১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

ডিজিটাল আইনে সাংবাদিক হয়রানি বন্ধের দাবি গণমাধ্যমকর্মীদের

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১২:৫৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • / ১৫৫০ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে৷ এই আইন সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করছে, অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা৷

আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মী’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তারা৷

সম্প্রতি রাজারবাগ দরবার শরিফ ও এর নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারের পর চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে অধরা ইয়াসমিন ও তার সোর্সের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়৷

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে৷ আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, সংশোধন হবে৷ যেদিন আইন সংসদে উত্থাপিত হয়, সেদিন মোস্তাফা জব্বার (ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী) বলেছিলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি করা হয়েছে৷ কিন্তু সরকারের এই দুই মন্ত্রী মিথ্যা কথা বলেছেন৷ এরপর আইনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোথাও যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাহলে তিনি সেই মামলা পরিচালনা করবেন৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি মামলাও তাকে পরিচালনা করতে দেখিনি৷

‘‘এছাড়া বলেছিলেন, মামলার আগে তদন্ত হবে, তারপর মামলা হবে৷ কিন্তু অধরার ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি৷”

এই সাংবাদিকনেতা আরও বলেন, ‘‘সরকার বলছে, দেশের গণমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে৷ দেশের গণমাধ্যম এই অর্থে স্বাধীনতা ভোগ করছে যে আগে চ্যানেল ছিল একটি বা দুইটি, সেখানে এখন ৪০টি চ্যানেল এবং সংবাদপত্র এক হাজার ২০০–এর বেশি৷ সংখ্যার দিক থেকে স্বাধীনতা ভোগ করছে৷ কিন্তু গুণ ও মানের দিক থেকে এখনো সংকোচন নীতি চলছে৷”

সাংবাদিকদের সব সময় নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে সোহেল হায়দার বলেন, ‘‘আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে৷”

কিন্তু সংশোধনের জন্য অংশীজনদের কাউকে ডাকা হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি সংশোধনের জন্য আহ্বান জানান তিনি৷

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী জানান, রাজারবাগের পীর ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যাচ্ছেন৷ এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন৷ এই পীরের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল৷

তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্যে এই পীরের অপকর্ম তুলে ধরতে৷

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ‘‘আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা সংশোধন করে আরও শক্তিশালী আকারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে৷ সরকার বারবার দাবি করছে, এ আইনে সাংবাদিকদের কোনো অসুবিধা হবে না৷ কিন্তু সাংবাদিকদের আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে৷ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনটি দিয়ে মামলা করে পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে, হয়রানি করা হচ্ছে৷”

‘‘যারা ক্ষমতায় থাকেন, তারাই গণমাধ্যমের বেলায় ও সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেএক ও অভিন্ন৷ আর বিরোধী দলে থাকলে স্বাধীনতার কথা বলেন৷” তিনি এ আইন বাতিলের দাবি জানান৷

মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক সব কালাকানুন বাতিলও অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান৷ এ ছাড়া বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিক ও মতপ্রকাশের জন্য আতঙ্ক৷ অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন৷

রাজারবাগের পীর ও তার মুরিদদের নানা অপকর্মের সংবাদ সামনে এলেও তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং প্রশাসন কেন তার ব্যাপারে নীরব, সে প্রশ্ন তোলা হয় মানববন্ধনে৷ পাশাপাশি শেষ পর্যন্ত অধরা ইয়াসমিনের পাশে থাকার জন্য আরটিভির প্রতি আহ্বান জানানো হয়৷

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক), আরটিভি, বাংলাভিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকেরা৷

ডয়চে ভেলে

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ডিজিটাল আইনে সাংবাদিক হয়রানি বন্ধের দাবি গণমাধ্যমকর্মীদের

আপডেট সময় : ১২:৫৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে৷ এই আইন সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করছে, অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা৷

আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মী’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তারা৷

সম্প্রতি রাজারবাগ দরবার শরিফ ও এর নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারের পর চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে অধরা ইয়াসমিন ও তার সোর্সের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়৷

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে৷ আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, সংশোধন হবে৷ যেদিন আইন সংসদে উত্থাপিত হয়, সেদিন মোস্তাফা জব্বার (ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী) বলেছিলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি করা হয়েছে৷ কিন্তু সরকারের এই দুই মন্ত্রী মিথ্যা কথা বলেছেন৷ এরপর আইনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোথাও যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাহলে তিনি সেই মামলা পরিচালনা করবেন৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি মামলাও তাকে পরিচালনা করতে দেখিনি৷

‘‘এছাড়া বলেছিলেন, মামলার আগে তদন্ত হবে, তারপর মামলা হবে৷ কিন্তু অধরার ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি৷”

এই সাংবাদিকনেতা আরও বলেন, ‘‘সরকার বলছে, দেশের গণমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে৷ দেশের গণমাধ্যম এই অর্থে স্বাধীনতা ভোগ করছে যে আগে চ্যানেল ছিল একটি বা দুইটি, সেখানে এখন ৪০টি চ্যানেল এবং সংবাদপত্র এক হাজার ২০০–এর বেশি৷ সংখ্যার দিক থেকে স্বাধীনতা ভোগ করছে৷ কিন্তু গুণ ও মানের দিক থেকে এখনো সংকোচন নীতি চলছে৷”

সাংবাদিকদের সব সময় নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে সোহেল হায়দার বলেন, ‘‘আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে৷”

কিন্তু সংশোধনের জন্য অংশীজনদের কাউকে ডাকা হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি সংশোধনের জন্য আহ্বান জানান তিনি৷

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী জানান, রাজারবাগের পীর ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যাচ্ছেন৷ এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন৷ এই পীরের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল৷

তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্যে এই পীরের অপকর্ম তুলে ধরতে৷

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ‘‘আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা সংশোধন করে আরও শক্তিশালী আকারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে৷ সরকার বারবার দাবি করছে, এ আইনে সাংবাদিকদের কোনো অসুবিধা হবে না৷ কিন্তু সাংবাদিকদের আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে৷ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনটি দিয়ে মামলা করে পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে, হয়রানি করা হচ্ছে৷”

‘‘যারা ক্ষমতায় থাকেন, তারাই গণমাধ্যমের বেলায় ও সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেএক ও অভিন্ন৷ আর বিরোধী দলে থাকলে স্বাধীনতার কথা বলেন৷” তিনি এ আইন বাতিলের দাবি জানান৷

মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক সব কালাকানুন বাতিলও অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান৷ এ ছাড়া বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিক ও মতপ্রকাশের জন্য আতঙ্ক৷ অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন৷

রাজারবাগের পীর ও তার মুরিদদের নানা অপকর্মের সংবাদ সামনে এলেও তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং প্রশাসন কেন তার ব্যাপারে নীরব, সে প্রশ্ন তোলা হয় মানববন্ধনে৷ পাশাপাশি শেষ পর্যন্ত অধরা ইয়াসমিনের পাশে থাকার জন্য আরটিভির প্রতি আহ্বান জানানো হয়৷

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক), আরটিভি, বাংলাভিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকেরা৷

ডয়চে ভেলে