০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

এনআরবিসি ব্যাংকের তমালসহ দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৯:২৪:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৬৭৫ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশের ব্যাংকিং খাতে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি, অরাজকতার পাশাপাশি অব্যবস্থাপনা ও দুঃশাসনের নজির স্থাপন করেছে এনআরবিসি। এ কারণে ব্যাংকের একক কর্তৃত্ববাদী চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও তার সকল অপকর্মের দোসর- এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামকে দায়ী করেছে ব্যাংকটির পরিচালকরা। আর বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এনআরবিসি ব্যাংকের অনিয়মের বিষয়টি তারা গুরুত্বের সাথে দেখছে।

২০২২ সালের মে-জুন মাসে এনআরবিসি ব্যাংকে পারভেজ তমাল চক্রের নানা অনিয়ম ও বহুমুখী দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক লুটপাটের অভিযোগের তদন্তে নেমে সত্যতা পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন। ১১ পাতার সেই বিশদ প্রতিবেদনে ব্যাংকটির বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালসহ পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অজানা রহস্যে তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে স্বৈরাচারের পতনের পর ন্যায়বিচারের আশায় ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের পক্ষ থেকে গত ১৮ অগাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, নিজের ব্যবসায়িক বন্ধু রাসেল আহমেদ লিটনের এসকেএস ফাউন্ডেশনের সাথে অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংয়ের নামে এনআরবিসি ব্যাংকের ১৩১টি উপশাখাকে এসকেএসের আওতায় পরিচালনার সুযোগ দিয়ে ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে শুধু অংশীদারিত্ব প্রজেক্টটি বাতিল করা হলেও তমালের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

এবার শুনুন তার সম্পদ বিবরণী। ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের দেয়া তথ্যমতে, গত ৮ বছরে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ব্যাংকের অর্থ লোপাট করে পাহাড় পরিমাণ সম্পদের মালিক বনেছেন এসএম পারভেজ তমাল।

গুলশানে এক বিঘা জমি- ১০০ কোটি টাকা
নিকুঞ্জে আলিশান বাড়ি- ৫০ কোটি টাকা
উত্তরায় ৮ তলা বাড়ি- ৩০ কোটি
ময়মনসিংহে ৩০ একর জমি- ৬৫০ কোটি
রংপুরে ৩ তলা বাড়িসহ ১২ বিঘা জমি-১৫ কোটি
বগুড়ায় ৪০ বিঘার মাছের প্রজেক্ট- ২০ কোটি
গাইবান্ধায় ৩শ’ বিঘা জমি-৩০ কোটি
বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি- ১০ কোটি
ফিনল্যান্ডে ব্যবসা- ১৫শ’ কোটি
দুবাইতে ব্যবসা ও বাড়ি-গাড়ি- ৯শ’ কোটি
সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থের মালিক হয়েছেন তমাল।

গুলশান-তেজগাঁও সংযোগ সড়কে তার নামে একবিঘা জমি। জায়গাটি এএন্ডপি নামে হলেও এটি মূলত ছাত্রলীগ দ্বারা তমাল দখল করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। জমির মূল মালিক এক সংখ্যালঘু পরিবার থেকে দখল করে নিজনামে সাইন বোর্ড টানান—-তারা মামলা করলে সেই সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলেন। এজন্য রাজউকে ৩১ লাখ টাকা দিয়ে গুলশান-তেজগাঁ সংযোগ সড়কে ডিভাইডারও নির্মাণ করেছেন তমাল।

এছাড়া রাজধানীর উত্তরায় ৮ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনের মালিকও পারভেজ তমাল, আবার রাজধানীর নিকুঞ্জে দুটি প্লট মিলে একটি বহুতল বাড়ি।

আছে বিলাস বহুল বেশ কয়েকটি গাড়ি। ব্যবহার করতেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কোটার শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়িও। যে গাড়িটিতে এমপি স্টিকার লাগিয়ে ভিআইপি সুবিধা নিয়ে চলাচলও করতেন তিনি।

তার এসব অপকর্ম, লুটপাট ও অপরাধের উত্থান ঘটে পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম কলাকুশলী শেখ পরিবারের বিভিন্ন সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ২ গভর্ণর, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন ও দুদকের উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায়।

তমালের অনিয়মে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে। পরিচয় প্রকাশে ভীত এই অভিযোগকারীরা জানান, তমালের বেশুমার অনিয়ম-দুর্নীতির কথা।

এ ব্যাপারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক, ব্যাংক-লুটকারী পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানান।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। জরুরি বিবেচনায় এনআরবিসি ব্যাংকের অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান-এমডির সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যাংকে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ব্যাংকের পিআরও সেকশনেও দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ফোনে যোগাযোগ করা হলে জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, পরিচালনা পরিষদের অনেকেই দেশের বাইরে আছেন। অন্য কেউ কথা বলবেন না।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এনআরবিসি ব্যাংকের তমালসহ দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

