দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে
- আপডেট সময় : ১২:২২:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অগাস্ট ২০২০
- / ১৫০৫ বার পড়া হয়েছে
দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝে দু-একদিন পানি একটু কমলেও এখন স্থিতি অবস্থা বিরাজ করছে। ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসী মানুষ। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ রয়েই গেছে বন্যার্তদের । চরাঞ্চলের কিছু ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও নীচু এলাকার ঘর-বাড়ি থেকে এখনও পানি নেমে যায়নি। এ অবস্থায় বাঁধে, পাকা সড়কে ও আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বেশিরভাগ মানুষ ঘরে ফিরতে পারেনি। দীর্ঘ বন্যায় দুর্গত এলাকা গুলোতে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সংকটে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্যা কবলিতরা।
গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে আরও ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪০ এবং কাজিপুর পয়েন্টেও একই পরিমান পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী আগামী দুই একদিন যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে ।
জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুরে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
গোপালগঞ্জে মধুমতি নদী ও কুমার নদের পানি কিছুটা কমলেও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মধুমতি নদী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও বিলরুট চ্যানেলের বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়েনের শতাধিক বাড়ী ঘর তলিয়ে গেছে।
পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরের চরাঞ্চলের নদী ভাঙ্গনের ব্যাপকতা বেড়েছে। ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি কোনমতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝূকিতে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা।
মানিকগঞ্জের যমুনা নদীর পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে সোমবার সকাল ৯ টার দিকে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় । জেলার সকল নদ নদীর পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি। এখনও ৭টি উপজেলার ৬ টি উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ফলে এসব এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে পানি বাহিত রোগ।
গাজীপুরে তুরাগ , বংশী ও ঘাটাখালী নদীর পানি কমতে শুরু করলেও কালিয়াকৈর উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও ১৮২টি গ্রাম এখনো বন্যা কবলিত । গ্রাম অঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় লোকজন এখনও পানিবন্দি। ফলে এসব অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে । কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়ক ও কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া সড়কের বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং সফিপুর-বড়ইবাড়ি সড়কের বড়ইবাড়ি ব্রীজের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি কমে কিছুটা উন্নতি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বান ভাসিদের মনে।ফলে দীর্ঘ ১৭ দিন পানি বন্দি থাকার পরে বেড়ি বাধে আশ্রয় নেয়া অনেক মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
নেত্রকোনায় পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করলেও দীর্ঘ মেয়াদি বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ কমছেনা। এদিকে ধনু নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পাবনায় গত ২৪ ঘন্টায় স্থীতিশীল অবস্থায় রয়েছে যমুনা নদীর পানি। সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৯৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।