ড্যাম আর স্লুইস গেইটের কারণে হালদায় কমছে মিঠা পানির মজুদ
- আপডেট সময় : ০১:২৯:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১
- / ১৫০৪ বার পড়া হয়েছে
উৎসমুখে একাধিক ড্যামসহ অন্তত ২১টি শাখা প্রশাখায় স্লুইস গেটের কারণে মিঠা পানির মজুদ কমেছে দেশীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে। একই সাথে কর্ণফূলী নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় অমাবশ্যা-পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে সাগরের লবণাক্ত পানি অনায়াসেই ঢুকছে হালদায়। আর এতেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ প্রজাতির মা মাছ। এই মৌসুমে স্মরণকালের সবেচেয়ে কম ডিম সংগ্রহের পর এমন তথ্যই উঠে এসেছে গবেষকদের বিশ্লেষণে। তাদের দাবি, উজানের সব প্রতিবন্ধকতা নিরসনের পাশাপাশি কর্ণফূলী ও হালদাকে ঘিরে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু না করলে এর ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বটনাতলী পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান হাটহাজারী হয়ে কালুরঘাট সেতুর কাছে কর্ণফূলীতে মিশেছে হালদা নদী। কালের বিবর্তনে যা আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। কারণ গোটা পৃথিবীর এটি একমাত্র নদী যেখান থেকে কার্ব জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করেন জেলেরা।
গেল বছর হালদা থেকে প্রায় ২৬ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করা গেলেও এবার তার পারিমান কমে দাড়িয়েছে মাত্র সাড়ে ৬ হাজার কেজি। [ফুটেজ-২] কারণ উৎসমুখে বাঁধ ও খালগুলোতে স্লুইচ গেট থাকায় মিঠা পানির মজুদ কমেছে হালদায়। আর জোয়ারে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ে এখানে। এতেই বিপর্যয় নামে ডিম আহরণে।
দেশের বিভিন্ন নদী থেকে ডিম ছাড়ার আগে হালদা নদীতে আসে মা মাছ। ডিম ছেড়ে ফিরে যায় আবার। নির্ধারিত সময়ে ডিম ছাড়তে না পারলে প্রকৃতির নিয়মে পেটেই শুকিয়ে যায় ডিম। যা মা মাছের স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আগামী কিছু দিন মা মাছ রক্ষায় উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ এই পরিবেশ কর্মীর। [ফুটেজ-২]
আর হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, হালদার মা মাছ রক্ষায় অতীতের মতো ভবিষ্যতেও প্রশাসনের উদ্যোগের ঘাটতি থাকবে না।
১০৬ কিলোমিটার লম্বা এই নদীটির রাউজান ও হাটহাজারী অংশের অঙ্কুরীঘোনা থেকে রামদাশমুন্সির হাট পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় দেশীয় মাছের নিষিক্ত ডিম পাওয়া যায় প্রতিবছর। তাই এই এলাকাটি প্রশাসন ও গবেষকদের নানামুখি নজরদারি থাকলেও নদীর বাকি অংশ এখনো অরক্ষিত।