সিলেট অঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মানবপাচার
- আপডেট সময় : ০৩:৪৩:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৫৫৮ বার পড়া হয়েছে
প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেট অঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মানবপাচার । ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর যুবকরা লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বছরের পর বছর বন্দী থেকে হচ্ছেন নির্যাতিত। লাখ লাখ টাকা মাফিয়াদের দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে পরিবারগুলো। শুধু গত ৬ মাসেই সিলেটে মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে ১৯টি।
লিবিয়ায় চার বছর ধরে মাফিয়াদের হাতে বন্দী ছিলেন সিলেটের লন্ডনী রোডের জাহাঙ্গীর আলম। একের পর এক ক্যাম্পে ঘুরিয়ে নির্যাতন চালাতো মানবপাচারকারীরা। তারা মাফিয়াদের কাছে বাংলাদেশিদের বিক্রি করে দিতো। ক্যাম্প বদলের পরপরই বাড়তো টাকার জন্য চাপ দেওয়া। অন্যথায় উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানো হতো। দু:ষহ স্মৃতি ভুলতে পারছেন না জাহাঙ্গীর। নির্যাতন থেকে বাঁচতে চার বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে তার পরিবারকে।
নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও দেখে স্ট্রোক করেন জাহাঙ্গীরের মা। পরে মারা যান তিনি। ভাইকে বাঁচাতে সহায়-সম্পত্তি, গয়না- সব বিক্রি করে এখন নি:স্ব তার পরিবার।
আরেক ভুক্তভোগী দক্ষিণ সুরমার এম এ মান্নান জানান, পিস্তল ঠেকিয়ে তাদের দিয়ে পরিবারের কাছে মিথ্যা কথা বলানো হতো। টাকা না দিলে বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রাখতো।
শুধু জাহাঙ্গীর আলম নয়, সিলেটের আরও অনেকেই মানবপাচারকারী মাফিয়াদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। সিলেটের এক শ্রেণির অসাধু ট্রাভেল ব্যবসায়ী নেপাল, কেনিয়া বা লিবিয়া হয়ে ইউরোপ পাঠানোর নামে যুবকদের বিক্রি করে দেয় মাফিয়াদের কাছে। যার কারণে অনেক দেশ বাংলাদেশিদের পর্যটন ভিসা কঠোর করেছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। আইনের কঠোর প্রয়োগ ও সচেতনতা বাড়ানোর আহবান তাদের।
এদিকে মানবপাচারকারী মাফিয়াদের কাছ থেকে ফিরে বেশিরভাগই বিষয়টি গোপন রাখছেন। গত ৬ মাসে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় ১৯টি মামলা হয়েছে।
লিবিয়া, নেপাল বা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের লোভনীয় অফারে প্রতারিত হচ্ছেন সিলেটের বহু যুবক। মানবপাচার রোধে অভিযানের পাশাপাশি দরকার সচেতনতা ও কঠোর নজরদারি।




















