১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম দেয়া হলো মানুষের দেহে

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৫৪৮ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।

এই পরীক্ষায় যে পরিমাণ রক্ত মানুষের দেহে ঢোকানো হয়েছে তা খুবই সামান্য- কয়েক চামচ মাত্র। এই রক্ত কতটা কাজ করে, সেটা দেখাই এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য।

| ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছে এই রক্ত

 

মানুষের দেহে যে রক্ত সঞ্চালন করতে হয়, সেটা এখনো প্রায় সব ক্ষেত্রেই মানুষের দেহ থেকেই নিতে হয়। এজন্যে বহু মানুষ নিয়মিত রক্তদান করেন।

কিন্তু গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরির এই পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্যে সেই সব বিরল গ্রুপের রক্ত তৈরি করা, যা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। যেসব রোগের কারণে শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করার দরকার হয়, তাদের জন্য এর প্রয়োজন খুব বেশি।

ল্যাবরেটরিতে তৈরি এক লোহিত রক্ত কণিকা। এটি ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে সারা শরীরে নিয়ে যায়।

 

মানুষের দেহের রক্তের সঙ্গে যদি সঞ্চালিত রক্ত না মেলে, তখন শরীর এই রক্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। একজনের রক্তের সঙ্গে শুধু আরেকজনের রক্তের গ্রুপ মিললেই হবে না, এই মিল হতে হবে আরও অনেক বেশি।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রফেসর অ্যাশলে টোয়ে বলেন, কিছু কিছু রক্তের গ্রুপ এতটাই বিরল যে একটা দেশে হয়তো মাত্র দশ জন মানুষ আছেন যারা এই রক্ত দিতে পারবেন।

যেমন পুরো যুক্তরাজ্যে ব্লাড ব্যাংকে যত রক্ত আছে তাতে এই মহূর্তে ‘বোম্বে ব্লাড গ্রুপের’ মাত্র তিনটি ইউনিট আছে। এই রক্তের গ্রুপটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ভারতে।

ল্যাবরেটরিতে যেভাবে রক্ত তৈরি করা হয়

এই গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করছে ব্রিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ব্লাড এন্ড ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের গবেষক-দল।

রক্তের যে লোহিত কণিকা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে শরীরের অন্যান্য অংশে নিয়ে যায়, এই গবেষণায় সেটার ওপরই মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

এটি যেভাবে কাজ করে: স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দান করা এক পাইন্ট রক্ত দিয়ে কাজটি শুরু হয়

•এরপর এই রক্ত থেকে চুম্বকের মাধ্যমে এমন কিছু নমনীয় স্টেম সেল বের করে আনা হয় যেগুলোর লোহিত রক্ত কণিকায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে

•এরপর গবেষণাগারে এগুলোকে বেশি সংখ্যায় বড় করার জন্য এমনভাবে রাখা হয় যাতে এগুলো পূর্ণাঙ্গ লোহিত কণিকায় পরিণত হতে পারে

•এই প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগে এবং এই সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ স্টেম সেল থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা যায়।

•এগুলো থেকে ফিল্টার করে এরপর প্রায় দেড় হাজার লোহিত রক্তকণিকা বের করা হয় মানুষের দেহে সঞ্চালন করার জন্য।

“ভবিষ্যতে আমরা এভাবে যত বেশি সম্ভব রক্ত তৈরি করতে চাই। আমার মাথার ভেতর যে দৃশ্যটা আমি দেখতে পাই তাহলো, একটা রুম ভর্তি মেশিন, আর সেখান থেকে মানুষের দান করা স্বাভাবিক রক্ত ব্যবহার করে ক্রমাগত রক্ত তৈরি করা হচ্ছে,” বলছিলেন অধ্যাপক টোয়ে।

পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দুজন মানুষের দেহে এরকম রক্ত দেয়া হয়েছে। মোট দশজন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবকের দেহে এই রক্ত প্রয়োগ করা হবে। তাদেরকে অন্তত চার মাসের ব্যবধানে ৫ হতে ১০ মিলিমিটার পরিমাণে দুবার ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত দেয়া হবে।

এই রক্তে এক ধরণের তেজস্ক্রিয় চিহ্ন (রেডিওঅ্যাকটিভ ট্যাগ) দেয়া আছে, যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই রক্ত কতদিন টিকে থাকে। আশা করা হচ্ছে যে ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত স্বাভাবিক রক্তের চেয়ে অনেক বেশি টিকবে।

লোহিত রক্ত কণিকা সাধারণত ১২০ দিন টেকে, এরপর এগুলো প্রতিস্থাপনের দরকার হয়।

ল্যাবরেটরিতে রক্ত তৈরির গবেষণা

ছবির উৎস,NHSBT

যখন কোন ব্যক্তি রক্ত দান করে, তখন সেই রক্তে সাধারণত নতুন এবং পুরোনো- দুধরণের লোহিত কণিকাই থাকে। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্তে সবই নতুন লোহিত কণিকা, কাজেই এই রক্ত পুরো ১২০ দিন কাজ করার কথা।

গবেষকরা মনে করছেন, এর ফলে ভবিষ্যতে হয়তো রোগীর দেহে অত ঘন ঘন রক্ত দিতে হবে না, বা পরিমাণেও হয়তো কম লাগবে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম দেয়া হলো মানুষের দেহে

