পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘উন্নতমানের বাঁশের চারা’ প্রকল্পের গতি শুধু খাতা কলমেই
- আপডেট সময় : ০৭:১০:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫১১ বার পড়া হয়েছে
পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৬টি উপজেলায় কৃষকদের সাবলম্বী করতে উন্নতমানের বাঁশের চারার প্রজেক্টটি খাতা কলমে বাস্তবায়নের গতি থাকলেও প্রকল্পের অস্তিত্ব নেই অধিকাংশ এলাকায়। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৬ সালে। বিগত চারবছরেও প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারির দেখা পাননি স্থানীয় প্রতিনিধি এবং পাহাড়ী এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে, পাহাড়ের বুনো বাঁশের বাগানকে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত দেখিয়ে লুটে নেয়া হচ্ছে পুরো টাকা। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক এসএ টিভির কাছে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের দাবি দৃশ্যমান হতে সময় লাগবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে, দুর্গম পাহাড়ে বসবাসরত অনগ্রসর জনগোষ্টির বড় একটি অংশকে উন্নয়নের মুল স্রোত ধারায় আনতে উন্নতমানের বাঁশ চাষ নামের একটি প্রকল্প চলছে তিন পার্বত্য জেলায়। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি এক একর জমি আয়োতনের ১৩ হাজার আলাদা বাগান গড়ে তুলবে প্রকল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি বাগানের মালিক হবে একটি করে কৃষক পরিবার। এ হিসেবে অন্তত ১৩ হাজার কৃষক পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী হবেন। একইসাথে স্থানীয়ভাবে উদ্যোক্তা তৈরী করে ২৬০ টি বাঁশ নির্ভর ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারিত আছে প্রকল্পটিতে। ৫ বছর মেয়াদী প্রকল্পের ৪ বছর পেরিয়ে গেছে ৩ মাস আগে। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কিছুই হয়নি কোথাও।
প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য একটি এলাকা কাউখালী উপজেলা। এখানে বেশকিছু বড় বড় বাঁশ বাগানের দেখা মেলে। কিন্তু বাগানের মালিকরা জানান, বংশ পরম্পরায় এসব বাগানের উত্তরাধিকারী হয়েছেন তারা। এরসঙ্গে কোন প্রকল্পের সম্পর্ক নেই। এছাড়া উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাকেও দেখেননি কখনো।
কাউখালীর উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, চার বছর ধরে এতবড় একটি প্রকল্প তার এলাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে এ কথাটি সাংবাদিকদের মুখে এই প্রধম শুনলেন তিনি।
এ ব্যপারে প্রাতিষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে গেলে প্রকল্প পরিচালককে অফিসে পাওয়া যায়নি। ফোনে বক্তব্য জানার চেষ্ঠা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে সদ্য যোগদান করা বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জানান প্রকল্প পরিচালক তাকে জানিয়েছেন, লাগানো বাঁশের চারাগুলো এখনো বড় হয়নি। তাই আরো কিছুদিন না গেলে দৃশ্যমান হবে না।
তিন পার্বত্য জেলার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকাই পাহাড় ও বনাঞ্চল দ্বারা পরিবেষ্টিত। এখানকার কাচালং, রাইখং, সাংগু, মাতামুহুরী নদীসহ পাহাড়ি ছড়াগুলোর চারপাশে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর বাঁশের উতপাদন হয় আবহমানকাল ধরে। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এসব বাঁশ বাগানকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে লুটে নেয়া হয়েছে বরাদ্দ করা প্রায় ২৫ কোটি টাকা, এমনটায় জানান সংশ্লিষ্টরা।