০৫:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

শেষ ম্যাচে সেরা ব্যাটিং বাংলাদেশের

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৬৬৩ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩০৬ রান করেছে বাংলাদেশ। চলতি বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

পুনের এই এমসিএ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। কাকতালীয়ভাবে দুটো ম্যাচেই অনুপস্থিত সাকিব আল হাসান। প্রথম ম্যাচটি ছিল ভারতের বিপক্ষে, যে ম্যাচে চোটের জন্য খেলেননি এই অলরাউন্ডার।

শেষ ম্যাচে ফের পুনে আসতে আসতে আঙ্গুলে চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নিয়েছেন নিয়মিত অধিনায়ক।

ভারতের বিপক্ষে টসে জিতেছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টসে হারলেন। ভাগ্য বদলালেও ফল বদলায়নি, দুইবারই বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংই করতে হয়েছে।

বিশ্বকাপে তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং অর্ডারটা নিয়ে নাড়াচাড়া হয়েছে বেশি। শেষ ম্যাচে সাকিবের অবর্তমানে চার নম্বরে নেমেছিলেন, খেলেছেন ৭৯ বলে ৭৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। বিশ্বকাপে হৃদয়ের এটাই প্রথম হাফসেঞ্চুরি। অনেক প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিশ্বকাপে আসা হৃদয় নিজেকে মেলে ধরতে বোধহয় একটু দেরিই করে ফেললেন। আউট হয়েছেন ৪৭তম ওভারে, একটু ধৈর্য্য ধরলে হয়তো সেঞ্চুরিও পেয়ে যেতেন। কিন্তু মার্কাস স্টোয়নিসের ফুলটস বলটায় ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়ানো মারনাস লাবুশেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেয়াতে সেই সম্ভাবনার ইতি।

বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ব্যাটিং উইকেট পুনেতে। এখানেই লঙ্কার সিংহদের শিকার করেছিল কাবুলিওয়ালারা, কিউইদের বিপক্ষে রান পাহাড় গড়েছিল প্রোটিয়ারা আর কমলা বিপ্লব রুখে দিয়েছিল ইংরেজরা। বিরাট কোহলি, কুইন্টন ডি কক, র‍্যসি ফন ডার ডুসেন,বেন স্টোকসরা এই মাঠে পেয়েছেন শতরানের দেখা। তাদের পাশে নিজের নামটাও খোদাই করার সুযোগ ছিল লিটন দাস কিংবা নাজমুল হোসেন শান্তর। কিন্তু দুজনেই হেলায় নষ্ট করেছেন সেই সুযোগ। হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে খেয়ালি শটে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন (৩৬), বেখেয়ালি ভুলে রান আউট হয়েছেন শান্ত (৪৫)। তাদের ইনিংসগুলো বড় হলে দলীয় সংগ্রহটাও বড় হত বাংলাদেশের।

বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার, বাংলাদেশের নিশ্চিত বিদায়। বিশাল ব্যবধানে না হারলে বাংলাদেশের ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলাটাও নিশ্চিত। নিয়মরক্ষার ম্যাচে তাই চোট নিয়েও ডাবলসেঞ্চুরি করা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বিশ্রাম দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, বিশ্রাম জুটেছে পেসার মিচেল স্টার্কেরও। ভার্টিগো সমস্যায় আফগানদের বিপক্ষে না খেলা স্টিভেন স্মিথ ফিরেছেন একাদশে, স্টার্কের জায়গায় শন অ্যাবট।

