টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে, ১২২ বছরের রেকর্ড ভাঙা বন্যার কবলে সুনামগঞ্জ জেলা। শতভাগ বাড়িঘরে পানিতে আটকে আছে লাখো মানুষ। ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। মৌলভীবাজারে সব নদ-নদীর পানি বেড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বড়লেখায় পাহাড় ধসে একজন মারা গেছে। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ওঠায়, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
১২২ বছরের বন্যার ইতিহাস ভেঙ্গে সুনামগঞ্জে মহাপ্লাবনের কবলে জেলার ২৫ লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জের শতভাগ বাড়ি ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করে চরম দর্ভোগে শহর, বন্দর, গ্রামের মানুষ। সর্স্বস্য হারিয়ে দিশেহারা বন্যার্তরা। বেশীরভাগ মানুষ খোলা আকাশের নীচে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারী সাহায্য খুবই কম। সেনাবাহীনির সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালালেও, অন্য সংস্থা তেমন তৎপর নয়। দ্রুত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থার দাবী বানবাসীদের।
বন্যার্তদের উদ্ধার করাসহ সব ধরনের সহযোগীতার কথা জানান জেলা প্রশাসক।
ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। নতুন নতুন আশ্রয়কেন্দ্র খুলছে জেলা প্রশাসন। সেখানে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হলেও পানিবন্দী মানুষের কাছে পৌঁছেনি কোন সরকারি সহায়তা। দুর্গতরা বলছেন, বাড়িতে পানি থাকায় খাবারের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছেন তারা।
হবিগঞ্জের ৪টি উপজেলা ৯৩ টি আশ্রয়ন কেন্দ্র বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
মৌলভীবাজারে সময় যত যাচ্ছে ততই ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। হাকালুকি,কাউয়াদিঘি ও হাইল হাওর ছাড়াও জেলার মনু, ধলাই,ফানাই,কন্টিনালা, জুড়ী ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বড়লেখায় পাহাড় ধ্বসে ১ জন নিহত ও ১জন আহত হয়েছে। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান পানিতে ডুবে গেছে। জুড়ী উপজেলা কম্পপ্লেক্সে কোমর পানি থাকায় কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ।
জেলা প্রসাশক জানান, ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৫ হাজারের বেশি বানভাসি আশ্রয় নিয়েছেন। ১০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। ৬০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলায় ২শ১০ মেট্রিক চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।