কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি
- আপডেট সময় : ১২:১৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০
- / ১৫১২ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। এদিকে, যমুনার পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায়, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা ও নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া ও পাবনায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি ৭৬ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৩৫ ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।
সিরাজগঞ্জে বেড়েই চলছে যমুনা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি আরো ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্যদিকে জেলার কাজিপুর উপজেলা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পায় ২৯ সেন্টিমিটার এবং তা সকালে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপয় দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ২৪ ঘন্টায় বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ৷ এতে সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া বাধগুলো দিয়ে পানি প্রবেশ করে ফুলছড়ি-গাইবান্ধা আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর হাটু পানি নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু গ্রাম।
পানি বাড়তে শুরু করেছে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ও তার শাখা গড়াই নদীতে। ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮৯ সেঃ মিঃ এবং গড়াই নদীতে ৯ দশমিক ৫৭ সেঃ মিঃ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপদসীমার প্রায় ৩ মিটার নিচে রয়েছে।
সকালে যমুনা নদীর পানি পাবনার নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩. ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে নদীর তীরবর্তী নিচু ফসনের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার কলমাকান্দা উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কলমাকান্দা উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। গেল ২৪ ঘন্টায় বন্যার পানি ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে। সকালে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে । এতে করে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ,মাদারগঞ্জ , সরিষাবাড়ি ও বকশীগঞ্জ উপজেলার ২০ টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে, সকাল থেকে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপরদিয়ে এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এতে প্রায় ৪ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়েছে।দূর্গত এলাকাগুলোতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে থাকায় অর্বননীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অফিস থেকে চাল বিতরন অব্যাহত থাকলেও বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা