খুপরি ঘর ছেড়ে ভাসানচরের আধুনিক, পরিকল্পিত ও নিরাপদ নিবাসে স্থানান্তরিত হতে পেরে খুশি রোহিঙ্গারা
- আপডেট সময় : ০১:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / ১৫০৮ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজারের খুপরি ঘর ছেড়ে ভাসানচরের আধুনিক, পরিকল্পিত ও নিরাপদ নিবাসে স্থানান্তরিত হতে পেরে খুশি বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গারা। তিন বছর আগে অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে সঙ্গী করে বাংলাদেশে আসা এই মানুষগুলো এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছেন ভাসানচরে। অথচ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অপপ্রচারের কারণে এতদিন বিভ্রান্ত ছিলেন তারা। বলছেন, বাস্তবচিত্র বুঝতে পারলে অনেক আগেই চলে আসতেন এখানে। আর নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, নিয়মনীতি মেনে চলতে পারলে আধুনিকতার সব সুযোগ-সুবিধাই ভোগ করতে পারবেন এই চরের বাসিন্দারা।
কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিত্র এটি। খুপরি ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বছরের পর বছর ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে রোহিঙ্গারা। শুরু থেকেই তাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকার আন্তরিক হলেও মিয়ানমারের ছলচাতুরি আর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বিমুখী নীতির কারণে তা দীর্ঘায়িত হয়।
এই বাস্তবতায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনের নিশ্চিয়তা দিতে তাদের একাংশকে ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার। অন্তত এক লাখ মানুষের জন্য পরিকল্পিত বসতিও গড়ে তোলে নৌবাহিনী। কিন্তু আন্তর্জাতিক নানান মহলের অপপ্রচারের কারণে সেখানেও বাধে বিপত্তি।
সববাধা ডিঙ্গিয়ে গেল ৪ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ১৬ শো ৪৫ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে উদ্বুদ্ধ হয়। এরপর চার দফায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা যায় ভাসানচরে। নিজেদের ঘর আর আধুনিক সুযোগ সুবিধায় খুশির কথাও জানান তারা।
প্রতিটি ক্লাস্টারে ডিপ টিউবয়েলের মাধমে খাবার পানির ব্যবস্থার পাশাপাশি, একটি করে মিঠাপানির পুকুর, সৌর বিদ্যুৎ এমনকি মোবাইল নেটওয়ার্কসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধার সবটাই আছে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে। এমনকি বাজার ব্যবস্থাপনায়ও সার্বক্ষনিক মনিটরিং ব্যবস্থা রেখেছে নৌ-বাহিনী।
৫ তলা বিশিষ্ট ১২০ টি শেল্টার হাউজও নির্মাণ করা হয়েছে ভাসানচরে । দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়ায় যেখানে আশ্রয় নিতে পারবেন বাসিন্দারা। এমন নিরাপদ আবাসস্থল ঘিরে যখন অপপ্রচারে ব্যাস্ত আন্তর্জাতিক মহল তখন, বাস্তবতার কথা জানান দু’মাস আগে স্থানান্তর হওয়া রোহিঙ্গারাই।
প্রকল্প পরিচালকের দাবি, রোহিঙ্গদের উপলক্ষ্য করে পরিকল্পিত নগরীই গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তারা। এমন নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ দেয়ার পাশাপাশি নিরাপদ পরিবেশ পেলে জন্মভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান রোহিঙ্গারা।