টাইটান: কার্যক্রম স্থগিত ওশানগেটের
- আপডেট সময় : ০৫:৩৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩
- / ১৬৬১ বার পড়া হয়েছে
টাইটানিক পর্যটন কোম্পানি ওশানগেট অনির্দিষ্টকালের জন্য নিজেদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। মর্মান্তিক ‘টাইটান’ দুর্ঘটনার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হল।
ওশেনগেট টাইটান ডুবোযানের একটি অপারেটর। ১৮ জুন উত্তর আটলান্টিকে নিখোঁজ হওয়ার পরে এটির বিস্ফোরণ ঘটে। বৃহস্পতিবার তারা ঘোষণা করেছে, “সমস্ত অনুসন্ধান এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।”
‘টাইটানিক’-র ভগ্নাবেশষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকের গভীরে বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যায় ডুবোযান ‘টাইটান’। ওয়াশিংটনের কোম্পানি ওশানগেট পর্যটন, অন্বেষণ, শিল্প এবং গবেষণার জন্য ক্রুসমেত ডুবো জাহাজ সরবরাহ করে।
ধ্বংসাবশেষ কোথায় পাওয়া গেছে?
উত্তর আটলান্টিকে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপের এক হাজার ৬০০ মিটার দূরে সমুদ্রের ১২ হাজার ৫০০ ফুট নীচে এই ধ্বংসাবশেষ মেলে। প্রথমে রোবটচালিত যান এই ধ্বংসাবশেষের হদিশ দেয়। তারপর উদ্ধারকারী দল তা উদ্ধার করে।
নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের উপকূল থেকে প্রায় ৪০০ মাইল (৬৪৪ কিলোমিটার) দূরে জাহাজের ভগ্নাবশেষ মেলে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ডুবোযানের ল্যান্ডিং ফ্রেম এবং পেছনের অংশ ছিলো।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কোম্পানির সিইও স্টকটন রাশও ছিলেন। ধারণা করা হয়, পানির প্রচণ্ড চাপের কারণে অন্তর্মুখী বিস্ফোরণের শিকার হয় টাইটান।
ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মানুষের দেহাবশেষ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। মার্কিন ও ক্যানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে।
ওশেনগেটের সিইও নিরাপত্তা সম্পর্কে যা বলেছিলেন
সিইও স্টকটন রাশ ১৯৯৩ সালের প্যাসেঞ্জার ভেসেল সেফটি অ্যাক্টের মতো আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। তার মত ছিলো, “অযথাই বাণিজ্যিক উদ্ভাবনের চেয়ে যাত্রী নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল।”
২০২২ সালে, রাশ সিবিএস নিউজকে বলেছিলেন, “আমি মনে করি নিয়ম ভেঙেও নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব।”
২০০৭ সালের দিকে ‘আন্ডারওয়াটার এক্সপ্লোরেশন’-এর বাজার বোঝার চেষ্টা করেছিলেন রাশ। তিনি এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তৎকালীন ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়েরমো স্যোওনলাইনের সঙ্গে ২০০৯ সালে ওশানগেট প্রতিষ্ঠা করেন৷
টাইটানিক কখন ডুবেছিল?
উত্তর আটলান্টিকের হিমশীতল জলে ১৯১২ সালে প্রথম সমুদ্রযাত্রার সময় টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল। এই ঘটনায় জাহাজের দুই হাজার ২২৪ যাত্রীর মধ্যে দেড় হাজার জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
১৯৮৫ সালে এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়। হলিউডের পরিচালক জেমস ক্যামেরনের সিনেমার কারণে এই ঘটনাটি আরো জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।
ওশানগেট অভিযান এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে দাবি করে এটি ২০২৩ সালের মধ্যে ১৩ টি সফল অভিযান করেছে। ডুবোজাহাজে একটি আসনের জন্য ধনী পর্যটকদের আড়াই লাখ ডলার দিতে হয়েছিলো।
টাইটান বিস্ফোরণের সময় আরোহী ছিলেন, বিলিয়নেয়ার ব্রিটিশ এক্সপ্লোরার হামিশ হার্ডিং, বিলিয়নেয়ার ফরাসি সাবমেরিন বিশেষজ্ঞ পল-হেনরি নার্জেওলেট এবং পাকিস্তানি-ব্রিটিশ মাল্টি-মিলিয়নেয়ার টাইকুন শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান।
ওশানগেট জুন মাসে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য দুটি অভিযান পরিকল্পনা করেছিল। টাইটান দুর্ঘটনার পর, গভীর সমুদ্রের পর্যটনে রাশ টানার কথা বলা হয়েছে।
ডয়চে ভেলে