জাতিসংঘে ভোটের জেরে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যবস্থা
- আপডেট সময় : ১২:২২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
- / ১৬০৩ বার পড়া হয়েছে
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তদন্তের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়েছে জাতিসংঘ৷ এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ‘প্রয়োজনমত জবাব’ দিবে বলে জানিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার৷
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নতুন মন্ত্রীপরিষদ৷ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে শুক্রবার এই ঘোষণা এসেছে৷
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব নিয়ে সম্প্রতি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের বিশেষজ্ঞ মতামতের আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে এর পক্ষে ৮৭, বিপক্ষে ২৬ ভোট পড়ে৷ ভোটদানে বিরত ছিল ৫৩ দেশ৷
যেসব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে৷
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘে আবেদনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনী যুদ্ধে জড়িয়েছে’ বলে উল্লেখ করেছে তারা৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বর্তমান সরকার এই যুদ্ধের মুখে বসে থাকবে না বরং প্রয়োজনমত ব্যবস্থা নিবে৷”
এরইমধ্যে ‘ফিলিস্তিনি জঙ্গি হামলার’ শিকার ইসরায়েলি পরিবারকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তহবিল থেকে প্রায় চার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই অর্থ কর হিসাবে সংগ্রহ করেছিল ইসরায়েল৷
দখলকৃত পশ্চিম তীরের ‘এরিয়া সি’তে ফিলিস্তিনের একটি নির্মাণ প্রকল্পকেও নিষেধাজ্ঞায় আওতায় আনা হয়েছে৷ এই অঞ্চলটি পুরোটাই এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে৷
পাশাপাশি ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথাও উল্লেখ করেছে তারা৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধ রাজনৈতিক ও আইনী লড়াই চালানো কোন ভিআইপিকে’ ইসরায়েল সরকার কোনো সুবিধা প্রদান করবে না৷”
যেসব সংগঠন ‘সন্ত্রাসী ও শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড’ চালায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েল সরকার৷
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জবাব
নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ইসরায়েলের নেয়া পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন থামানোর আহ্বান জানানো হয়েছে৷
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বলেন, ‘‘অর্থসংক্রান্ত ও অন্যান্য যেসব পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা তারা করছে তা একইসঙ্গে নিন্দনীয় ও খারিজ করা হচ্ছে৷”
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার শপথ নেয়া নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটকে ইসরায়েলের এ যাবৎকালের সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ গোলান মালভূমি, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বিতর্কিত অঞ্চলে স্থাপনা গড়ে তোলার কাজ সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানিয়েছে তারা৷
ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে স্থাপনা গড়ে তোলাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বেআইনী হিসেবে দেখে থাকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও জাতিসংঘ৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি মূল্যায়নে দেখা গেছে, ২০২০ সালের শেষের দিকে পশ্চিম তীরের জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ ছিল ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা৷ ২০২১ সালে যা আরো বেড়েছে৷
ডয়চে ভেলে