নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়, ওষুধ সরবরাহসহ ১১টি খাতে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে দীর্ঘদিন ধরে। আর এতে গচ্চা যাচ্ছে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি-অনিয়ম করেও স্বাস্থ্যসেবা খাতের গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিভিন্ন সময় অধিদফতরের কিছু কেরানী, ড্রাইভার আর ছোটখাটো দুর্নীতিবাজরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা থেকে যাচ্ছে আড়ালেই।
গত এক বছরের হিসেব বলছে, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যে পরিমাণ এক্স-রে ফিল্ম ও ইনজেকশন সিরিঞ্জ থাকার কথা, তা থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার চিকিৎসা সামগ্রীর হিসেব মিলছে না। ২২ লাখ টাকার ডেঙ্গু এনএসআই ডিভাইসেরও হদিস নেই। অন্যদিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস, ট্যাবলেট ও ইনজেকশন সিরিঞ্জ না পেয়েই-পরিশোধ করা হয়েছে ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার বিল। ২০২০ সালের ৩০ মে ৫ হাজার ২৭৭টি ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস সরবরাহের কাজ দেয়া হয় মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডকে। কোম্পানিটি সরবরাহ করেছে মাত্র ১শ’টি ডিভাইস, অথচ বিল দেয়া হয়েছে শতভাগ।
কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল ১১ লাখ টাকার ট্যাবলেট ও ইনজেকশন সিরিঞ্জ কেনার দুটি কার্যাদেশ দেয় ক্লিয়ার এজ টেকনোলজি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওয়ার্ক অডার অনুযায়ী চিকিৎসা সামগ্রী না পেলেও সব বিল পরিশোধ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ১৩ এপ্রিল প্রথম দফায় ৩০ জনের পরিবর্তে ৬০ জনের নামে সাড়ে চার হাজার টাকা করে থাকা-খাওয়ার বিল দেয়া হয়। এতে সরকারের ৮০ লাখ টাকা বাড়তি ব্যয় হয়।
বেশি দামে চিকিৎসা সামগ্রী কিনে সরকারের ১ কোটি ৫১ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
তবে সিএমএসডি পরিচালকের দাবি, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি কেনাকাটা, ব্যবহার ও সংস্কারে বর্তমানে কোনো দুর্নীতি-অনিয়ম নেই ।
হাসপাতাল অনিয়ম রোধে ক্রয়নীতি যথযথ অনুসরণ করার দাবি সব মহলের।