প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে একের পর এক পদোন্নতির ঘটনায় শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে পেট্রোবাংলায়। প্রতিষ্ঠানটির ১৩টি কোম্পানীর মধ্যে অন্তত ৩টির এমডি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার ধার ধারেননি পেট্রোবাংলার সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান এবিএম ফাত্তাহ। নিয়ম লঙ্ঘন করে আরো দুটি কোম্পানীর এমডি নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় চুড়ান্ত । বিশ্লেষকরা বলছেন, একের পর এক এমন ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জ্বালানী খাত। আর পেট্রোবাংলার দাবি, দক্ষতা বিবেচনা করেই পদন্নতি দেয়া হচ্ছে কর্মকর্তাদের।
ঢাকার তিতাস, চট্টগ্রামের কর্ণফূলী, সিলেটের জালালাবাদ, কুমিল্লার বাখরাবাদ, জিটিসিএল, আরপিজিসিএলের মতো গ্যাস সেক্টরের ১৩ টি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক পেট্রোবাংলা। রাষ্ট্রের এত গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠানটিতে অনিয়ম দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যার সবশেষ উদাহরণ সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান এবিএম ফাত্তাহর পদন্নতি কেলেঙ্কারী।
আদালতের নির্দেশে পেট্রোবাংলার অধিনস্ত কোম্পানীগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদন্নতির জন্য একটি নীতিমালা এমনকি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ৯৩ জন কর্মকর্তার একটি তালিকাও করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু নিজেদের সেই তালিকায় লঙ্ঘন করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম ফাত্তাহ। একাধিক জিওলোজিস্ট ডিগ্রীধারীসহ জ্যেষ্ঠ অন্তত ২৩ জনকে ডিঙ্গিয়ে বাপেক্সের মতো একটি গুরুত্বপুর্ণ কোম্পানীর এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ডিপ্লোমাধারী মোহাম্মদ আলীকে। পেট্রোবাংলার জিএম আবু দাউদ মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামানকে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানীর এমডি করেছেন ৩০ জনকে সুপারসিট করে।
প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যানও সেই ধারা অব্যহত রেখেছেন। ১৯ জনকে ডিঙ্গিয়ে জিটিসিএলের জিএম রুখসানা নাজমা ইছহাককে একই প্রতিষ্ঠানের এমডি, ৩৫ জনকে পেছনে ফেলে বাপেক্সের জিএম মিজানুর রহমানকে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানীর এমডি করার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করেছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন বলছে, পদন্নতির জন্য জেষ্ঠতা অনুসরণ করা একটা নুন্যতম মানদণ্ড। এখানে ব্যত্যয় ঘটলে ভেঙ্গে পড়ে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা। গ্যাস সেক্টরের স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতেই পেট্রোবাংলার পত্তন করে সরকার। কিন্তু প্রধান এই প্রতিষ্ঠানটিতেই অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে পুরো সেক্টরটিতেই ভেঙ্গে পড়েছে চেইন অব কমান্ড।