আপডেট সময় : ০৩:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।

এই পরীক্ষায় যে পরিমাণ রক্ত মানুষের দেহে ঢোকানো হয়েছে তা খুবই সামান্য- কয়েক চামচ মাত্র। এই রক্ত কতটা কাজ করে, সেটা দেখাই এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য।

| ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছে এই রক্ত

 

মানুষের দেহে যে রক্ত সঞ্চালন করতে হয়, সেটা এখনো প্রায় সব ক্ষেত্রেই মানুষের দেহ থেকেই নিতে হয়। এজন্যে বহু মানুষ নিয়মিত রক্তদান করেন।

কিন্তু গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরির এই পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্যে সেই সব বিরল গ্রুপের রক্ত তৈরি করা, যা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। যেসব রোগের কারণে শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করার দরকার হয়, তাদের জন্য এর প্রয়োজন খুব বেশি।

ল্যাবরেটরিতে তৈরি এক লোহিত রক্ত কণিকা। এটি ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে সারা শরীরে নিয়ে যায়।

 

মানুষের দেহের রক্তের সঙ্গে যদি সঞ্চালিত রক্ত না মেলে, তখন শরীর এই রক্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। একজনের রক্তের সঙ্গে শুধু আরেকজনের রক্তের গ্রুপ মিললেই হবে না, এই মিল হতে হবে আরও অনেক বেশি।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রফেসর অ্যাশলে টোয়ে বলেন, কিছু কিছু রক্তের গ্রুপ এতটাই বিরল যে একটা দেশে হয়তো মাত্র দশ জন মানুষ আছেন যারা এই রক্ত দিতে পারবেন।

যেমন পুরো যুক্তরাজ্যে ব্লাড ব্যাংকে যত রক্ত আছে তাতে এই মহূর্তে ‘বোম্বে ব্লাড গ্রুপের’ মাত্র তিনটি ইউনিট আছে। এই রক্তের গ্রুপটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ভারতে।

ল্যাবরেটরিতে যেভাবে রক্ত তৈরি করা হয়

এই গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করছে ব্রিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ব্লাড এন্ড ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের গবেষক-দল।

রক্তের যে লোহিত কণিকা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে শরীরের অন্যান্য অংশে নিয়ে যায়, এই গবেষণায় সেটার ওপরই মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

এটি যেভাবে কাজ করে: স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দান করা এক পাইন্ট রক্ত দিয়ে কাজটি শুরু হয়

•এরপর এই রক্ত থেকে চুম্বকের মাধ্যমে এমন কিছু নমনীয় স্টেম সেল বের করে আনা হয় যেগুলোর লোহিত রক্ত কণিকায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে

•এরপর গবেষণাগারে এগুলোকে বেশি সংখ্যায় বড় করার জন্য এমনভাবে রাখা হয় যাতে এগুলো পূর্ণাঙ্গ লোহিত কণিকায় পরিণত হতে পারে

•এই প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগে এবং এই সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ স্টেম সেল থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা যায়।

•এগুলো থেকে ফিল্টার করে এরপর প্রায় দেড় হাজার লোহিত রক্তকণিকা বের করা হয় মানুষের দেহে সঞ্চালন করার জন্য।

“ভবিষ্যতে আমরা এভাবে যত বেশি সম্ভব রক্ত তৈরি করতে চাই। আমার মাথার ভেতর যে দৃশ্যটা আমি দেখতে পাই তাহলো, একটা রুম ভর্তি মেশিন, আর সেখান থেকে মানুষের দান করা স্বাভাবিক রক্ত ব্যবহার করে ক্রমাগত রক্ত তৈরি করা হচ্ছে,” বলছিলেন অধ্যাপক টোয়ে।

পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দুজন মানুষের দেহে এরকম রক্ত দেয়া হয়েছে। মোট দশজন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবকের দেহে এই রক্ত প্রয়োগ করা হবে। তাদেরকে অন্তত চার মাসের ব্যবধানে ৫ হতে ১০ মিলিমিটার পরিমাণে দুবার ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত দেয়া হবে।

এই রক্তে এক ধরণের তেজস্ক্রিয় চিহ্ন (রেডিওঅ্যাকটিভ ট্যাগ) দেয়া আছে, যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই রক্ত কতদিন টিকে থাকে। আশা করা হচ্ছে যে ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত স্বাভাবিক রক্তের চেয়ে অনেক বেশি টিকবে।

লোহিত রক্ত কণিকা সাধারণত ১২০ দিন টেকে, এরপর এগুলো প্রতিস্থাপনের দরকার হয়।

ল্যাবরেটরিতে রক্ত তৈরির গবেষণা

ছবির উৎস,NHSBT

যখন কোন ব্যক্তি রক্ত দান করে, তখন সেই রক্তে সাধারণত নতুন এবং পুরোনো- দুধরণের লোহিত কণিকাই থাকে। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্তে সবই নতুন লোহিত কণিকা, কাজেই এই রক্ত পুরো ১২০ দিন কাজ করার কথা।

গবেষকরা মনে করছেন, এর ফলে ভবিষ্যতে হয়তো রোগীর দেহে অত ঘন ঘন রক্ত দিতে হবে না, বা পরিমাণেও হয়তো কম লাগবে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা