০৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

পার্বত্য তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ, ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৫৪৫ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি ও যৌথ বাহিনীর অভিযানের কারণে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় ফের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বান্দরবানের রুমা ও বোয়াংছড়িতে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা আছে। জেলার মোট সাতটি উপজেলা মধ্যে তিনটি এখন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

বন্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি ডয়চে ভেলেকে বলেন,” থানচিতে যৌথ বাহিনীর অভিযান আবার শুরু হবে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়িতে অভিযান অব্যাহত আছে।”

থানচি উপজেলায়  ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকছে ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে রুমা ও বোয়াংছড়িতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিষেধাজ্ঞা চলছে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর থেকে থানচি, রুমা ও বোয়াংছড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ১২ ডিসেম্বর থেকে শুধু থানচির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। তখন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে শুধুমাত্র দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। অন্য কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু এবার থানচিতে ফের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় সুনির্দিষ্টভাবে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়ামিন পারভীন তিবরীজি তার আদেশে বলেছেন,” বান্দরবান সেনানিবাসের ৯ জানুয়ারি পত্রের আলোকে থানচি উপজেলার তৎসংলগ্ন এলাকায় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করায় বান্দরবান রিজিওন কর্তৃক আধিপত্য বিস্তারমূলক টহল কার্যক্রম পরিচালনা এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত থাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।”

ডিসেম্বরের নিষেধাজ্ঞার সময় ওই তিন উপজেলায় মূলত জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ), সংক্ষেপে কুকি বিদ্রোহীরা বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার একটি অংশকে বিচ্ছিন্ন করার তৎপরতায় লিপ্ত বলে গোয়েন্দা সূত্র বলছে।  এর প্রধান নাথান বম নামে একজন। ওই বিদ্রোহী গ্রæপের সহায়তার পাহাড়ে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার” সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে এর আগে র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শারক্বীয়ার আমির হলেন আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। কিন্তু এর মাস্টারমাইন্ড হলেন প্রধান উপদেষ্টা শামীন মাহফুজ ওরফে শামীন স্যার৷ শামীন মাহফুজ আনসার আল ইসলামের সাবেক নেতা। শামীন মাহফুজ ও নাথান বাম দুইজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। তারা একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন এবং তখন থেকে তারা বন্ধু। গোয়েন্দারা দাবি করছেন সেই সূত্রে ‘কমার্শিয়াল ডিলের’ মাধ্যমে পাহাড়ে কুকি বিদ্রোহীদের আস্তানায় জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তারা কুকি বিদ্রোহীদের পোশাক পরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে গোয়েন্দারা দাবি করেছেন।

র‌্যাব ও পুলিশ এ পর্যন্ত পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ২৪ জন শারক্বীয়ার সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

অভিযান ও গ্রেপ্তার

গত অক্টোবরে র‌্যাব বান্দরবান ও রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ে  টানা অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে সাতজন প্রশিক্ষণ নেয়া জঙ্গি এবং তিনজন কুকি বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্য। তাদের কাছ থেকে ৯টি বন্দুক, ৫০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, কার্তুজ, কেইস ৬২টি, হাত বোমা, কার্তুজ বেল্ট, দেশীয় পিস্তল, ওয়াকিটকি সেট, কুকি চিন লিখা ১০টি মানচিত্র উদ্ধার করা হয়।

সেপ্টেরে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) কুকি বিদ্রোহীদের কাছে প্রশিক্ষণ নেয়া পাঁচ জঙ্গিকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করে।

নভেম্বরে গ্রেপ্তার করা হয় সাত জনকে। ডিসেম্বরে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তারা পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত জঙ্গিদের খাবার, পোশাক ও অস্ত্র সরবরাহ করতো বলে র‌্যাব জানায়।

একাধিক সূত্র জানায়, থানচি এলাকায় জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে  রবিবার (১১ জানুয়ারি) থেকে অভিযান জোরদার করা হবে। আর সেই কারণেই  ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়ি এলাকায়  ধারাবাহিক অভিযান চলছে।

যেভাবে চলছে অভিযান

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন,” অভিযানে যৌখ বাহিনী অংশ নিচ্ছে। এর আগেও থানচিতে যৌথ অভিযান হয়েছে। এখন আবার শুরু হবে। তাই ১১ জানুয়ারি থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এরপরও যৌথ বাহিনির অভিযান চললে নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়ানো হবে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়িতে আগে থেকেই যৌথ বাহিনীর যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত আছে।”

তিনি জানান, “থানচিতে এরইমধ্যে দেশি বিদেশি পর্যটকরা যারা ছিলেন, তারা নিরাপদে চলে গেছেন। আমরা প্রচার করেছি। গাইডদের মাধ্যমে খবর দিয়েছি। আর আমরা ৯ তারিখে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছি। ফলে তারা নিরাপদে থানচি ছেড়ে চলে যেতে যথেষ্ট সময় পেয়েছেন।”

কুকি-চীনরা কোনো শক্তিশালী নৃ-গোষ্ঠী নয়

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, “কুকি-চীনারা পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর খুবই মাইনরিটি অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে। তারা সংখ্যায় যেমন কম, তেমনি তাদের এলাকাও কম। ফলে কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কিছু করতে পারবে সেরকম ভাবার কোনো কারণ নেই।”

তার মতে, “জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আদর্শিক নয়, ব্যক্তিগত। নাথান বমের সঙ্গে এক জঙ্গি নেতার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সম্পর্ক হয় সেই সূত্রে কমার্শিয়াল ডিলে তারা কুকিদের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।  সমতলে জঙ্গিরা কোণঠাসা হওয়ার কারণে পাহাড়ি এলাকাকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এটাও স্থায়ী হওয়ার কথা নয়। তবে জঙ্গিরা যদি পাহাড়ে আস্তানা তৈরি করতে পারে তাহলে দেশে জঙ্গি আক্রমণের আশঙ্কা আছে।”

তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই বিছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চলছে। অব্যাহত অভিযানে তারা দুর্বল হয়ে পড়বে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অভিযান চালালে তাদের চিহ্নিত করা সহজ হয়। তা না হলে পর্যটনের নামে সমতলের লোকজন ও বিদেশিরা সেখানে যায়। তাদের সঙ্গে জঙ্গিরা মিশে যায়।”

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পার্বত্য তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ, ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান

আপডেট সময় : ০১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি ও যৌথ বাহিনীর অভিযানের কারণে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় ফের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বান্দরবানের রুমা ও বোয়াংছড়িতে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা আছে। জেলার মোট সাতটি উপজেলা মধ্যে তিনটি এখন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

বন্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি ডয়চে ভেলেকে বলেন,” থানচিতে যৌথ বাহিনীর অভিযান আবার শুরু হবে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়িতে অভিযান অব্যাহত আছে।”

থানচি উপজেলায়  ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকছে ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে রুমা ও বোয়াংছড়িতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিষেধাজ্ঞা চলছে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর থেকে থানচি, রুমা ও বোয়াংছড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ১২ ডিসেম্বর থেকে শুধু থানচির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। তখন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে শুধুমাত্র দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। অন্য কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু এবার থানচিতে ফের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় সুনির্দিষ্টভাবে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়ামিন পারভীন তিবরীজি তার আদেশে বলেছেন,” বান্দরবান সেনানিবাসের ৯ জানুয়ারি পত্রের আলোকে থানচি উপজেলার তৎসংলগ্ন এলাকায় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করায় বান্দরবান রিজিওন কর্তৃক আধিপত্য বিস্তারমূলক টহল কার্যক্রম পরিচালনা এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত থাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।”

ডিসেম্বরের নিষেধাজ্ঞার সময় ওই তিন উপজেলায় মূলত জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ), সংক্ষেপে কুকি বিদ্রোহীরা বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার একটি অংশকে বিচ্ছিন্ন করার তৎপরতায় লিপ্ত বলে গোয়েন্দা সূত্র বলছে।  এর প্রধান নাথান বম নামে একজন। ওই বিদ্রোহী গ্রæপের সহায়তার পাহাড়ে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার” সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে এর আগে র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শারক্বীয়ার আমির হলেন আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। কিন্তু এর মাস্টারমাইন্ড হলেন প্রধান উপদেষ্টা শামীন মাহফুজ ওরফে শামীন স্যার৷ শামীন মাহফুজ আনসার আল ইসলামের সাবেক নেতা। শামীন মাহফুজ ও নাথান বাম দুইজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। তারা একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন এবং তখন থেকে তারা বন্ধু। গোয়েন্দারা দাবি করছেন সেই সূত্রে ‘কমার্শিয়াল ডিলের’ মাধ্যমে পাহাড়ে কুকি বিদ্রোহীদের আস্তানায় জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তারা কুকি বিদ্রোহীদের পোশাক পরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে গোয়েন্দারা দাবি করেছেন।