বাংলাদেশ দলে আগের ম্যাচের একাদশে তিন পরিবর্তন; মোস্তাফিজুর রহমান, শেখ মেহেদি হাসান আর নাসুম আহমেদ ঢুকেছেন একাদশে আর বাদ পড়েছেন তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম। সাকিব আল হাসানের তো বিশ্বকাপই শেষ হয়ে গেছে আঙ্গুলের চোটে।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ৯৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন লিটন-তামজিদ তামিম। আশ্চর্য্য হলেও সত্যি, এটাই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ জুটি! গোটা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খুঁড়িয়েছে উদ্বোধনী জুটির ভাল শুরুর অভাবেই, শেষ ম্যাচে এসে তারা খানিকটা রঙ ফিরে পেলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে (১০ ওভার) শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬২, অন্য ম্যাচগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে রীতিমত স্বপ্নের শুরু। কিন্তু স্বপ্নের স্থায়ীত্ব দীর্ঘ হল না। শন অ্যাবটের শর্ট বল খেলতে না পেরে বোলারের হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিলেন ৩৪ রান করা তামজিদ। ভাংল ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। চমৎকার খেলতে থাকা লিটন লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পাকে আলতো করে উড়িয়ে মেরে যেন ক্যাচ ধরার অনুশীলনই করালেন মারনাস লাবুশেনকে। তাতে শান্ত’র সঙ্গে ৩০ রানের জুটিটা হল বিচ্ছিন্ন। অধিনায়ক শান্ত প্রথম বলে লেগ বিফোর উইকেটের জোরাল আবেদন থেকে বাঁচার পর সাহসী হয়ে উঠলেন। ডাউন দ্যা উইকেটে এসে কয়েকটা চার মারলেন পুলশটে, বিশেষ করে দুই মিডিয়াম পেসার মিচেল মার্শ ও মার্কাস স্টোয়নিসের বলে।

ম্যাচের লাগাম যখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের হাতে, তখনই দুটো রানআউটে সব পালটে দিলেন লাবুশেন। স্কয়ার লেগে বল ঠেলে দিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন শান্ত, লাবুশেন স্লাইড করে বলটা তুলে নিয়ে নিখুঁত থ্রো করলেন উইকেটরক্ষকের হাতে। দ্বিতীয় রান নিতে ফিরে আসা শান্ত ক্রিজে ঢোকার আগেই জস ইংলেস ভেঙ্গে দিয়েছেন স্টাম্প। ৪৪ রানে রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন শান্ত।

চার-ছক্কায় দ্রুত রান তোলা মাহমুদউল্লাহকেও দারুণ আন্ডারআর্ম থ্রো তে আউট করেছেন লাবুশেন। তৌহিদ হৃদয় কভারে বলটা ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে দৌড় দিয়েছিলেন। অন্যপ্রান্ত থেকে মাহমুদউল্লাহ দৌড়ে এসে ক্রিজে ঢোকার আগেই উড়ুক্কু থ্রো থেকে স্টাম্প ভেঙ্গে দেন লাবুশেন। দুই রানআউটে দুজন থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে ইনিংসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হারিয়ে ফেলায় সংগ্রহটা বড় হয়নি বাংলাদেশের। নিজের শেষ বিশ্বকাপ ইনিংসে ২১ রানের বেশি করতে পারেননি পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলা মুশফিকুর রহিমও।

শেষ দিকে বাংলাদেশের উইকেট পড়েছে নিয়মিত। রানও ওঠেনি কাঙ্খিত মাত্রায়। শেষ ৫ ওভারে আসে মাত্র ৩৫ রান। হৃদয়ের বিদায়ের পর মেহেদি হাসান মিরাজ ২০ বলে ২৯ রান করলেও নাসুম আহমেদ ১১ বলে করেন ৭ রান, শেখ মেহেদি ৩ বলে করেন ২ রান আর তাসকিন ১ বল খেলে কোন রান করতে পারেননি।

১০ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার অ্যাডাম জাম্পা। আসরে ২২ উইকেট হয়ে গেল এই লেগস্পিনারের। শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশঙ্কাকে ছাপিয়ে জাম্পাই এখন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। বদলি পেসার শন অ্যাবটও নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পারফর্মার নিঃসন্দেহে লাবুশেন। দুটো দারুণ রানআউটে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেছেন, সঙ্গে দুটো চমৎকার ক্যাচ।

জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হবে ৩০৭ রান। আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৯২ রান তাড়া করে জেতাটাই অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ায় সেরা সাফল্য। এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮৭ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাই জয় দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করতে হলে রেকর্ড গড়েই জিততে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।

স্কোরকার্ড

বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৩০৬/৮; হৃদয় ৭৪, শান্ত ৪৫, লিটন ৩৬, তানজিদ ৩৬

জাম্পা ২/৩২, অ্যাবট ২/৬১

ডয়চে ভেলে

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শেষ ম্যাচে সেরা ব্যাটিং বাংলাদেশের

