আজ শোকাবহ ১৫ আগষ্ট

- আপডেট সময় : ০২:২০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২
- / ১৫৯৬ বার পড়া হয়েছে
আজ শোকাবহ ১৫ আগষ্ট। ইতিহাসের নৃশংস রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের দিন। এই হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে বাঙালির ইতিহাসে যুক্ত হয় এক কালিমালিপ্ত এক অধ্যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জাতির জনক, স্বাধীনতার স্থপতি ও রাষ্ট্রপ্রধান, অথচ জীবনযাপন করতেন অন্যসব সাধারণ পরিবারের সদস্যদের মতই।
রাষ্ট্রপ্রধান হলেও পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। নিরাপত্তা নিয়ে ছিলো না তেমন কোন বাড়াবাড়ি।
দেশের মানুষকে এতো বেশি বিশ্বাস ও ভালোবসতেন যে, কখনো তিনি চিন্তাও করেননি, এই দেশের কেউ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারেন।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায় বিশ্বাসঘাতকরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই তারা হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে।
সেদিন ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালসহ পরিবারের ১৮ সদস্যকে হত্যা করা হয়।
সেদিন ঘাতকদের হাতে প্রাণ হারাতে হয় বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলকেও।বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে ঘাতকেরা। ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে পিছিয়ে যেতে থাকে সম্ভাবনার বাংলাদেশ।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটির কালো বাধা দূর করে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু করে আওয়ামী লীগ। বিচারিক কাজ শেষে ২০১০ সালে ২৭ জানুয়ারি ফাঁসি দেয়া হয় পাঁচ খুনিকে । তবে এখনো পলাতক রয়েছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬ খুনি।
এই হত্যাকান্ডে শুধু ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা করা হয়নি, একই সঙ্গে হত্যা করা হয়েছিলো বাংলার মানুষের আশা আকাঙ্খাকে।
তদন্ত কমিশন গঠন করে অবিলম্বে নেপথ্যের খুনিদের নাম জাতির সামনে প্রকাশ করার দাবি আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতার।
ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার শত ষড়যন্ত্র হলেও যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জাতির অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আজ ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। হত্যার পর লাশ দাফন করা হয় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কাজ শেষ হলেও রায় কার্যকর হয়েছে আংশিক। পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবী গোপালগঞ্জবাসীর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত এক নাম যা সমহিমায় উচ্চারিত। এই ব্যক্তির জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জর টুঙ্গিপাড়ায়। মা-বাবার আদরের খোকা। ৭১’এরে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামের স্বাধীন ভূ-খণ্ড।
৭৫’র ১৫ আগষ্টে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন তিনিসহ তাঁর পুরো পরিবার। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর রেডিওতে ঘোষণার পরপরই কিংকতব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন গোপালগঞ্জবাসী।
দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার আটকে থাকে। এখনো পলাতক আছেন কয়েকজন। তাদের বাংলাদেশ সরকার কাছে শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে এমনটিই প্রত্যাশা সবার।
৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারকাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালে আবারো ক্ষমতায় এলে কার্যকর হয় আংশিক রায়।
পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় পুরোপুরি কার্যকর হলে দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে, মত এলাকাবাসীর।