আপডেট সময় : ০৯:২৪:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

দেশের ব্যাংকিং খাতে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি, অরাজকতার পাশাপাশি অব্যবস্থাপনা ও দুঃশাসনের নজির স্থাপন করেছে এনআরবিসি। এ কারণে ব্যাংকের একক কর্তৃত্ববাদী চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও তার সকল অপকর্মের দোসর- এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামকে দায়ী করেছে ব্যাংকটির পরিচালকরা। আর বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এনআরবিসি ব্যাংকের অনিয়মের বিষয়টি তারা গুরুত্বের সাথে দেখছে।

২০২২ সালের মে-জুন মাসে এনআরবিসি ব্যাংকে পারভেজ তমাল চক্রের নানা অনিয়ম ও বহুমুখী দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক লুটপাটের অভিযোগের তদন্তে নেমে সত্যতা পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন। ১১ পাতার সেই বিশদ প্রতিবেদনে ব্যাংকটির বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালসহ পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অজানা রহস্যে তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে স্বৈরাচারের পতনের পর ন্যায়বিচারের আশায় ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের পক্ষ থেকে গত ১৮ অগাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, নিজের ব্যবসায়িক বন্ধু রাসেল আহমেদ লিটনের এসকেএস ফাউন্ডেশনের সাথে অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংয়ের নামে এনআরবিসি ব্যাংকের ১৩১টি উপশাখাকে এসকেএসের আওতায় পরিচালনার সুযোগ দিয়ে ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে শুধু অংশীদারিত্ব প্রজেক্টটি বাতিল করা হলেও তমালের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

এবার শুনুন তার সম্পদ বিবরণী। ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের দেয়া তথ্যমতে, গত ৮ বছরে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ব্যাংকের অর্থ লোপাট করে পাহাড় পরিমাণ সম্পদের মালিক বনেছেন এসএম পারভেজ তমাল।

গুলশানে এক বিঘা জমি- ১০০ কোটি টাকা
নিকুঞ্জে আলিশান বাড়ি- ৫০ কোটি টাকা
উত্তরায় ৮ তলা বাড়ি- ৩০ কোটি
ময়মনসিংহে ৩০ একর জমি- ৬৫০ কোটি
রংপুরে ৩ তলা বাড়িসহ ১২ বিঘা জমি-১৫ কোটি
বগুড়ায় ৪০ বিঘার মাছের প্রজেক্ট- ২০ কোটি
গাইবান্ধায় ৩শ’ বিঘা জমি-৩০ কোটি
বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি- ১০ কোটি
ফিনল্যান্ডে ব্যবসা- ১৫শ’ কোটি
দুবাইতে ব্যবসা ও বাড়ি-গাড়ি- ৯শ’ কোটি
সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থের মালিক হয়েছেন তমাল।

গুলশান-তেজগাঁও সংযোগ সড়কে তার নামে একবিঘা জমি। জায়গাটি এএন্ডপি নামে হলেও এটি মূলত ছাত্রলীগ দ্বারা তমাল দখল করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। জমির মূল মালিক এক সংখ্যালঘু পরিবার থেকে দখল করে নিজনামে সাইন বোর্ড টানান—-তারা মামলা করলে সেই সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলেন। এজন্য রাজউকে ৩১ লাখ টাকা দিয়ে গুলশান-তেজগাঁ সংযোগ সড়কে ডিভাইডারও নির্মাণ করেছেন তমাল।

এছাড়া রাজধানীর উত্তরায় ৮ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনের মালিকও পারভেজ তমাল, আবার রাজধানীর নিকুঞ্জে দুটি প্লট মিলে একটি বহুতল বাড়ি।

আছে বিলাস বহুল বেশ কয়েকটি গাড়ি। ব্যবহার করতেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কোটার শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়িও। যে গাড়িটিতে এমপি স্টিকার লাগিয়ে ভিআইপি সুবিধা নিয়ে চলাচলও করতেন তিনি।

তার এসব অপকর্ম, লুটপাট ও অপরাধের উত্থান ঘটে পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম কলাকুশলী শেখ পরিবারের বিভিন্ন সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ২ গভর্ণর, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন ও দুদকের উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায়।

তমালের অনিয়মে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে। পরিচয় প্রকাশে ভীত এই অভিযোগকারীরা জানান, তমালের বেশুমার অনিয়ম-দুর্নীতির কথা।

এ ব্যাপারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক, ব্যাংক-লুটকারী পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানান।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। জরুরি বিবেচনায় এনআরবিসি ব্যাংকের অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান-এমডির সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যাংকে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ব্যাংকের পিআরও সেকশনেও দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ফোনে যোগাযোগ করা হলে জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, পরিচালনা পরিষদের অনেকেই দেশের বাইরে আছেন। অন্য কেউ কথা বলবেন না।