০১:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

৮,০০০ কোটি টাকা বিশেষ ধার পেলো ইসলামী ব্যাংক

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০১:১৮:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৫৭১ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তারল্যসংকট আরও প্রকট হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। বিদায়ী বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মোট ২৪ দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ অর্থ জমা রাখতে (সিআরআর) ব্যর্থ হয়েছে।

এ জন্য জরিমানা গুনছে ব্যাংকটি। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে ও আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে আট হাজার কোটি টাকা বিশেষ ধার নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরল এই সুবিধা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কোনো সুকুক বন্ড জমা ছাড়াই ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। যার সুদের হার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যদিও শরিয়াহ ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট সুদে টাকা ধার নেওয়ার সুযোগ নেই।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা গত ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এক চিঠিতে এই বিশেষ তহবিল চেয়ে আবেদন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দেয়। বছরের শেষ কার্যদিবসে ব্যাংকটিকে আট হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়।

তবে মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা দাবি করেন, ব্যাংকের কোনো তারল্যসংকট নেই। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

ঋণ অনিয়মের কারণে সংকট

ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের বিষয়টি সম্প্রতি আলোচনায় এলে অনেক সাধারণ ও করপোরেট গ্রাহক আমানত অন্য ব্যাংকে সরিয়ে নেয়। কোনো কোনো গ্রাহক ব্যাংকটিতে রাখা ডলারও সরিয়ে নেয়। এর ফলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটি টাকা ও ডলার-উভয় সংকটে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে নভেম্বর মাসে কয়েক দিন ও ডিসেম্বর মাসের বেশির ভাগ দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত ও দায়ের বিপরীতে সিআরআর রাখতে ব্যর্থ হয়। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী চলমান নগদ জমা ঘাটতি বলা হয়। এ জন্য ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রেজারি প্রধানদের প্রতিদিন জরিমানা গুনতে হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমানত গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংকের আমানত এখন ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। গত ৩১ অক্টোবর যা ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের আমানত কমতে শুরু করলে শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তারল্যসুবিধা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কয়েক দিনেই টাকা ধার নেওয়ার জন্য ব্যবহারযোগ্য বন্ড শেষ হয়ে যায় ব্যাংকটির।

নাজুক তারল্য পরিস্থিতি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিক সিআরআর ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর ঘাটতি দাঁড়ায় ৫ হাজার ১০১ কোটি টাকা। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চোখে ব্যাংকটির তারল্য পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ও দায়ের বিপরীতে ৪ শতাংশ সিআরআর ও সাড়ে ৫ শতাংশ বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, কোনো ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়লে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক তারল্য সহায়তা চেয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এমন সংকট অব্যাহত থাকলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে পদ্মা ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককেও এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে তারল্য সহায়তা দিয়ে ব্যাংকটির পরিস্থিতি উন্নতি করা যাবে না বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, “ইসলামী ব্যাংকে এভাবে জনগণের টাকা ঢালার আগে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝতে হবে ব্যাংকটির সমস্যাটা কত বড়। ব্যাংকটিতে জনগণ টাকা রেখেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকও জনগণের টাকা ঢালছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ব্যাংকটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, ইসলামী ব্যাংক হলো দেশের শীর্ষ ব্যাংক।”

তিনি বলেন, “জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া এভাবে টাকা ঢেলে লাভ হবে না। এতে অনিয়ম-দুর্নীতি উৎসাহিত হবে। ফুটো পাত্রে পানি ঢালার আগে ফুটোটা আসলে কত বড়, এটা বের করা জরুরি। কারণ, টাকার ভান্ডার একদিন শেষ হয়ে যাবে। সংকট ছড়িয়ে পড়বে পুরো অর্থনীতিতে।”

একেএ/কেএম (প্রথম আলো)

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

৮,০০০ কোটি টাকা বিশেষ ধার পেলো ইসলামী ব্যাংক

আপডেট সময় : ০১:১৮:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৩

তারল্যসংকট আরও প্রকট হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। বিদায়ী বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মোট ২৪ দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ অর্থ জমা রাখতে (সিআরআর) ব্যর্থ হয়েছে।

এ জন্য জরিমানা গুনছে ব্যাংকটি। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে ও আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে আট হাজার কোটি টাকা বিশেষ ধার নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরল এই সুবিধা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কোনো সুকুক বন্ড জমা ছাড়াই ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। যার সুদের হার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যদিও শরিয়াহ ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট সুদে টাকা ধার নেওয়ার সুযোগ নেই।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা গত ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এক চিঠিতে এই বিশেষ তহবিল চেয়ে আবেদন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দেয়। বছরের শেষ কার্যদিবসে ব্যাংকটিকে আট হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়।

তবে মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা দাবি করেন, ব্যাংকের কোনো তারল্যসংকট নেই। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

ঋণ অনিয়মের কারণে সংকট

ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের বিষয়টি সম্প্রতি আলোচনায় এলে অনেক সাধারণ ও করপোরেট গ্রাহক আমানত অন্য ব্যাংকে সরিয়ে নেয়। কোনো কোনো গ্রাহক ব্যাংকটিতে রাখা ডলারও সরিয়ে নেয়। এর ফলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটি টাকা ও ডলার-উভয় সংকটে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে নভেম্বর মাসে কয়েক দিন ও ডিসেম্বর মাসের বেশির ভাগ দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত ও দায়ের বিপরীতে সিআরআর রাখতে ব্যর্থ হয়। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী চলমান নগদ জমা ঘাটতি বলা হয়। এ জন্য ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রেজারি প্রধানদের প্রতিদিন জরিমানা গুনতে হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমানত গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংকের আমানত এখন ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। গত ৩১ অক্টোবর যা ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের আমানত কমতে শুরু করলে শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তারল্যসুবিধা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কয়েক দিনেই টাকা ধার নেওয়ার জন্য ব্যবহারযোগ্য বন্ড শেষ হয়ে যায় ব্যাংকটির।

নাজুক তারল্য পরিস্থিতি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিক সিআরআর ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর ঘাটতি দাঁড়ায় ৫ হাজার ১০১ কোটি টাকা। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চোখে ব্যাংকটির তারল্য পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ও দায়ের বিপরীতে ৪ শতাংশ সিআরআর ও সাড়ে ৫ শতাংশ বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, কোনো ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়লে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক তারল্য সহায়তা চেয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এমন সংকট অব্যাহত থাকলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে পদ্মা ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককেও এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে তারল্য সহায়তা দিয়ে ব্যাংকটির পরিস্থিতি উন্নতি করা যাবে না বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, “ইসলামী ব্যাংকে এভাবে জনগণের টাকা ঢালার আগে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝতে হবে ব্যাংকটির সমস্যাটা কত বড়। ব্যাংকটিতে জনগণ টাকা রেখেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকও জনগণের টাকা ঢালছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ব্যাংকটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, ইসলামী ব্যাংক হলো দেশের শীর্ষ ব্যাংক।”

তিনি বলেন, “জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া এভাবে টাকা ঢেলে লাভ হবে না। এতে অনিয়ম-দুর্নীতি উৎসাহিত হবে। ফুটো পাত্রে পানি ঢালার আগে ফুটোটা আসলে কত বড়, এটা বের করা জরুরি। কারণ, টাকার ভান্ডার একদিন শেষ হয়ে যাবে। সংকট ছড়িয়ে পড়বে পুরো অর্থনীতিতে।”

একেএ/কেএম (প্রথম আলো)