আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজা বাদ জোহর হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে
- আপডেট সময় : ০২:১২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫১০ বার পড়া হয়েছে
দেশের সবচে’ প্রবীণ আলেম, হেফাজতে ইসলামের আমীর- আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজা বাদ জোহর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মাদ্রাসা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই আলেমকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে এবং জানাযায় অংশ নিতে সকাল থেকে হাটহাজারী মাদ্রসা প্রাঙ্গনে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। তার ইন্তেকালে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে।
আল্লামা শাহ আহমদ শফি। হেফাজতে ইসলামের আমীর এবং হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম বা মহাপরিচালক হিসেবেই যার দেশব্যাপী পরিচিতি। কওমী মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। তবে স্থানীয়রা তাকে চিনতেন বড় হুজুর নামে। দেশের সবচেয়ে বড় কওমী মাদ্রাসার প্রধান- আল্লামা শাহ আহমদ শফি ১৯১৬ সালে রাঙ্গুনিয়ার পাখিরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্র জীবনে হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা ও পরে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়ালেখা শেষে চতুর্থ মুহতামিম হিসেবে ১৯৮৬ সালে দায়িত্ব নেন হাটহাজারী মাদ্রাসার। দক্ষতা আর নেতৃত্বের গুণাবলী দিয়ে গোটা দেশের কওমী শিক্ষার ওপর প্রভাব বিস্তার করেন তিনি। সেই থেকে হাটহাজারীর আদলেই পরিচালিত হতে থাকে সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজার হাজার বেসরকারী কওমী মাদ্রাসা।
হাটহাজারী মাদ্রাসা নামে পরিচিত এই দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকেই ২০১০ সালে গড়ে তোলেন আলোচিত ইসলামী সংগঠন- হেফাজতে ইসলাম। ধর্মীয় নানা ইস্যুতে সরব থেকে মাঝে মধ্যেই সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন দেশের সবচে’ প্রবীণ এই আলেম। কওমী শিক্ষার স্বীকৃতিসহ নানা দাবি দাওয়া আদায়ের মাধ্যমে প্রশংশিত হয়েছেন ধর্মীয় মহলে। তার ইন্তেকালে শুধু কওমী অঙ্গনই নয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোটা দেশ। এমনটাই বলছেন প্রবীণ ইসলামী চিন্তাবিদরা।
সট: মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, সদস্য, মজলিসে শুরা, হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল মাদ্রাসা।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই আলেমের রূহের শান্তি কামনায় দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। শীর্ষ এই ধর্মীয় নেতার নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে মৃত্যুর মাত্র একদিন আগে। আল্লামা শফির ছেলে আনাস মাদানীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে নিজের মাদ্রাসার ছাত্ররাই তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। ৩৬ ঘন্টারও বেশী সময় নিজের কক্ষে অবরুদ্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিমের পদ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এর পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরদিনই চলে যান না ফেরার দেশে। আল্লামা শফির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হন তার দীর্ঘদিনের সহচর ও ছাত্র– হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া ও নেতৃত্বের উত্তরাধিকার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আল্লামা শফির সঙ্গে বাবুনগরীর দূরত্বের খবর প্রচলিত ছিলো কওমী অঙ্গন ও হেফাজতে ইসলামে। যদিও এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন হেফাজতের মহাসচিব।