ক্রয় নীতি উপেক্ষা করে ১১ কোটি টাকার জমি ১০৪ কোটিতে কিনলো কর্ণফূলী গ্যাস কোম্পানী
- আপডেট সময় : ০৩:১৬:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অগাস্ট ২০২০
- / ১৫০৯ বার পড়া হয়েছে
সরকারি ক্রয়নীতি উপেক্ষা করে ২০১৬ সালে মাত্র ১১ কোটি টাকার জমি একশত চার কোটি টাকায় ক্রয় করে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী কেজিডিসিএল। ওই সময় কোম্পনীর এমডি ছিলেন বর্তমান পেট্রোবাংলার পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরী। জমিটি ক্রয় করার পর এমডির বিরুদ্ধে মোটা অংকের কমিশন নেয়ার অভিযোগ উঠে। চাঞ্চল্যকর এই ক্রয় বাণিজ্য নিয়ে মিডিয়ায় খবর প্রচারসহ প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতিবাদ জানালেও আইয়ুব খানের খুটি নড়েনি। উপরন্ত তার দুর্নীতির সারথী হতে রাজি না হওয়ায় কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন গুরুতর এই অভিযোগটি তদন্ত করছে। আইয়ুব খান চৌধুরী এই অভিযোগটিও অস্বীকার করেছেন ।
২০১৬ সালে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি এলাকার ২৭ কাঠার এই প্লটটি ক্রয় করে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী কেজিডিসিএল। জমিটি কিনতে প্রতিষ্ঠানটির খরচ পড়ে একশত কোটি টাকারও বেশি। অথচ জমিটির মৌজা রেট প্রতিকাঠা মাত্র ৪০ লাখ টাকা। এ হিসেবে সর্বসাকুল্য জমির মুল্য পড়ে ১১ কোটি টাকারও কম। অধিগ্রহণের মাধ্যমে জমিটি কিনলে খরচ হতো ৩৩ কোটি টাকার মতো। গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, কেজিডিসিএলের সাবেক এমডি আইয়ুব খান চৌধুরী জমিটি ক্রয় করতে মোটা অংকের কমিশনের মাধ্যমে বড় এই ক্রয় বাণিজ্যটি করেন।
স্বায়ত্বসাশিত সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় নীতিমালায় প্রতিষ্ঠান প্রধান নিজ ক্ষমতাবলে ২০ খেকে ২৫ কোটি টাকা এবং পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি নিয়ে ৩০ কোটি আর মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ও সম্পদ কিনতে পারবেন। এরচেয়ে বেশি খরচ করতে হলে অবশ্যয় একনেকের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু কর্ণফূলীর সাবেক এমডি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শুধু বোর্ড সদস্যদের অনুমতি নিয়েই জমি কিনতে খরচ করেন ১০৪ কোটি টাকা।
বড় এই দুর্নীতির সারথি হতে রাজি না হওয়ায় কেজিডিসিএলের অর্থ ও হিসাব বিভাগের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু জাফর ও উপ মহা ব্যবস্থাপক আব্দুল হক মজুমদারকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেন তিনি। আইয়ুব খানের প্রভাবে এখনো ভীত-সন্ত্রস্ত সাবেক এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটির তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। আইনগত জটিলতায় তদন্তাধিন বিষয়ে দুদকের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও
অনুসন্ধানের বিষয়টি স্বীকার করেন কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর এই কর্মকর্তা।
জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন কেজিডিসিএলের সাবেক এমডি বর্তমান পেট্রোবাংলার পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরী।
চার বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠিত এই দুর্নীতির বিচার না হওয়ায়, কেজিডিসিএলের মতো সরকারি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।