আপডেট সময় : ০৩:৪৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩

বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩০৬ রান করেছে বাংলাদেশ। চলতি বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

পুনের এই এমসিএ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। কাকতালীয়ভাবে দুটো ম্যাচেই অনুপস্থিত সাকিব আল হাসান। প্রথম ম্যাচটি ছিল ভারতের বিপক্ষে, যে ম্যাচে চোটের জন্য খেলেননি এই অলরাউন্ডার।

শেষ ম্যাচে ফের পুনে আসতে আসতে আঙ্গুলে চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নিয়েছেন নিয়মিত অধিনায়ক।

ভারতের বিপক্ষে টসে জিতেছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টসে হারলেন। ভাগ্য বদলালেও ফল বদলায়নি, দুইবারই বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংই করতে হয়েছে।

বিশ্বকাপে তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং অর্ডারটা নিয়ে নাড়াচাড়া হয়েছে বেশি। শেষ ম্যাচে সাকিবের অবর্তমানে চার নম্বরে নেমেছিলেন, খেলেছেন ৭৯ বলে ৭৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। বিশ্বকাপে হৃদয়ের এটাই প্রথম হাফসেঞ্চুরি। অনেক প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিশ্বকাপে আসা হৃদয় নিজেকে মেলে ধরতে বোধহয় একটু দেরিই করে ফেললেন। আউট হয়েছেন ৪৭তম ওভারে, একটু ধৈর্য্য ধরলে হয়তো সেঞ্চুরিও পেয়ে যেতেন। কিন্তু মার্কাস স্টোয়নিসের ফুলটস বলটায় ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়ানো মারনাস লাবুশেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেয়াতে সেই সম্ভাবনার ইতি।

বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ব্যাটিং উইকেট পুনেতে। এখানেই লঙ্কার সিংহদের শিকার করেছিল কাবুলিওয়ালারা, কিউইদের বিপক্ষে রান পাহাড় গড়েছিল প্রোটিয়ারা আর কমলা বিপ্লব রুখে দিয়েছিল ইংরেজরা। বিরাট কোহলি, কুইন্টন ডি কক, র‍্যসি ফন ডার ডুসেন,বেন স্টোকসরা এই মাঠে পেয়েছেন শতরানের দেখা। তাদের পাশে নিজের নামটাও খোদাই করার সুযোগ ছিল লিটন দাস কিংবা নাজমুল হোসেন শান্তর। কিন্তু দুজনেই হেলায় নষ্ট করেছেন সেই সুযোগ। হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে খেয়ালি শটে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন (৩৬), বেখেয়ালি ভুলে রান আউট হয়েছেন শান্ত (৪৫)। তাদের ইনিংসগুলো বড় হলে দলীয় সংগ্রহটাও বড় হত বাংলাদেশের।

বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার, বাংলাদেশের নিশ্চিত বিদায়। বিশাল ব্যবধানে না হারলে বাংলাদেশের ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলাটাও নিশ্চিত। নিয়মরক্ষার ম্যাচে তাই চোট নিয়েও ডাবলসেঞ্চুরি করা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বিশ্রাম দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, বিশ্রাম জুটেছে পেসার মিচেল স্টার্কেরও। ভার্টিগো সমস্যায় আফগানদের বিপক্ষে না খেলা স্টিভেন স্মিথ ফিরেছেন একাদশে, স্টার্কের জায়গায় শন অ্যাবট।

