শরণার্থী আসা বাড়ায় জার্মানিতে আশ্রয়ের অধিকার নিয়ে বিতর্ক
- আপডেট সময় : ১২:০০:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩
- / ১৭২৫ বার পড়া হয়েছে
বিরোধী দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী পার্টি সিডিইউর শীর্ষস্থানীয় নেতা ইয়েন্স স্পান সম্প্রতি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত আশ্রয়-অভিবাসন থেকে জার্মানির বিরতি দরকার৷” তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধ বা সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের ইন্টিগ্রেট করতে সময় ও সম্পদ লাগে৷ সেটা ভালোভাবে করা তখনই সম্ভব যদি অতিরিক্ত আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যায়৷”
জাতিসংঘের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শরণার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে৷ জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে৷ এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এক লাখে ৭৫ হাজার ২৭২ জন জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷ গতবছরের একই সময়ের তুলনায়এই সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ বেশি৷ সিরিয়া, আফগানিস্তান ও তুরস্কের মানুষেরা বেশিরভাগ আবেদন করেছেন৷ ২০২২ সালের তুলনায় এ বছর তুর্কিদের আবেদন প্রায় তিন গুণ বেড়েছে৷
বর্তমান জোট সরকারের নেতৃত্ব দেয়া দল সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি পার্টির সাবেক প্রধান সিগমার গাব্রিয়েল জার্মানির আরএনডি মিডিয়া গোষ্ঠীকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আশ্রয়ের অধিকার বাতিলের পক্ষে মন্তব্য করেছেন৷
এদিকে, জার্মানির অভিবাসনবিরোধী দল এএফডি ২০১৫ সাল থেকেই আশ্রয়ের অধিকার বাতিলের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আসছে৷ সাম্প্রতিক সময়ে এই দলের প্রতি সমর্থন বেড়েছে৷ সবশেষ জরিপ অনুযায়ী, জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এখন এএফডি৷
সংবিধানে আশ্রয়ের অধিকার
জার্মানি বিশ্বের কয়েকটি দেশের একটি যার সংবিধানে এমন অধিকারের কথা বলা আছে৷ ১৬এ ধারা বলছে, ‘‘রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত ব্যক্তিদের আশ্রয়ের অধিকার রয়েছে৷”
তবে ১৯৯৩ সালে এই ধারা সংশোধন করা হয়৷ সংশোধিত এই ধারা বলছে, একজন মানুষ তখনই জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করতে পারবেন যদি তিনি তথাকথিত নিরাপদ তৃতীয় দেশের মাধ্যমে না আসেন৷
গত জুলাইতে সিডিইউর সাংসদ টর্স্টেন ফ্রাই একজন ব্যক্তির আশ্রয়ের অধিকার বাতিলের পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ এর পরিবর্তে তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবছর তিন থেকে চার লাখ শরণার্থী ঠিক করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেছিলেন৷
তবে জার্মানির বর্তমান জোট সরকার এই অধিকার বাতিল সমর্থন করবে বলে মনে হয় না৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজা বুধবার স্পিগেল ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘‘আমি একজন ব্যক্তির আশ্রয়ের অধিকার বাতিলের একেবারে বিপক্ষে৷”
‘‘অভিবাসন সীমিত করার জন্য মানবাধিকার স্থগিত করা” একটি ‘সমাধান’ হতে পারে না বলে ভেল্ট সংবাদপত্রকে বলেছেন জোটসঙ্গী সবুজ দলের অভ্যন্তরীণ নীতি বিষয়ক মুখপাত্র লামিয়া কাদ্দোর৷
তবে জার্মান সরকার নতুন শরণার্থী আসার সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে৷ সেজন্য তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় আইন সংস্কারের পক্ষে চেষ্টা চালাচ্ছে৷
জার্মানি চাইছে, যাদের আশ্রয় আবেদন অনুমোদন পাওয়ার সুযোগ কম তাদেরকে যেন ইইউ সীমান্তের বাইরে থেকেই পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব হয়৷ তাহলে জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী আসার সংখ্যা কমবে৷