রাজউকের সব বিভাগেই ঘুষের ছড়াছড়ি
- আপডেট সময় : ০২:১১:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১
- / ১৫০৬ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর উন্নয়নে যে সংস্থাটি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে তার নাম রাজউক। এই ভূমিকার পেছনে কাজ করছে গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাদের দেয়া ঘুষ বা উৎকোচে ভরপুর রাজউকের কর্মকর্তা আর কর্মচারীদের পকেট। তার নামমাত্র টাকা জমা পড়ে সংস্থাটির তহবিলে। বিশাল এই কর্মকান্ডের জন্য আছে দালালচক্র। যাদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা রাজউকের সেবাপ্রত্যাশীরা। এই দালালরাই সংস্থাটিকে পঙ্গু করে রেখেছে দাবি বিশ্লেষকদের।
রাজউক… রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ….। রাজধানীর বেসুমার উন্নয়নের কান্ডারী। তবে তার পেছনে ফুয়েলের কাজ করে অর্থ। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না এই দপ্তরে।
ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগ বহুদিনের। সত্যতা যাচাইয়ে এসএটিভির অনুসন্ধানী টিম যায় রাজউকের মতিঝিল ও মহাখালীর জোনাল অফিসে। দীর্ঘ অনুসন্ধানে খোঁজ মেলে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্যের।
দেখা যায় প্ল্যান পাসসহ খুঁটিনাটির নানা কাজে এই দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মোটা অংকের টাকা গুণে নিতে ভুল করেন না। ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের জন্য জরিপ বাবদ একজন ব্যক্তি ব্যয করেন দুই-পাঁচ হাজার টাকা। দশতলার বেশি এমন ভবন নির্মাণে ভূমি ব্যবহার ও তার ছাড়পত্রের জন্য রাজউকের বরাদ্দ ঘুষ…. তিন থেকে ১০ লাখ টাকা।
আর তিন থেকে পাঁচ কাঠার প্লটের প্ল্যান পেতে ঘুষের শুরু ১৬ লাখে। দেনদরবার শেষে তা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর ৬ কাঠা থেকে শুরু করে তার ওপরের প্লট জন্য ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা গুণতে হয় হতভাগ্য মালিককে। এছাড়াও বড় বড় প্রকল্পে ডেভেলপাররা উৎকোচ দেন ১৫ লাখ থেকে দুই কোটি পর্যন্ত।অথচ প্রাপ্ত এ ঘুষের অর্থ….রাজউকের তহবিলে জমা হয় কাঠাপ্রতি মাত্র দেড় লাখ টাকা।
রাজউক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ অর্থ নিজেরা লেনদেন করেন না। নিয়োগে রেখেছেন কতিপয় দালালদের। যারা দুদিক থেকে সুবিধা নিয়ে নিজেরাও লাভবান। দালাল ছাড়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার জো নেই আবেদনদাতাদের। রাজউকের আবাসন প্রকল্প পূর্বাচল ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিলে জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্লট বরাদ্দ নিয়েও নানা অনিয়মের ফিরিস্তি। সেখানেও অভিযোগের তীর রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সংস্থাটির দুর্নীতি নিয়ে দুদকের গণশুনানি এবং তাদের নানা অনিয়মের খবর প্রচারিত হলেও টনকের নড়ন টি নেই কর্তাব্যক্তিদের। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালকের দাবি কিছু দুর্নীতিবাজ সংস্থাটিকে জনবান্ধব হতে দিচ্ছে না। এ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করার পক্ষে তার মত।
এসব কোটি কোটি ঘুষ আদান প্রদানে সংস্থার বদনাম অনেক। তবুও এমন অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা- এমন প্রশ্নেরও দায় সারা রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে।