১১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ছেলে হত্যার বিচার পাব তো : নিহত ফারদিনের বাবা

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১০:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৫৯৩ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশের লাশবাহী গাড়িটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে যখন আসে, তখন ঘড়িতে বেলা ২টা। শেষবার ফারদিনের প্রিয় ক্যাম্পাসে লাশ নিয়ে এসেছেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। তিনি তখন শুধু সৃষ্টিকর্তার নাম নিচ্ছিলেন। আর কোনো কথা বলছিলেন না।

বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে জানাজার আগে ছেলের পক্ষ থেকে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন কাজী নূর উদ্দিন। জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন। ছেলের লাশ নিয়ে বাসায় ফেরার সময় বুয়েটের এক শিক্ষককে (ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমান) কাছে পেয়ে তিনি বললেন, ‘স্যার, একের পর এক মেধাবী শিক্ষার্থীরা খুন হচ্ছে। বিচার তো হচ্ছে না। আমার ছেলে হত্যার বিচার পাব তো?’ এ সময় ফারদিনের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন মিজানুর রহমান।

ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিনের আশঙ্কা, ছেলে হত্যার বিচার না–ও পেতে পারেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। একটাই দাবি, হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়। একটাই প্রত্যাশা, ফারদিনের মায়ের মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

ছেলেকে কারা হত্যা করছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই কাজী নূর উদ্দিনের। তিনি বলেন, ‘আমি বা আমার ছেলে কারও ক্ষতি করিনি। আমার ছেলেকে কারা খুন করেছে, এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। ফারদিনের চলাচলের ভিডিও ফুটেজ, সে কার সঙ্গে কথা বলেছে, কারা তাকে নিয়ে গেছে, ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটি খুঁজে বের করবে।’

বেলা ২টা থেকে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত ফারদিনের লাশ বুয়েট ক্যাম্পাসে রাখা হয়। পরে তাঁর লাশ নেওয়া হয় ডেমরার কোনাপাড়ার শান্তিবাগে। সেখানেই ফারদিন পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। ফারদিন নূরের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। গত শুক্রবার দুপুরের পর ডেমরার বাসা থেকে বুয়েটে আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন। তারপর তিনি আর বাসায় ফেরেননি। গত শনিবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেন, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বুকের ভেতরে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড।

এদিকে ফারদিনের জানাজা শেষে তাঁর সহপাঠীসহ বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে হত্যার বিচার দাবি করেছেন। ফারদিনের সহপাঠী মাইন উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে ফারদিনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পরদিন শনিবার ফারদিনের একটি সেশনাল কুইজে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। ওই দিনই বিষয়টি ফারদিনের পরিবার ও বুয়েট প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। ওই দিনই তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ছেলে হত্যার বিচার পাব তো : নিহত ফারদিনের বাবা

আপডেট সময় : ১০:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশের লাশবাহী গাড়িটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে যখন আসে, তখন ঘড়িতে বেলা ২টা। শেষবার ফারদিনের প্রিয় ক্যাম্পাসে লাশ নিয়ে এসেছেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। তিনি তখন শুধু সৃষ্টিকর্তার নাম নিচ্ছিলেন। আর কোনো কথা বলছিলেন না।

বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে জানাজার আগে ছেলের পক্ষ থেকে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন কাজী নূর উদ্দিন। জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন। ছেলের লাশ নিয়ে বাসায় ফেরার সময় বুয়েটের এক শিক্ষককে (ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমান) কাছে পেয়ে তিনি বললেন, ‘স্যার, একের পর এক মেধাবী শিক্ষার্থীরা খুন হচ্ছে। বিচার তো হচ্ছে না। আমার ছেলে হত্যার বিচার পাব তো?’ এ সময় ফারদিনের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন মিজানুর রহমান।

ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিনের আশঙ্কা, ছেলে হত্যার বিচার না–ও পেতে পারেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। একটাই দাবি, হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়। একটাই প্রত্যাশা, ফারদিনের মায়ের মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

ছেলেকে কারা হত্যা করছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই কাজী নূর উদ্দিনের। তিনি বলেন, ‘আমি বা আমার ছেলে কারও ক্ষতি করিনি। আমার ছেলেকে কারা খুন করেছে, এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। ফারদিনের চলাচলের ভিডিও ফুটেজ, সে কার সঙ্গে কথা বলেছে, কারা তাকে নিয়ে গেছে, ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটি খুঁজে বের করবে।’

বেলা ২টা থেকে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত ফারদিনের লাশ বুয়েট ক্যাম্পাসে রাখা হয়। পরে তাঁর লাশ নেওয়া হয় ডেমরার কোনাপাড়ার শান্তিবাগে। সেখানেই ফারদিন পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। ফারদিন নূরের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। গত শুক্রবার দুপুরের পর ডেমরার বাসা থেকে বুয়েটে আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন। তারপর তিনি আর বাসায় ফেরেননি। গত শনিবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেন, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বুকের ভেতরে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড।

এদিকে ফারদিনের জানাজা শেষে তাঁর সহপাঠীসহ বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে হত্যার বিচার দাবি করেছেন। ফারদিনের সহপাঠী মাইন উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে ফারদিনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পরদিন শনিবার ফারদিনের একটি সেশনাল কুইজে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। ওই দিনই বিষয়টি ফারদিনের পরিবার ও বুয়েট প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। ওই দিনই তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।