বাংলাদেশ দলে আগের ম্যাচের একাদশে তিন পরিবর্তন; মোস্তাফিজুর রহমান, শেখ মেহেদি হাসান আর নাসুম আহমেদ ঢুকেছেন একাদশে আর বাদ পড়েছেন তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম। সাকিব আল হাসানের তো বিশ্বকাপই শেষ হয়ে গেছে আঙ্গুলের চোটে।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ৯৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন লিটন-তামজিদ তামিম। আশ্চর্য্য হলেও সত্যি, এটাই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ জুটি! গোটা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খুঁড়িয়েছে উদ্বোধনী জুটির ভাল শুরুর অভাবেই, শেষ ম্যাচে এসে তারা খানিকটা রঙ ফিরে পেলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে (১০ ওভার) শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬২, অন্য ম্যাচগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে রীতিমত স্বপ্নের শুরু। কিন্তু স্বপ্নের স্থায়ীত্ব দীর্ঘ হল না। শন অ্যাবটের শর্ট বল খেলতে না পেরে বোলারের হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিলেন ৩৪ রান করা তামজিদ। ভাংল ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। চমৎকার খেলতে থাকা লিটন লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পাকে আলতো করে উড়িয়ে মেরে যেন ক্যাচ ধরার অনুশীলনই করালেন মারনাস লাবুশেনকে। তাতে শান্ত’র সঙ্গে ৩০ রানের জুটিটা হল বিচ্ছিন্ন। অধিনায়ক শান্ত প্রথম বলে লেগ বিফোর উইকেটের জোরাল আবেদন থেকে বাঁচার পর সাহসী হয়ে উঠলেন। ডাউন দ্যা উইকেটে এসে কয়েকটা চার মারলেন পুলশটে, বিশেষ করে দুই মিডিয়াম পেসার মিচেল মার্শ ও মার্কাস স্টোয়নিসের বলে।

ম্যাচের লাগাম যখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের হাতে, তখনই দুটো রানআউটে সব পালটে দিলেন লাবুশেন। স্কয়ার লেগে বল ঠেলে দিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন শান্ত, লাবুশেন স্লাইড করে বলটা তুলে নিয়ে নিখুঁত থ্রো করলেন উইকেটরক্ষকের হাতে। দ্বিতীয় রান নিতে ফিরে আসা শান্ত ক্রিজে ঢোকার আগেই জস ইংলেস ভেঙ্গে দিয়েছেন স্টাম্প। ৪৪ রানে রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন শান্ত।

চার-ছক্কায় দ্রুত রান তোলা মাহমুদউল্লাহকেও দারুণ আন্ডারআর্ম থ্রো তে আউট করেছেন লাবুশেন। তৌহিদ হৃদয় কভারে বলটা ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে দৌড় দিয়েছিলেন। অন্যপ্রান্ত থেকে মাহমুদউল্লাহ দৌড়ে এসে ক্রিজে ঢোকার আগেই উড়ুক্কু থ্রো থেকে স্টাম্প ভেঙ্গে দেন লাবুশেন। দুই রানআউটে দুজন থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে ইনিংসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হারিয়ে ফেলায় সংগ্রহটা বড় হয়নি বাংলাদেশের। নিজের শেষ বিশ্বকাপ ইনিংসে ২১ রানের বেশি করতে পারেননি পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলা মুশফিকুর রহিমও।

শেষ দিকে বাংলাদেশের উইকেট পড়েছে নিয়মিত। রানও ওঠেনি কাঙ্খিত মাত্রায়। শেষ ৫ ওভারে আসে মাত্র ৩৫ রান। হৃদয়ের বিদায়ের পর মেহেদি হাসান মিরাজ ২০ বলে ২৯ রান করলেও নাসুম আহমেদ ১১ বলে করেন ৭ রান, শেখ মেহেদি ৩ বলে করেন ২ রান আর তাসকিন ১ বল খেলে কোন রান করতে পারেননি।

১০ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার অ্যাডাম জাম্পা। আসরে ২২ উইকেট হয়ে গেল এই লেগস্পিনারের। শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশঙ্কাকে ছাপিয়ে জাম্পাই এখন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। বদলি পেসার শন অ্যাবটও নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পারফর্মার নিঃসন্দেহে লাবুশেন। দুটো দারুণ রানআউটে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেছেন, সঙ্গে দুটো চমৎকার ক্যাচ।

জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হবে ৩০৭ রান। আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৯২ রান তাড়া করে জেতাটাই অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ায় সেরা সাফল্য। এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮৭ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাই জয় দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করতে হলে রেকর্ড গড়েই জিততে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।

স্কোরকার্ড

বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৩০৬/৮; হৃদয় ৭৪, শান্ত ৪৫, লিটন ৩৬, তানজিদ ৩৬

জাম্পা ২/৩২, অ্যাবট ২/৬১

ডয়চে ভেলে