নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি
- আপডেট সময় : ০১:৫৪:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জুলাই ২০২০
- / ১৫০৫ বার পড়া হয়েছে
সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও কুড়িগ্রামে যমুনা ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা।
২য় দফা বন্যার কবলে পড়ার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষজন।এ সব এলাকার কাঁচা পাকা সড়কে পানি উঠে ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেতসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে । তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। গত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৯ সিন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। অপরদিকে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেইসঙ্গে যমুনা, কাটাখালি ও করোতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। দ্বিতীয় দফায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে দ্বিতীয়বার বিপদসীমা অতিক্রম করায় এবং জেলার করতোয়া,ফুলজোড়,ইছামতিসহ বিভিন্ন নদীর পানিও বেড়ে যাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে। দিন দিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। প্রায় ২২ দিন ধরে সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদী অববাহিকার বন্যা কবলিত সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৩৫ ইউনিয়নের দেড় লাখেরও বেশি ভানবাসি মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জামালপুরে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার বেড়ে সকালে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন করে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৭ উপজেলার ১১৯ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
মানিকগঞ্জে যমুনা নদীর শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় সকালে ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বাড়লেও এখনও বিপদসমীর নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এরই মধ্যে নতুন করে শিবচরের ৫টি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর পাশের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাট-বাজারসহ বহু স্থাপনা।
দুই দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর ৭ টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান। বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা,বাজারের দোকানপাট সহ ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, পুকুর প্লাবিত হয়েছে।
ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোণার কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলমাকান্দা উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলের কারনে টানা ৩ দিন ধরে লমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতেকরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজের উজান ও ভাটিতে ডিমলা উপজেলার ৬ ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।