নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, অনেক এলাকায় ভাঙ্গন
- আপডেট সময় : ১২:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুলাই ২০২০
- / ১৫০৮ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, মাদারীপুর, নেত্রকোনা, পাবনা, মানিকগঞ্জে ও টাঙ্গাইল আবারো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন।
কুড়িগ্রামে অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলগুলো। প্রথম দফা বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই আবারো বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দি মানুষজনের। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানিও।
জামালপুরে দ্বিতীয় দফা বন্যায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে ধেয়ে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর টানা ভারী বর্ষণ বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটছে। জেলার চার উপজেলায় নতুন করে অনেক নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ২৬ সেন্টিমিটার বেড়ে সকালে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পানি বৃদ্ধির কারণে ডুবে গেছে ৪টি ইউনয়নের ১৫০টি বসতবাড়ী।
লালমনিরহাটে টানা ২ দিন ধরে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। এতে করে স্থায়ী বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়,সকাল ৬ টা থেকে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি শিমুলিয়া পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় তৃতীয় দিনের মত যমুনা নদীর পানি বেড়ে আবারও বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থা বিরাজ করছে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে গত ২৪ ঘন্টায় জেলার উত্তরের উপজেলা কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকাল ৬ টার সময় বিপদসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গাইবান্ধায় কয়েক দিন আগে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করলেও ভারী বর্ষণে আবার সে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তার পানি। ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বিপদসীমা লেভেলে পৌঁছেছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, গত ০৯ ঘন্টায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সমান লেভেলে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাবনায় কমতে শুরু করেছে পদ্মা,যমুনাসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি। তবে পানি কমার সাথে সাথে নতুন করে নদী ভাঙ্গনের আশংকায় রয়েছে নদীপাড়ের মানুষ। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার মাত্র ০.৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ২.২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দূর্ভোগ কমেনি নদী পারের মানুষের।
পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে মাদারীপুরের শিবচরের চরাঞ্চলের নদী ভাঙ্গনের ব্যাপকতা বেড়েছে। ২শ’টির বেশি ঘরবাড়ি কোনমতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিস্তৃর্ন জনপদসহ আক্রান্ত হয়েছে বিদ্যুত ব্যবস্থা, সড়ক ব্যবস্থাও। ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝূকিতে রয়েছে একাধিক স্কুল ভবন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা।
মানিকগঞ্জের যমুনা নদীর শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে ২৪ ঘন্টয় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জেলার ৪টি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে, টাঙ্গাইলের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। যমুনা নদীসহ আঞ্চলিক নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এখনও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বন্ধি হয়ে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।