জার্মানিতে এই মুহূর্তে শরণার্থী অনেক বেশি: ওলাফ শলৎস
- আপডেট সময় : ১২:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩
- / ১৭৫৪ বার পড়া হয়েছে
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বার্লিন কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অনিয়মিত অভিবাসন আটকাতে চায়।
জার্মানিতে অভিবাসন নীতি নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে ৷ সম্প্রতি পোল্যান্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা দেয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভিসার বিনিময়ে কর্মকর্তাদের ঘুষ নেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু ওয়ারশ থেকে আসা ব্যাখ্যায় ইইউ সন্তুষ্ট নয়। এরপরই জার্মান ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক রেডাকসিওননেটভের্ক ডয়েচলান্ডে শলৎসের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
চ্যান্সেলর বলেন, “এই মুহূর্তে জার্মানিতে আসতে চাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।” তিনি আরো বলেন, ৭০% এরও বেশি শরণার্থীর আগে কোনো নিবন্ধন হয়নি। তারা প্রায় সবাই অন্য ইইউয়ের অন্যান্য দেশে ছিল।”
শলৎস কী করতে চান?
চ্যান্সেলর জার্মানির সব রাজ্যজুড়ে “পৌরসভাগুলির জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা” শুরু করতে চান।
তিনি বলে, নভেম্বরে জার্মান রাজ্যগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা আছে। তখন তিনি “ফ্লেক্সিবল ক্যাপ” নিয়ে আলোচনা করবেন। যাতে শরণার্থীদের আশ্রয়-সংখ্যার ভিত্তিতে রাজ্যগুলোকে অর্থায়নের প্রস্তাব দেয়া যায়।
তার কথায়, বার্লিন ওয়ারশকে নিশ্চিত করতে বলেছে, শরণার্থীদের কাছে সহজে জার্মানি আসার ভিসা যেন বিক্রি করা না হয়।
জার্মানির ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে বেশ কিছু এবং কখনও কখনও প্রকাশ্যেও বিরোধ দেখা গিয়েছে। তারপরেও শলৎস বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নেঅনিয়মিত অভিবাসন বন্ধ করার বিষয়ে এই সরকার সম্পূর্ণ চুক্তিবদ্ধ।” তার কথায়, “এটি শুধুমাত্র সংহতির মাধ্যমে করা যেতে পারে। জার্মানি সাহায্য করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।”
কেন জার্মানির এজেন্ডায় অভিবাসন বেশি?
বার্লিন সম্প্রতি প্রতিবেশী পোল্যান্ড এবং চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে সীমান্ত নজরদারির ঘোষণা করেছে। চলতি বছরে আশ্রয় আবেদন প্রায় ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনটি দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে শেঙ্গেন সাধারণ ভিসা এলাকার অংশ, যেখানে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কঠোর নজরদারি ছাড়াই সীমান্ত পেরোতে পারেন।
ইতিমধ্যে, ইটালির ছোট্ট একটা দ্বীপ লাম্পেদুসায় হাজার হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আগমন অভিবাসন এবং আশ্রয় সংক্রান্ত একটি সংশোধিত চুক্তি নিয়ে কথা চলছে। এই পরিস্থিতিতে জার্মানি ঘোষণা করেছে ২৭টি-সদস্যের ব্লক জুড়ে অভিবাসী বণ্টনের লক্ষ্যে ইইউ-ব্যাপী অভিবাসন সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে তারা একমত। এই ইস্যুতে আপোস করতে প্রস্তুত।
শলৎসের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে। কারণ অতি-ডান, অভিবাসী বিরোধী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এদিকে তার দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি), তার জোটের অংশীদারদের ক্ষেত্রে উল্টোটাই হচ্ছে।
জার্মানির শরণার্থী পরিস্থিতি
২০২৩ সালে জার্মানিতে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার জন আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তবে এদের মধ্যে ইউক্রেনীয়রা নেই। জার্মানি ১০ লাখেরও বেশিইউক্রেনীয় শরণার্থীকেআশ্রয় দিয়েছে।
২০১৫ সালে, লক্ষাধিক সিরীয় তাদের গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে এসেছিল। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে “অভিবাসী সংকটের” সময় জার্মানিতে ১০ লাখ শরণার্থী এসেছিলেন।
এদিকে, জার্মান সরকার প্রায় ২০ লাখ শূন্যপদ পূরণের জন্য অভিবাসীদের আনতে চায়। জুন মাসে ‘স্কিলড ওয়ার্ক ইমিগ্রেশন ল’ আইনটি সংস্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন জার্মান আইনপ্রণেতারা।
ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