র‌্যাব ও পুলিশ এ পর্যন্ত পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ২৪ জন শারক্বীয়ার সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

অভিযান ও গ্রেপ্তার

গত অক্টোবরে র‌্যাব বান্দরবান ও রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ে  টানা অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে সাতজন প্রশিক্ষণ নেয়া জঙ্গি এবং তিনজন কুকি বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্য। তাদের কাছ থেকে ৯টি বন্দুক, ৫০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, কার্তুজ, কেইস ৬২টি, হাত বোমা, কার্তুজ বেল্ট, দেশীয় পিস্তল, ওয়াকিটকি সেট, কুকি চিন লিখা ১০টি মানচিত্র উদ্ধার করা হয়।

সেপ্টেরে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) কুকি বিদ্রোহীদের কাছে প্রশিক্ষণ নেয়া পাঁচ জঙ্গিকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করে।

নভেম্বরে গ্রেপ্তার করা হয় সাত জনকে। ডিসেম্বরে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তারা পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত জঙ্গিদের খাবার, পোশাক ও অস্ত্র সরবরাহ করতো বলে র‌্যাব জানায়।

একাধিক সূত্র জানায়, থানচি এলাকায় জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে  রবিবার (১১ জানুয়ারি) থেকে অভিযান জোরদার করা হবে। আর সেই কারণেই  ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়ি এলাকায়  ধারাবাহিক অভিযান চলছে।

যেভাবে চলছে অভিযান

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন,” অভিযানে যৌখ বাহিনী অংশ নিচ্ছে। এর আগেও থানচিতে যৌথ অভিযান হয়েছে। এখন আবার শুরু হবে। তাই ১১ জানুয়ারি থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এরপরও যৌথ বাহিনির অভিযান চললে নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়ানো হবে। আর রুমা এবং বোয়াংছড়িতে আগে থেকেই যৌথ বাহিনীর যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত আছে।”

তিনি জানান, “থানচিতে এরইমধ্যে দেশি বিদেশি পর্যটকরা যারা ছিলেন, তারা নিরাপদে চলে গেছেন। আমরা প্রচার করেছি। গাইডদের মাধ্যমে খবর দিয়েছি। আর আমরা ৯ তারিখে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছি। ফলে তারা নিরাপদে থানচি ছেড়ে চলে যেতে যথেষ্ট সময় পেয়েছেন।”

কুকি-চীনরা কোনো শক্তিশালী নৃ-গোষ্ঠী নয়

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, “কুকি-চীনারা পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর খুবই মাইনরিটি অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে। তারা সংখ্যায় যেমন কম, তেমনি তাদের এলাকাও কম। ফলে কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কিছু করতে পারবে সেরকম ভাবার কোনো কারণ নেই।”

তার মতে, “জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আদর্শিক নয়, ব্যক্তিগত। নাথান বমের সঙ্গে এক জঙ্গি নেতার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সম্পর্ক হয় সেই সূত্রে কমার্শিয়াল ডিলে তারা কুকিদের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।  সমতলে জঙ্গিরা কোণঠাসা হওয়ার কারণে পাহাড়ি এলাকাকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এটাও স্থায়ী হওয়ার কথা নয়। তবে জঙ্গিরা যদি পাহাড়ে আস্তানা তৈরি করতে পারে তাহলে দেশে জঙ্গি আক্রমণের আশঙ্কা আছে।”

তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই বিছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চলছে। অব্যাহত অভিযানে তারা দুর্বল হয়ে পড়বে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অভিযান চালালে তাদের চিহ্নিত করা সহজ হয়। তা না হলে পর্যটনের নামে সমতলের লোকজন ও বিদেশিরা সেখানে যায়। তাদের সঙ্গে জঙ্গিরা মিশে যায়।”