এই দিনে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে ঘাতকেরা চেয়েছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনাকে মুছে দিতে
- আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২০
- / ১৫১১ বার পড়া হয়েছে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল লাখো মানুষ, হানাদারদের পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিল বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্যকে। ১৯৭৫-এর এই দিনে তাকেই হত্যার মাধ্যমে ঘাতকেরা চেয়েছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনাকে মুছে দিতে।
বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা, স্বাধীনতার স্থপতি ও রাষ্ট্রপ্রধান- একের ভিতরে অসীম, শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ আর দশজন বাঙ্গালীর মতই ছিলো তার জীবন যাপন। ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন, কিন্তু বাস করতেন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের এই অতি সাধারণ বাড়িটিতে। নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি ছিলো না বাড়িটিকে ঘিরে। সবার জন্য অবারিত দ্বার ছিল রাষ্ট্রপ্রধানের এই বাড়ি। কারণ, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, এই বাংলাদেশের কোন মানুষ কখনোই তার কোন ক্ষতি করতে পারে না।
কিন্তু না, বিশ্বাসঘাতকেরা সুযোগ নিলো ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের রাতে। অন্ধকারের মাঝে মাত্র ২০ মিনিটের নির্মম তান্ডবে কেড়ে নিলো তাজা প্রাণ। ভোরের আলো ফোঁটার আগেই হত্যা করলো জাতির পিতাকে। একাত্তরের পরাজিত মহলের ষড়যন্ত্রে সেনাবাহিনীর উচ্চাভিলাষী কয়েকজন সদস্য অতর্কিত হামলা করে হত্যা করে বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, তাদের নবপরীনিতা দুই বঁধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে। ঘাতকের হাত এতটুকু কাঁপেনি শিশু রাসেলকে হত্যা করতে গিয়ে। নিহত হন বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তস্বত্তা স্ত্রী শেখ আরজু মনিও।
রূখে দাঁড়ানোয় জীবন দিতে হয়েছিল কর্নেল জামিলকেও। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব কিছু ধামা চাপা দিতে চেয়েছিল ঘাতকেরা। বছরের পর বছর চলে যায়, ইতিহাস বিকৃতির সাথে পিছিয়ে যেতে থাকে সম্ভাবনার বাংলাদেশ।
১৯৯৬ সালে ইনডেমনিটির কালো বাঁধা কাটিয়ে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের বিচার শুরু হয়। অবশেষে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারী ৫ জন খুনীকে ফাঁসী দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিদেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের একজনকে ফিরিয়ে এনে চলতি বছরের এপ্রিলে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আর তা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনার জন্য। ৭৫ এর আগস্টে তিনি আর তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার হাজারো ষড়যন্ত্র হলেও যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বাংলার মুজিব, শেখ মুজিবুর রহমান।