ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের অপতৎপরতা: সিজার লিস্ট ছাড়াই গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ বৈধ পণ্য লুট
- আপডেট সময় : ১০:০৮:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৭২৯ বার পড়া হয়েছে
মহাসড়কে জরুরি সেবার যানবাহন থেকে বৈধ পণ্যকে অবৈধ সাজিয়ে হাতিয়ে নেয়ার মিশনে নেমেছে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ- ডিবি’র কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। খোদ ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলামের নির্দেশে এক সপ্তার কম সময়ে, শুধুমাত্র এসএ পরিবহনের দু’টি পার্শেলবাহী গাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় সিজার লিস্ট ছাড়াই গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ বৈধ পণ্য জব্দের নামে লুটে নেয় ডিবি সদস্যরা। সবশেষ ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার। এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রাহকের বুকিং করা বৈধ পণ্যকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ছিনিয়ে নেয়ায়, হয়রানীর মুখে পড়েছেন শত শত গ্রাহক। ব্যাহত হয়েছে জরুরী সেবা।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় সেবামুলক কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান এস এ পরিবহন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জরুরী ডাক- ডকুমেন্ট, প্যাকেট-পার্শ্বেল পাঠানোর নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান এটি। পার্সেল সার্ভিসের সকল নিয়ম মেনে দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রতিটি জেলায় সুনামের সাথে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
নন্দিত প্রতিষ্ঠানটিকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে। খোদ ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলামের নির্দেশে, ৬ দিনের ব্যবধানে এসএ পরিবহনের দু’টি পার্শ্বেলবাহী গাড়ি মহাসড়কে গতিরোধ করে। এমনকি অস্ত্রের মুখে চালক ও হেলপারকে জিম্মি করে নানা নাটকীয়তার জন্ম দেয়। বিভিন্ন স্পট ঘুরিয়ে ডিবি কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয় গাড়ি দুটিকে।
৭ নভেম্বর শুক্রবার সিলেট থেকে ভৈরব হয়ে আরেকটি ডাকবাহী গাড়ি ঢাকায় আসার পথে ভুলতা গাউছিয়ার পর নরসিংদীর রূপসী এলাকায় ডিবির রমনা জোন গতিরোধ করে। অস্ত্রের মুখে গাড়িটি যাত্রাবাড়ির কাজলায় নিয়ে আসে। সেখানে নানা নাটকের পর চালক ও হেলপারের মোবাইল কেড়ে নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তারপর গাড়িসহ তাদের নিয়ে আসা হয় ডিবি কার্যালয়ে।
এর আগে গেল ২ নভেম্বর কুমিল্লা থেকে ঢাকা আসার পথে এসএ পরিবহনের পার্শেলবাহী গাড়ি পথে গতিরোধ করে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে ডিবি সদস্যরা। ডিবি কার্যালয়ে চলে বৈধ পণ্যকে অবৈধ সাজানোর পরিকল্পনা। তবে গাড়ীতে অবৈধ পণ্য থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা জানান, গাড়ী থেকে যেসব মালামাল জব্দ করা হয়েছে তার সমস্ত বৈধ ডকুমেন্ট ও গ্রাহকের ভ্যালিড মোবাইল নাম্বার রয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই আমলে না নিয়ে, হয়রানীর উদ্দেশ্যে মালামাল জব্দ করে তারা।
এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিটি পণ্যই বৈধ এবং এসব পণ্যের চালানও রয়েছে। বাজারের মুদি-মনোহরী দোকানেও এসব পণ্য সহজে পাওয়া যায় সেসব উৎসব সামগ্রীকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে সঠিক সিজারলিস্ট না করে মনগড়া একটি কাগজে লিখে দিয়ে মালামাল ছিনিয়ে নেয় তারা। প্রতিবাদ করলে এসএ পরিবহনের জিএমকে বারাবাড়ি না করার হুমকিও দেয় ডিবি সদস্যরা।
এস এ পরিবহন কর্তৃপক্ষের দাবি, ৪৫ বছরের ইতিহাসে খোদ রাজধানীতে ডিবি সদস্যদের দ্বারা এমন হয়রানীর শিকার হয়নি এসএ পরিবহণ। তল্লাসী করে অস্ত্র ও মাদকের মতো অবৈধ পণ্য না পেয়ে বাজারের সব দোকানে পাওয়া যায় এমন বৈধ পণ্যকে অবৈধ দাবি করা হাস্যকর ও হয়রানী মুলক বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
গোয়েন্দা পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ডের কারণে সুশৃঙ্খল এই বাহিনীর ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও জানান মোরশেদ আলম চৌধুরী। পাশাপাশি দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের শ্রমে ঘামে কষ্টার্জিত টাকার বৈধ পণ্যকে অবৈধ সাজিয়ে হয়রানি বন্ধ করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খার বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।













