মুখ দিয়ে লিখেই প্রথম হয়ে আসছে লিতুনজিরা
- আপডেট সময় : ১১:১২:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০
- / ১৫০৭ বার পড়া হয়েছে
দু’টি হাত নেই। নেই পাও। শুধু রয়েছে প্রবল ইচ্ছা শক্তি। সেই শক্তিতেই প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মুখ দিয়ে লিখেই ৪৪ জনের সাথে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে আসছে লিতুনজিরা। সে আর দশটি মেয়ের মত স্বাভাবিক না হলেও কোন কাজে সে পিছিয়ে নেই। সে গাইতে পারে, নিজে খেতে পারে এবং মোবাইলও চালাতে পারে। তাকে পড়াতে পেরে খুশি স্কুলের শিক্ষকরাও। পরিবারের সদস্যরাও তাকে এগিয়ে নিতে চায় বহুদুর।
যশোর শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণের এক অজপাড়াগাঁ মণিরামপুর উপজেলার খানপুর। ১১ বছর আগে এই গ্রামেরই বাসিন্দা হাবিবুর রহমান ও জাহানারা খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যা শিশু, লিতুনজিরা। আর দশটি শিশুর মতো ঘর আলো করে জন্ম হয়নি তার। বরং সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিকে দেখে স্বজনদের চোখে মুখে অন্ধকার নেমে এসেছিল। প্রকৃতি তাকে হাত-পা ছাড়াই জন্ম দিয়েছিল। কিন্তু, দিন যতো যেতে থাকে, দেখা যায়, প্রকৃতি তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে যতোটা, দিয়েছে তার চেয়ে ঢের বেশি। আর তা হলো অদম্য ইচ্ছা শক্তি। এই ইচ্ছা শক্তির জোরে মুখ দিয়ে লিখে এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।
মেয়ের সাফল্যে খুশি হলেও দুশ্চিন্তারও অন্ত নেই লিতুনজিরার বাবা-মা’র। লিতুনজিরার সাফল্যে খুশি প্রতিবেশি ও সহপাঠিরাও। তারা চান, লিতুনজিরার স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়াক সরকার।
শুধু লেখাপড়ায় না. সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। ৬ষ্ট শ্রেনীতে ভর্তি হওয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার পড়ালেখায় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
পরনির্ভশীল না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় লিতুনজিরা । বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবাও করতে চায় সে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বা অর্থাভাব,কোনটির কারণে তার এই এগিয়ে চলা যেন থেমে না যায়, সেটাই এলাকাবাসীর প্রতাশ্যা।