ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হয়েছে বিএসএফের টহল সীমানা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিষয়ে দেড় ঘণ্টার আলোচনার পর ভোটাভুটির জন্য ডিভিশন চান বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই ডিভিশন মেনে ভোটাভুটি হলে শাসক দলের পক্ষে ভোট দেন ১১২ জন বিধায়ক। আর বিরোধী দলের পক্ষে ভোট পড়ে ৬৩। ফলে পাশ হয়ে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আনা বিএসএফের সীমান্ত বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবটি।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে টহল, তল্লাশি, সন্দেহজনক পণ্য বাজেয়াপ্ত, চোরাকারবারিদের অনুপ্রবেশ ও অনুপ্রবেশকারীদের ধরপাকড় করার অধিকার রয়েছে বিএসএফের জওয়ানদের
কিন্তু বিএসএফের নজরদারির পরিধি ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের সরকার। এ বছরের ১১ অক্টোবর এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনা দেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গেলো ১২ নভেম্বর কলকাতা সফরে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভাল্লা।এক বৈঠকে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, চেকপোস্ট ও আউটপোস্ট নির্মাণ ও সীমান্তের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ভূমি সচিবের সঙ্গে। বাংলাদেশ ও ভুটান সীমান্তে নতুন করে ৭টি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট গড়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সীমান্তের আরও ২৯৮ কিলোমিটার এলাকায় বসছে কাঁটাতারের বেড়া।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশনার পর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মখ্যুমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপূজার পরে দেয়া সেই চিঠিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সেসময় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মমতা বলেন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে প্রভাব পড়বে।
শুধু সীমান্তবর্তী দেশ নয় নিজেদের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে বলেও নারাজ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজনৈতিক কারণে নেয়া এ সিদ্ধান্ত সঠিক নয় বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার বিধানসভায় বিরোধী প্রস্তাব উঠছে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার কথা রয়েছে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বর্ধিতকরণের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি পাঞ্জাব সরকারও। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব রাজ্যের বিধানসভায় প্রথম প্রস্তাব পাশ হয়।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সোচ্চার অনেক মানবাধিকার সংগঠনসহ রাজ্যের বিধায়করাও।