০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রায়হান হত্যার অগ্রভাগে থাকা এসআই আকবরকে খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৫১৬ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শাহিন আবদুল বারী: সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান হত্যার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। অগ্রভাগে থাকা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ারও হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। এছাড়াও বরখাস্ত ও প্রত্যাহার হওয়া দুই এএসআই ও চার কনস্টেবল পুলিশ পাহারায় সিলেট পুলিশ লাইন্সে রয়েছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য এরইমধ্যে কাষ্টঘর এলাকার সুইপার কলোনির সুলাই লালসহ দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

এখন একটাই প্রশ্ন, আকবর হোসেন ভূঁইয়া কোথায়? লাপাত্তা এই পুলিশ অফিসারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনার পর থেকেই আকবর পলাতক রয়েছে। পুলিশ সব বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান জানান, তদন্তকালে যাদের না পাওয়া যাবে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মামলাটি স্পর্শকাতর তাই পিবিআই’র তদন্ত দল নানা বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে।

রায়হান হত্যার ঘটনার পর থেকে পুলিশ লাইন্সে অভিযুক্ত ৬ পুলিশের পাহারায় রয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, হত্যা মামলাটির পুরো বিষয় তদন্ত করছে পিবিআই। আর তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। পুলিশ আকবরকে খুঁচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এছাড়া সীমান্ত পথে এসআই আকবর যেন দেশ ছাড়তে না পারে, সেজন্য পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে।

নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, আমার ছেলের হত্যাকারী এসআই আকবরকে পুলিশ পালাতে বলেছে। এখনো আকবরসহ খুনি পুলিশ সদস্যদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমি কিছুই চাই না, আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।

সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত আকবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এরপরই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান তিনি। আকবর তার নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট এবং সরকারি সেট দুটোই ফাঁড়িতে রেখে গায়েব হয়ে যান। গা ঢাকা দিয়ে কোথায় আছেন, সেই হদিস কেউ দিতে পারছেন না। তার আগে সে খুনের সব আলামত নষ্ট করে দেয়।

এদিকে, ঘটনার পরপরই কেন রায়হানকে আটকে রাখা হলো না, সে প্রশ্ন এখন সবার। তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলার পর রায়হানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল সিলেট মহানগর এলাকা ছেড়ে সে যেন বাইরে বের না হয়। এরপরও ঘটনার পর বন্দরবাজার সিসিটিভি ফুটেজ মুছে এবং আলামত গায়েব করে পালায় এসআই আকবর।

প্রসঙ্গত: রায়হান উদ্দিন নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে আটক করে। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকাল ১০টা দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও উপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রায়হান হত্যার অগ্রভাগে থাকা এসআই আকবরকে খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০

শাহিন আবদুল বারী: সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান হত্যার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। অগ্রভাগে থাকা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ারও হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। এছাড়াও বরখাস্ত ও প্রত্যাহার হওয়া দুই এএসআই ও চার কনস্টেবল পুলিশ পাহারায় সিলেট পুলিশ লাইন্সে রয়েছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য এরইমধ্যে কাষ্টঘর এলাকার সুইপার কলোনির সুলাই লালসহ দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

এখন একটাই প্রশ্ন, আকবর হোসেন ভূঁইয়া কোথায়? লাপাত্তা এই পুলিশ অফিসারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনার পর থেকেই আকবর পলাতক রয়েছে। পুলিশ সব বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান জানান, তদন্তকালে যাদের না পাওয়া যাবে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মামলাটি স্পর্শকাতর তাই পিবিআই’র তদন্ত দল নানা বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে।

রায়হান হত্যার ঘটনার পর থেকে পুলিশ লাইন্সে অভিযুক্ত ৬ পুলিশের পাহারায় রয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, হত্যা মামলাটির পুরো বিষয় তদন্ত করছে পিবিআই। আর তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। পুলিশ আকবরকে খুঁচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এছাড়া সীমান্ত পথে এসআই আকবর যেন দেশ ছাড়তে না পারে, সেজন্য পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে।

নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, আমার ছেলের হত্যাকারী এসআই আকবরকে পুলিশ পালাতে বলেছে। এখনো আকবরসহ খুনি পুলিশ সদস্যদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমি কিছুই চাই না, আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।

সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত আকবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এরপরই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান তিনি। আকবর তার নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট এবং সরকারি সেট দুটোই ফাঁড়িতে রেখে গায়েব হয়ে যান। গা ঢাকা দিয়ে কোথায় আছেন, সেই হদিস কেউ দিতে পারছেন না। তার আগে সে খুনের সব আলামত নষ্ট করে দেয়।

এদিকে, ঘটনার পরপরই কেন রায়হানকে আটকে রাখা হলো না, সে প্রশ্ন এখন সবার। তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলার পর রায়হানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল সিলেট মহানগর এলাকা ছেড়ে সে যেন বাইরে বের না হয়। এরপরও ঘটনার পর বন্দরবাজার সিসিটিভি ফুটেজ মুছে এবং আলামত গায়েব করে পালায় এসআই আকবর।

প্রসঙ্গত: রায়হান উদ্দিন নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে আটক করে। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকাল ১০টা দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও উপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।