বাড়ি ঘরে পানি জমে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে বানভাসী মানুষ
- আপডেট সময় : ১২:৫৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০
- / ১৫০৬ বার পড়া হয়েছে
দেশের বিভিন্ন জেলার নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের । বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
কুড়িগ্রামে দীর্ঘদিন বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা ক্ষতিগ্রস্থ ঘর-বাড়িতে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে দুর্বিসহ দিন কাটছে বন্যা দুর্গত পরিবারগুলোর। নীচু এলাকার অনেক পরিবারের ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় তারা এখনও ঘরে ফিরতে পারেনি। বন্যা কবলিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মরোগসহ নানা পানি বাহিত রোগ।
জামালপুরে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে আজ সকালে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি চতুর্থ দফায় ২দিন বৃদ্ধির পর এখন আবার কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩১ এবং কাজিপুর পয়েন্টেও একই পরিমান কমে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গোপালগঞ্জে মধুমতি, কুমার নদ, শৈলদহ, বাঘিয়ারকুল, ঘাঘর নদী ও এমবিআর চ্যানেলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নতুন করে কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলবাড়ী, কাফুলাবাড়ী এবং রামনগর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার ১৮ টি গ্রামের ১৬ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৫শ’ পরিবার বিভিন্ন স্কুল ও রাস্তার পাশে কুড়ে ঘর বানিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মধুমতি নদী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৪২ সেন্টিমিটার এবং মধুমতি বিলরুট চ্যানেলে বিপদ সীমার ৫ সেন্টিমিন্টার বেড়ে ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। #
টানা কয়েক দিন ধরে ফরিদপুরে পদ্মানদীর পানি ধারাবাহিক ভাবে কমতে শুরু করেছে।গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মানদীর পানি ২ সেন্টিমিটার কমে এখন তা বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, বন্যা পানি কিছুটা কমার কারনে সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বন্যা কবলিতবাড়ী-ঘর জাগতেশুরু করেছে।
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদে তীব্র স্রোতে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। সরকারি হিসেবেই প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
মানিকগঞ্জের যমুনা নদীর পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯ টার এর দিকে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ নদীর পানিও তেমন কমেনি। মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার ৬ টি উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি রয়েছে।
গাজীপুরে তুরাগ, বংশী ও ঘাটাখালি নদীর পানি কমতে শুরু হলেও বর্তমানে তা ধীরগতিতে কমছে। এখনো কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ,আঞ্চলিক সড়ক মহাসড়ক ও হাট-বাজার পানিতে ডুবে রয়েছে। ডুবে গেছে কালিয়াকৈর বাজারের প্রধান সড়ক।
নেত্রকোনায় ধীর গতিতে পানি কমতে শুরু করেছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদি বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এদিকে কংস, ধনু, সোমেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ধনু নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পাবনায় একদিন স্থীতিশীল অবস্থায় থাকার পর কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, গেল একদিন স্থীতিশীল অবস্থায় থাকার পর আবার কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। আজ মঙ্গলবার সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।