা শুকিয়ে গেছে। আরেকটু সেরে উঠেলেই অস্ত্রপচার করা হবে।

চৌমুহনী এলাকায় মানুষের নৃশংশতার শিকার হয়ে এক চোখ হারিয়েছে জাম্পি। অনেক চিকিৎসা করেও চোখের ঘাঁ শুকায়নি তার। তাই দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সেল্টার হোমেই আছে জাম্পি। ৬ বছরে এমন অন্তত ৭’শো পশুপাখি পেয়েছে সুমির মমতা।

২০১৫ সালে নিজের মতো করে আহত পথপশুদের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন তার সঙ্গী হয়েছেন আরো ৩২ জন তরুণ-তরুনী। এনিমেল কেয়ার অব চট্টগ্রাম নামের একটি সংগঠনেরও যাত্রাও শুরু করেছেন তারা।

সহকর্মীরা বলছেন, প্রতিবছর সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর মাধ্যমে কুকুর নিধন কর্মসুচীতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সরকার। অথচ একটু পরিকল্পনা করলেই এই টাকা দিয়ে পশু পাখির জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

আহত পথপশুদের নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটিকে উৎসাহ দিচ্ছে বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তর।

সুমির সেল্টারহোমে সবশেষ এসেছে এই কুকুরটি। যার গলায় তার পেচিয়ে বিকৃত সুখ অনুভব করছিল মানুষরুপী কিছু অমানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর পেয়ে কুকুরটিকে উদ্ধার করা হয়।