কমিটি গঠন নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে হেফাজতে ইসলাম
- আপডেট সময় : ০২:০১:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০
- / ১৫৪০ বার পড়া হয়েছে
প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর কমিটি গঠন নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক ধর্মীয় সংগঠন- হেফাজতে ইসলাম। নতুন কমিটিতে জায়গা না পেয়ে নতুন নেতৃত্ব না মানার ঘোষণা দিয়ে পাল্টা কমিটি গঠনের হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির পদ বঞ্চিতরা। তবে নতুন কমিটির নেতাদের দাবি- জনবিচ্ছিন্ন কয়েকজন ব্যক্তি বের হয়ে গেলে এতটুকু ক্ষতি হবে না হেফাজতের। আর রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, মুলত কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠনটি পরিচালিত হয় হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকেই। তাই ওই মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে থাকবে, তারাই মূল ধারা হিসেবে পরিচিতি পাবে।
২০১০ সালে সরকারের নারী-নীতির বিরোধিতা করে জন্ম নেয় হেফাজতে ইসলাম। আর ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে সারাদেশে আলোচনায় উঠে আসে সংগঠনটি। দলের প্রতিষ্ঠাতা আমীর- আল্লামা শাহ আহমদ শফির ছেলে আনাস মাদানীর সঙ্গে প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরোধে শেষ পর্যন্ত দু’ভাগে বিভক্ত হলো কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক এই ধর্মীয় সংগঠনটি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর, মৃত্যুর একদিন আগে, ছাত্রবিক্ষোভে হাটহাজারি মাদ্রাসার ওপর থেকে আল্লামা শফির নিয়ন্ত্রণ হারানোর মধ্য দিয়ে আলোচিত ইসলামী সংগঠন- হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে যে ফাটল তৈরি হয়েছিলো তা স্পষ্ট রূপ নিলো রোববারের কাউন্সিলকে ঘিরে। এই কাউন্সিলে জুনায়েদ বাবুনগরী নতুন আমীর নির্বাচিত হলেও কমিটিতে ঠাঁই পাননি আল্লামা শাহ আহমদ শফির ছেলে আনাস মাদানীসহ সংগঠনটির অন্তত একডজন প্রভাবশালী নেতা। তারা এ নতুন কমিটিকে অবৈধ ও জামায়াতের দোসর উল্লেখ করে পাল্টা কমিটি গঠনের হুমকি দিয়েছেন।
নতুন কমিটির নেতাদের দাবি, গঠনতন্ত্র আর গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি মেনেই অনুষ্ঠিত হয়েছে কাউন্সিল। যেখানে নেতৃত্বের বিস্তৃতি ঘটেছে সারাদেশে। কিন্তু সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের জন্য নতুন কমিটিতে স্থান না পাওয়া হাতেগোনা কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি সাধারণ কর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, সমমনা বেশ কয়েকটি ইসলামী দলের অংশগ্রহণ থাকলেও হেফাজতে ইসলামের শক্তি মূলত কওমী মাদ্রাসাগুলোকে ঘিরেই। আর সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হচ্ছে হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাকে অনুসরণ করেই। তাই হাটহাজারীর নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারলে আলাদা কমিটি করে কোনো লাভ নেই।
এর আগে গত জুন মাসে হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে দেয়া হলেও মাদ্রাসাকে আঁকড়ে থেকেই তিন মাসের মাথায় ফের কর্তৃত্ব ফিরে পান তিনি। কিন্তু এখন শফিপন্থীরা মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত হয়ে অবস্থান করছেন ঢাকায়। ফলে তাদের পক্ষে মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়া সহজ নয় বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।