০৯:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

কোথাও কোথাও পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুলাই ২০২০
  • / ১৫০৫ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, বগুড়া ও পাবনার কোথাও কোথাও পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপরে। ফলে বানভাসীদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। ত্রাণ সংকটে রয়েছে পানিবন্দী লাখো মানুষ। এদিকে, যমুনার পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায়, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, পাবনা ও মানিকগঞ্জে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে এখনও পানি নামেনি। অন্যদিকে পানি কমার সাথে সাথে নদীভাঙ্গনে ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এ অবস্থায় হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় সংকটে পড়েছেন বানভাসী ও ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো। সংকট বেড়েছে গবাদি পশুখাদ্যেরও। পানির নীচে তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়েছে প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমির ফসল।

গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনো বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার কমে গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে থাকলেও কমেনি দুর্ভোগ। অপরদিকে তিস্তা, যমুনা, কাটাখালি ও করোতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ফলে এখনো তলিয়ে আছে বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। এদিকে সদরসহ ফুলছড়ি উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম।

একদিন কমার পর সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে সকালে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া, ফুলজোর, ইছামতীসহ অভ্যন্তরীন সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সেই সাথে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে নদীভাঙ্গন।

মানিকগঞ্জে যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে শিবালয়, ঘিওর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়ার অভ্যন্তরীণ নদনদী তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

উজানে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও ভাটি অঞ্চলে বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে সকালে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় জেলায় ৭টি উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৪৬ গ্রামের এবং ৮টি পৌরসভার ৩ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে এখন পর্যন্ত জেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সামান্য কমতে শুরু করেছে। ২৪ ঘন্টায় তিন সেন্টিমিটার পানি কমলেও এখনো তা বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এতে বন্যার্ত এলাকার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। যারা বাঁধে ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের কষ্ট বেড়েছে। বন্যায় এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর আমন ধান, মরিচ ও সবজি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উঠতি ফসল বিনষ্ট হওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

পাবনায় বেড়েই চলছে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ২.২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে যমুনা তীরবর্তী চরাঞ্চলগুলো।

এদিকে, নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সদর, বারহাট্টা, কলমাকান্দা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ১২০টি গ্রামের ৭৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। গ্রামের কাচা-পাকা সড়কগুলো পানির নিচে থাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

কোথাও কোথাও পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি

আপডেট সময় : ১২:৪৫:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুলাই ২০২০

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, বগুড়া ও পাবনার কোথাও কোথাও পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপরে। ফলে বানভাসীদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। ত্রাণ সংকটে রয়েছে পানিবন্দী লাখো মানুষ। এদিকে, যমুনার পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায়, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, পাবনা ও মানিকগঞ্জে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে এখনও পানি নামেনি। অন্যদিকে পানি কমার সাথে সাথে নদীভাঙ্গনে ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এ অবস্থায় হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় সংকটে পড়েছেন বানভাসী ও ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো। সংকট বেড়েছে গবাদি পশুখাদ্যেরও। পানির নীচে তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়েছে প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমির ফসল।

গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনো বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার কমে গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে থাকলেও কমেনি দুর্ভোগ। অপরদিকে তিস্তা, যমুনা, কাটাখালি ও করোতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ফলে এখনো তলিয়ে আছে বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। এদিকে সদরসহ ফুলছড়ি উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম।

একদিন কমার পর সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে সকালে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া, ফুলজোর, ইছামতীসহ অভ্যন্তরীন সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সেই সাথে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে নদীভাঙ্গন।

মানিকগঞ্জে যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে শিবালয়, ঘিওর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়ার অভ্যন্তরীণ নদনদী তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

উজানে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও ভাটি অঞ্চলে বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে সকালে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় জেলায় ৭টি উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৪৬ গ্রামের এবং ৮টি পৌরসভার ৩ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে এখন পর্যন্ত জেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সামান্য কমতে শুরু করেছে। ২৪ ঘন্টায় তিন সেন্টিমিটার পানি কমলেও এখনো তা বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এতে বন্যার্ত এলাকার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। যারা বাঁধে ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের কষ্ট বেড়েছে। বন্যায় এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর আমন ধান, মরিচ ও সবজি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উঠতি ফসল বিনষ্ট হওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

পাবনায় বেড়েই চলছে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ২.২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে যমুনা তীরবর্তী চরাঞ্চলগুলো।

এদিকে, নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সদর, বারহাট্টা, কলমাকান্দা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ১২০টি গ্রামের ৭৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। গ্রামের কাচা-পাকা সড়কগুলো পানির নিচে থাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।