উত্তরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে
- আপডেট সময় : ১২:০৭:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
- / ১৫১১ বার পড়া হয়েছে
উত্তরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই উজানের ঢলে যমুনার পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী ও জামালপুরের দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন।
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩৩ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি এখনো বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। এছাড়া জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ২ শতাধিক চরাঞ্চলসহ নদীর অববাহিকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছে।
ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নামা পাহাড়ী ঢলের কারণে ডিমলা উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব অঞ্চলের সবজি ক্ষেত, বাদাম ও ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের কিছু মানুষ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ডালিয়া বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ভারত তার গজলডোবা ব্যারেজ পুরোপুরি খুলে দেয়ায় ক’দিন ধরে তিস্তার পানি ওঠানামা করলেও আজ সকাল থেকে তিস্তার পানি আবার বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপরে উঠেছে। এদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আরো ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকালে বিপদসীমার মাত্র ২৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নিম্নাঞ্চলসহ গ্রাম-জনপদ প্লাবিত হচ্ছে।
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ৷ এতে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের ফলে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীসার ১৫ সেন্টিমিটার উপরে এবং সেতু পয়েণ্টে ধরলার পানি বিপদসীমাদিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানির চাপ বাড়ছে নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলোতে। ফলে জেলার আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর অবস্থায় রয়েছে।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকালে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার রাস্তাঘাট ও ক্ষেতের ফলস তলিয়ে গেছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র সাড়ে ৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। তবে প্রতি ঘণ্টায়ই বাড়ছে পানি।