ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টাকারী কে এই থমাস ম্যাথিউ?
- আপডেট সময় : ০৮:১৬:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
- / ২০১৮ বার পড়া হয়েছে
শনিবার নির্বাচনী প্রচারে পেনসেলভেনিয়ার বাটলার শহরে গিয়েছিলেন আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচার চলাকালীনই ট্রাম্পের উপর হামলা সংঘটিত হলো। জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। বক্তব্য শুরুর কিছু সময় পরেই তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। সেখান থেকেই তিনি ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালান যা ট্রাম্পের কান ফুটো করে বেরিয়ে যায়। তাঁর নিরাপত্তায় থাকা সিক্রেট এজেন্টরা তাকে মানব বর্ম তৈরি করে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যান। অল্পেল জন্য প্রাণে বেঁচে যান ট্রাম্প। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ও সমাবেশে উপস্থিত একজন ট্রাম্প সমর্থক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর সেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ঘটনাস্থলে সিক্রেট সার্ভিসের পালটা গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ট্রাম্পের হামলাকারীর। আস্তে আস্তে সামনে আসতে শুরু করেছে এই ভয়ংকর এই হামলাকারীর পরিচয়। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম থমাস ম্যাথু ক্রকস। বছর কুড়ির থমাসের বাড়ি বিথেল পার্কে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রথম গুলি চলার পর আরও দুটি গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘটনার ২ মিনিটের মধ্যে ট্রাম্পকে গাড়িতে তোলেন সিক্রেট সার্ভিসের অফিসাররা।
জানা গেছে, একটি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টের ছাদে ছিলেন থমাস। ট্রাম্পের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে যার দূরত্ব ১৩০ গজ। ওই ১৩০ গজ দূর থেকেই গুলি চালান থমাস। কিন্তু, কেন ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন বছর কুড়ির ওই যুবক? কী তার অতীত জীবন, কোন পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, তার মনস্তত্বই বা কী। এছাড়া কি এমন শক্তিশালী নেটওয়ার্কের সঙ্গে তিনি যুক্ত, যার কারণে এমন কড়া নিরাপত্তা ভেদ করে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর হামলা চালাতে পারলেন তিনি। সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ভোটার রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড বলছে, থমাস নিজেও রিপাবলিকান সমর্থক। যে দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প। পেনসেলভিয়ার বিথেল পার্কে বাড়ি। বিথেল পার্ক হাইস্কুল থেকে ২০২২ সালে গ্র্যাজুয়েট হন বছর কুড়ির থমাস। ওই বছর জাতীয় অঙ্ক ও বিজ্ঞান উদ্যোগের স্টার অ্যাওয়ার্ড পান থমাস। ৫০০ ডলার আর্থিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের ওপর সহিংস এই হামলার ঘটনার নানা খুঁটি নাটি বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার পরেই প্রশ্ন ওঠে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই। তবে কেন এই হামলা, তাকে অন্য কেউ গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। গুলি করার সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে শ্যুটারকে মেরে ফেললেন নিরাপত্তারক্ষীরা, সেটা নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই বলছেন, দেখে যেন মনে হচ্ছে, শ্যুটারের দিকে আগে থেকেই নজর ছিল স্নাইপারের। তাহলে কেন তাঁরা আগেই অ্যাকশন নিলেন না। এই নিয়ে সন্দিহান অনেকে।
এদিকে ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। নির্বাচনী সমাবেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পর ডেলাওয়্যারের রেহোবোথ বিচে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। জো বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্পের র্যালি শান্তিপূর্ণ এবং কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া হওয়া উচিত।
৪৩ বছর পর কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটল। এর আগে ১৯৮১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগ্যানের উপর হামলা হয়েছিল। গুলিতে জখম হয়েছিলেন রেগন। এবার প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের উপর এমন নিন্দনীয় হামলার ঘটনা ঘটলো।