চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি চট্টগ্রামের টেরিবাজার
- আপডেট সময় : ০৩:০৭:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১
- / ১৫০৭ বার পড়া হয়েছে
চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাপড়ের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের টেরিবাজার। এখান থেকে কাপড় কিনলেই ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চড়া দামে পরিবহণ করতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা। কেউ এর প্রতিবাদ করলেই হুমকি ধামকি দেয়া হয় । কখনো কখনো পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের দিয়েও হয়রানী করানো হয় ব্যবসায়ীদের। চিহ্নিত এই সিণ্ডিকেটের কবল থেকে মুক্তি চান টেরিবাজারের ব্যবসায়ীরা। আর পুলিশ বলছে লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেবেন তারা।
ঢাকার ইসলামপুরের পর দেশের সবচেয়ে বড় কাপড়ের পাইকারী বাজার চট্টগ্রামের টেরিবাজার। ৮২ টি মার্কেটে প্রায় আড়াই হাজার ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রন করেন দেশের অন্তত ৩০ ভাগ কাপড়ের বাজার। কিন্তু মাত্র একটি সিণ্ডিকেটের কাছে এখন জিম্মি হয়ে পড়েছে এই বাজারের ব্যবসায়ী ও হাজারো ক্রেতা। কেউ কোন পণ্য কিনলে তা পরিবহণের দায়িত্ব চিহ্নিত ওই সিণ্ডিকেটের হাতে তুলে দেয়া বাধ্যতামুলক। না হলে অকথ্য নির্যাতন সইতে হয় ব্যবসায়ীদের।
ক’দিন আগে কায়সার নামের এক ব্যবসায়ী ওই সিণ্ডিকেটের কাছে পণ্য না দেয়ায় এই হুমকির মুখোমুখি হতে হয় তাকে। এমন নির্যাতনের শিকার টেরিবাজারের সবাই। কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেকে। কারণ প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা আর কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার আশির্বাদও আছে সিণ্ডিকেটটির মাথার ওপর।
টেরিবাজারের কাটা পাহাড় রহমান ম্যানসনের ২য় তলায় অফিস খুলে বসেছে সিণ্ডিকেটটি। নিজেদের কখনো সেবা ট্রান্সপোর্ট আবার কখনো পাকপাঞ্জা ট্রান্সপোর্টের মালিক হিসেবে দাবি করলেও অফিসে কোন সাইনবোর্ড নেই, এমনকি পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ভাউচারও দেয়া হয় না ব্যবসায়ীদের। বিষয়টি নিয়ে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানান টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সিণ্ডিকেটটির প্রধান বাকুলিয়া এলাকার সাঈদ রহিম। তার সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড মানিক ও নিখিল। GFX-1,2,3 এই তিন জনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সিণ্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে গোটা টেরিবাজারকে। এদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও জমা আছে থানায়। GFX-4,5,6 যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন কোতোয়ালী থানার ওসি।
টেরিবাজার থেকে কোন পণ্য কিনে ভ্যান, সিএনজি বা ট্রাকে করে বাইরে নিতে গেলেই বাধার সম্মুখিন হতে হয় সাঈদ সিণ্ডিকেটের নিয়োগ করা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনীর। তারা সাঈদের নামসর্বস্ব কথিত অফিসে পণ্য নামাতে বাধ্য করে এবং প্রচলিত কুরিয়ার সার্ভিসের চেয়ে বহুগুনে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। কথিত এই ট্রান্সপোর্ট নামধারী সিণ্ডিকেটের কারণে শুধু এই খাতেই কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার এমনটাই জানান সংশ্লিষ্টরা।