উৎপাদিত দুধ ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পারায় বিপাকে গরু খামারিরা
- আপডেট সময় : ০৬:০৪:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
- / ১৫০৫ বার পড়া হয়েছে
গো-খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি পেলেও দুধের মুল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায় গত কয়েক বছর লোকশান দিয়ে আসছেন গরু খামারিরা। হালে লকডাউনে বেশি খরচে উৎপাদিত দুধ ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পেরে আরও বিপাকে পড়েছেন খামার মালিকরা। সংরক্ষণের অভাবেও নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার লিটার দুধ। এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দুগ্ধ উৎপাদনে প্রসিদ্ধ ও দেশের গো-চারণভূমি হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জের সমবায় ভিত্তিক গরুর খামারীরা।এই ক্রান্তিলগ্নে গো-খাদ্যের দাম কমানো, দুধের ন্যায্য দামের ব্যবস্থা করাসহ সরকারী প্রণোদনার দাবী করেছেন খামারীসহ জনপ্রতিনিধিরা।
বাঘাবাড়ীতে সমবায় ভিত্তিক রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত করণ কারাখানা গড়ে ওঠার পর অঞ্চলটিতে হাজার হাজার গরুর খামার গড়ে ওঠে। আর এসব খামার থেকে মিল্কভিটা প্রতিদিন ২ লাখ ২৫ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করতো। বর্তমানে জেলায় ১৫ হাজার ৩৮০টি গো-খামারের প্রায় সাড়ে ১০ লাখ গবাদিপশু থেকে প্রতিদিন ২০ লাখ ৫০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। খামারিরা বলছেন, গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে ক্রমাগত বেড়েছে গো-খাদ্যের দাম। সেই তুলনায় বাড়েনি দুধের দাম। এ ছাড়া ভেজাল খাদ্যে বাজার সয়লাব হওয়ায় বেড়েছে গবাদি পশুর অসুখ। চলমান লকডাউনের কারণে আবার মিলছেনা সঠিক ঔষধ ও ভ্যাকসিনও। তাই নানা সংকটে চিন্তায় পড়েছেন খামারীরা।
জেলায় প্রতিদিন উৎপাদিত ২০ লাখ ৫০ হাজার লিটার দুধের মধ্যে প্রতিদিন মিল্কভিটা নেয় ২ লাখ ২৫ হাজার লিটার, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নেয় সাড়ে ৩ লাখ লিটার দুধ। অবশিষ্ট দুধ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হোটেল ও মিষ্টির দোকনে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু চলমান লকডাউনে মিল্কভিটা ও অন্যন্য কোম্পানী দুধ কেনা কমিয়ে দেয়। আর দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায়, স্থানীয়ভাবে নাম মাত্র মূল্যে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে গত বছরে যে লোকসান হয়েছে এ বছরে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খামারীদের পথে বসতে হবে। তাই এই ক্রান্তিকালে গো-খাদ্যের দাম কমানো, দুধের ন্যায্য দামের ব্যবস্থা করাসহ সরকারের প্রণোদনার দাবী করেছেন খামারী, জনপ্রতিনিধিসহ এর সাথে সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে উৎপাদিত দুধ মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন কোম্পানীকে দেয়ার পর অবশিষ্ট দুধ বাজারে বিক্রির জন্য ভ্রাম্যমাণ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সঠিক সময়ে ঔষধ ও ভ্যাকসিন প্রদানও অব্যহত রয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের প্রণোদনার ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান, প্রাণী সম্পদের কর্মকর্তা ডা. মোর্শেদ উদ্দীন আহম্মদ।
দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা ঠিক রাখতে দেশের সিংহভাগ দুধের চাহিদা মেটানো দুগ্ধ উৎপাদনের জেলা সিরাজগঞ্জের গো-খামারীদের প্রতি সু-দৃষ্টি রাখবে সরকার এমনটাই দাবী সংশ্লিষ্টদের।