ফ্রুটস ভ্যালী এগ্রো প্রকল্পের বাগানে ঝুলছে বিশ্বসেরা ৫৭ জাতের রংবেরঙের আম

- আপডেট সময় : ০২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
- / ১৫৫০ বার পড়া হয়েছে
আমের ডালে ডালে ঝুলছে বাহারি সব আম। চাঁদপুর সদরের শাহতলী গ্রামের পরিত্যক্ত ইটভাটার জমিতে গড়ে তোলা বাগানটিতে আছে ৫৭ জাতের বিদেশি আম, এমনটাই দাবি মালিকের। শুধু আমই নয়, আছে শতাধিক প্রজাতির ফল।
‘ফ্রুটস ভ্যালী এগ্রো’ নামের এই বাগানের মালিক শৌখিন ফলচাষি হেলাল উদ্দিন। ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে তাঁদের পরিত্যক্ত দুটি ইটভাটার জমি অনাবাদি পড়ে ছিল। চার বছর আগে এই জমিতে বালু ও মাটি ফেলে পরীক্ষামূলকভাবে ফলের চারা রোপণ করেন তিনি। এখন সেখানে প্রায় ৩ একর জায়গায় তৈরি হয়েছে পুরো একটি বাগান।
ভ্যালেন্সিয়া প্রাইড, লেমনযেস্ট, বেইলি মার্বেল, রোসারোসা, সানসেট, আতাউল্ফ, কারাবাও, আলফানসো, গ্লেইন, হাডেন, মায়া, সেনসেশান, অস্টিন, অস্টিন গোল্ড, আর-টু ই-টু, ক্যাংসিংটন প্রাইড, ঝিইল, টমি এ্যাটকিনস, রেড আইভরী, কিং অব চাকাপাত, মিয়াজাকি, জাম্বো রেড চাকাপাত, ব্ল্যাকস্টোন, থ্রিটেস্ট, কেন্ট, কেইট, পালমার (ফ্লোরিডা), চিলি ম্যাংগো, কেষার, পুষা আম্বিকা, পুষা অরুনিমা, পুষা সুরাইয়া,মল্লিকা, তোতাপুরি, হানিডিউ, নামডকমাই, নামডকমাই সিমওয়াং, গোল্ডেন নামডকমাই, আপেল ম্যাংগো, মহাচানক, চিলতাখাস, ক্যারিই, ওকরংথন (চায়নিজ), এসআর ম্যাংগো, কাটিমন, হানিডিউ, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, ফ্রাংসিস, থাই কাচামিঠা, বারি-৪, গৌরমতি ইত্যাদি।
এ ছাড়া ১৭ জাতের সাইট্রাস (কমলা, ম্যান্ডারিন, মাল্টা, লেমন), ২১ প্রজাতীর আংগুর, ১২ প্রজাতীর লংগান ফল, ৫ প্রজাতীর রাম্বুতান, ম্যাগোস্টিন, ৭ প্রজাতীর ড্রাগন ফল, ৬ প্রজাতীর লিচু, ৭ প্রজাতীর এভাকাডো, ৬ প্রজাতীর আতা ফল, ৫ প্রজাতীর আপেল ছাড়াও আছে ক্যান্সার প্রতিরোধক করোসল, এপ্রিকট, মাম্মি সাপুটে, ব্ল্যাক সাপুটে,৫ জাতের পামেলো, নতুন জাতের বরই, পেপে, কলা, খেজুরসহ আরো ৪৭ প্রজাতীর ফল ফলাদি।
গত শনিবার বিকেলে বাগানটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আড়াই শটি গাছে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে। অধিকাংশ আম এখনো অপরিপক্ব। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পাকতে শুরু করবে বলে জানান হেলাল। গত বছর বাগানটি থেকে প্রায় ছয় লাখ টাকার আম বিক্রি হয়েছিল। এবার আট লাখ টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করছেন তিনি।
হেলাল উদ্দিনের বাগানে আমের মতোই এগুলোর নামেরও বৈচিত্র্য আছে। যেমন ভ্যালেন্সিয়া প্রাইড, লেমনজেস্ট, রোসারোসা, আতাউল্ফ, কারাবাও, আলফানসো, মায়া, হাডেন, সেনসেশন, আর-টু ই-টু, ক্যাংসিংটন প্রাইড, মিয়াজাকি, ব্ল্যাকস্টোন, জাম্বো রেড চাকাপাত, নামডকমাই, এসআর ম্যাংগো, ফ্রাংসিস, ব্রুনাই কিং, কেষার, মল্লিকা, তোতাপুরি, হানিডিউসহ আরও অনেক নাম। এগুলোর অধিকাংশই মিষ্টি, সুস্বাদু ও রসালো।
তবে এসব আম অনলাইনে বা হাটে বিক্রি হয় না। বাগানটির খবর মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সূত্রেই ক্রেতারা সরাসরি বাগানে গিয়ে ফল কিনে নিয়ে যান। হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি এই বাগান করেছি মানুষের বিশ্বাস তৈরির জন্য। যাতে বোঝানো যায়, বালুর জমিতেও ফল ফলানো সম্ভব।’
বাগান থেকে আয়ের পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকজনের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ১০-১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা কাজ করছেন। নিজ হাতে গড়া বাগানের প্রতিটি কাজেই সক্রিয়ভাবে অংশ নেন হেলাল উদ্দিন। অনেকেই এই বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন, গড়ে তুলছেন নিজস্ব ফলের বাগান।