উচ্চ-আদালতের রায়ের পরও ঘাটে ঘাটে ম্যানেজ করে অবৈধ সংযোগ অব্যাহত রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছে জিপিএইচ ইস্পাত
- আপডেট সময় : ০২:১৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২০
- / ১৫১৩ বার পড়া হয়েছে
সম্পুর্ণ নিয়ম নীতি লঙ্ঘণ করে সাধারণ মানুষের বিপুল পরিমান ফসলি, পাহাড়ী ও বনভুমীর ওপর দিয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার ভোল্টের ডেটিকেটেড বিদ্যুৎ লাইন টেনেছে জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বিষয়টি অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে রায় দিয়েছে উচ্চ-আদালত। তারপরও ঘাটে ঘাটে ম্যানেজ করে অবৈধ সংযোগ অব্যাহত রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বিদেশী ফাণ্ডে নির্মিত ইস্পাত তৈরী কারখানাটির কর্তৃপক্ষ। ভুক্তোভোগীরা এসএ টিভিকে অভিযোগে বলেন নিজেদের স্ক্র্যাপ ইয়ার্ডের নিরাপত্ত্বা বাড়াতে অবৈধভাবে অন্যের জমির ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন টেনেছে জিপিএইচ। পিজিসিবি বলছে, আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলেই ব্যবস্থা নেবেন তারা। বিষয়টি বিচারাধীন উল্লেখ করে এ ব্যপারে কথা বলতে রাজি হননি জিপিএইচ কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন দেশের সবচেয়ে বড় ইস্পাত তৈরীর কারখানা জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড। কিন্তু অত্যাধুনিক এসব প্রযুক্তির আড়ালে অবৈধ তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে কোম্পানীটির বিরুদ্ধে।
বড় এই শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে রেলপথের পাশ দিয়ে টানানো হয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার ভোল্টের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ লাইন। এই লাইনের পাশেই রয়েছে জিপিএইচের স্ক্র্যাপ ইয়ার্ড। ঝুঁকি এড়াতে দু’বছর আগে সম্পুর্ণ অবৈধভাবে ইয়ার্ডের পেছন দিয়ে জিকজ্যাক পদ্ধতিতে বিকল্প বিদ্যুৎ লাইন টানানোর উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তখন সাধারণ মানুষের বিপুল পরিমান বনাঞ্চল ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্হ হয়। উপায়ন্তর না পেয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হন ভুক্তোভোগীরা। প্রায় দু’বছর আইনী লড়াই চলার পর পুরো প্রক্রিয়াটিই নিয়ম বহির্ভুত হিসেবে ঘোষণা করে আদালত।
জাতীয় গ্রীড থেকে এই বিদ্যুৎ লাইন সরবরাহ করেছে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী বাংলাদেশ বা পিজিসিবি। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়ার অধিকার দেশের সাধারণ মানুষের। সেখানে জাতীয় গ্রীড থেকে সরাসরি কোন কোম্পানীকে এই সুযোগ দেয়া নিয়ম বহির্ভুত। এতে লঙ্ঘিত হয়েছে বিদ্যুৎ আইন ২০১৮। যদিও পিজিসিবির দাবি আদালতের রায়ের কপি এখনো পাননি তারা।
এসএ টিভির অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনই নয়। যে বিপুল পরিমান সম্পত্তি নিজেদের বলে দাবি করে বিশ্বব্যংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে সেক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখলের অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে আপিল করা হয়েছে জানিয়ে বিচারাধিন বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
বিদেশী সোর্স থেকে নেয়া ঋণের টাকায় গড়ে ওঠা বড় একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংস ও জমি দখলের মতো এমন অভিযোগ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বিদেশে দেশীয় ভাবমুর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।