ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঠাকুরগাঁওয়ের দেড়শ’ বছরের প্রাচীন ছোট বালিয়া মসজিদ। জনশ্রুতি আছে, জ্বিনের মসজিদ হিসেবে প্রায় ১শ’ বছর এটি মানুষের অগোচরে ছিলো। তবে, এর সাথে একমত নন মসজিদ আধুনিকায়নের সাথে জড়িতরা। এর মূল কাঠামো ঠিক রেখে মোঘল আমলের স্থাপত্য অনুসরণ সংস্কার করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৫ কিলেমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে বালিয়া ইউনিয়নে এই অনিন্দ্য সুন্দর ঐতিহাসিক মসজিদটি অবস্থিত। ১৮ শতকের শেষার্ধে বালিয়ার বিখ্যাত জমিদার মেহের বকস্ চৌধুরী এই মসজিদের পরিকল্পনা করেন। দিল্লি থেকে দক্ষ কারিগর এনে মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু, ছাদ পর্যন্ত নির্মাণের পর হঠাৎ হেডমিস্ত্রির মৃত্যু হলে গম্বুজ আর করা হয়নি।

শত বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকায় স্থাপনাটি জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে সাপ ও পোকা-মাকড়ের বাসস্থানে পরিণত হয়। নতুন করে ২০০৯ সালে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী পুরনো কাঠামোকে অবিকৃত রেখে মসজিদটির পুন:নির্মাণ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একদল শিক্ষার্থী এই সংস্কার কাজে অংশ নেয়।

মসজিদটির আয়তন পূর্ব-পশ্চিমে সাড়ে ৬২ ফুট ও উত্তর-দক্ষিণে ৬৯ ফুট ২ ইঞ্চি। প্রবেশপথ, খোলা চত্বর ও মূল ভবন একই মেঝের ওপর অবস্থিত। মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা ১৭ ফুট। ভিত্তিসহ পুরো মসজিদটিই চুন-সুরকি এবং হাতে পোড়ানো ইট দিয়ে তৈরি। আরো সংস্কারে সরকারের সহযোগিতা দরকার বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।

ঐতিহাসিক এই মসজিদটি নিজেদের এলাকার গর্ব বলে মনে করে ঠাকুরগাঁওবাসী।