০১:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

জিটুজির নামে নিম্ন মানের সার আমদানি, শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৭:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৫১২ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জিটুজির পদ্ধতিতে সার আমদানির নামে শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে দেশ-বিদেশে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয় ইফা কনফারেন্স। সেখানে বিশে^র বিভিন্ন দেশের সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ট্রেডিং কোম্পানির মালিক ও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে জিটুজির পদ্ধতিতে সার আমদানির নামে বাংলাদেশ থেকে যে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে ভেজাল, নিম্নমানের সার আমদানির নামে চলছে রাষ্ট্রের টাকা লুটাপট। কোন প্রকার তোয়াক্কা করছেনা সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের নিয়ম কানুন। যেন দেখার কেউ নেই।
জানাগেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বিশে^র বিভিন্ন দেশের সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জি টু জি’র মাধ্যমে সেই দেশের সরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে সার আমদানি করতে হয়। কোন ভাবেই জিটুজির চুক্তি অনুযায়ী সেই দেশের বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা কোন ট্রেডিং কোম্পানীর কাছ থেকে সার আমদানি করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের কোন নিয়মনীতিকে কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে জিটুজির চুক্তির নামে চায়নার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। (যার ঠিকানা গ্লু ডিষ্ট্রিটেট, ফুজিয়া, চায়না)। বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে রপ্তানিকারক বানিয়ে প্রথম বছর চায়নার বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ইউয়া এবং শ্যাং ফ্যাং নামক দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্ন মানের সার ক্রয় করেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড বিভিন্ন বেসরকারী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ভেজাল এবং নিম্নমানের সার বেশী মূল্যে ক্রয় করছে। বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে এক্সপোর্টার সাজিয়ে এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে সার ক্রয় করলেও পরবর্তীতে দেখা যায় যে বেসরকারীভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডের মাধ্যমে সার সরবরাহ করতে পারবে বলে অনুমতি প্রদান করে। বিএডিসি চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে সে দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সার সার আমদানী এবং সে দেশের যে কোন বন্দর ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ায় তারা নিম্নমানের সার প্রদানের সুযোগ পেয়েছে।

সূত্রটি আরো জানায়, চায়না থেকে যে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে সেই সারে ১৮% নাইট্রোজেন এবং ৪৬% ফসফেটসহ মোট ৬৪% থাকার কথা এলসিতে উল্লেখ রয়েছে। বাস্তবে এই ৬৪% সারের সাথে ৫০% থেকে ৫৭% ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার মিশিয়ে জাহাজীকরণ করছে। ডিএপি সারে নাইট্রোজেন ও ফসফেট ৬৪% হিসেবে বিএডিসি চায়না থেকে আমদানিকৃত প্রতি মেট্রিকটন স্যারের মূল্য, জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ ৮৯০ থেকে ৮৯৫ মার্কিন ডলার। কিন্তু চায়না থেকে যে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে আমদানিকৃত সেই ডিএপি সারে নাইট্রোজেন ও ফসফেট রয়েছে মাত্র ৫০% থেকে ৫৭% -এর নিম্নমানের ডিএপি সার মিশিয়ে জাহাজীকরণ করছে। চায়নার বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ থেকে ৪ ধরনের গ্রেডের ডিএপি সার উৎপাদন করে থাকে। সেই কারণে ৬৪% সারের সাথে ৫০% থেকে ৫৭ % সার মিশানো সহজ হচ্ছে।
জানাগেছে, আমদানিকৃত সার জাহাজীকরণের সময় চায়নার লোকাল কোম্পানি বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড প্রতি ৪০ হাজার মেট্রিকটন সারের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার রাতের অন্ধকারে মিশ্রন করে জাহাজ লোড দিচ্ছে। জাহাজীকরণের সময় জাহাজের নিচে প্রথমে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার লোড করে। তার উপরে ২৫ থেকে ২৬ হাজার মেট্রিকটন ৬৪% নাইট্রোজেন ও ফসফেট সংযুক্ত সার লোড করানো হয়। সারের মিশ্রনটা সহজ হয়েছে বাংলাদেশী কোম্পানী কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী একটি অক্ষাত এবং নি¤œমানের কোম্পানীর কারণে। কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর বাড্ডার থানাধীন ট্রপিক্যাল মোল্লা টাওয়ারে। ইন্সেপেকশন কোম্পানী এলসির ক্লজ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সারের মধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট এলসি অনুযায়ী আছে কিনা এবং সারের কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি বুঝে নিয়ে সারের স্পর্শ কাতর এই সাটিফিকেট ইস্যু করা হয়। ইন্সেপেকশন কোম্পানী এলসির ক্লজ অনুযায়ী সার্টিফিকেট ইস্যু করার পর রপ্তানীকারক এই সার্টিফিকেট ব্যাংকে জমা দিয়ে তার বিল উত্তোল করে নেয়। সচরাচর যে কোন পণ্য আমদানীর ক্ষেত্রে ইন্সপেকশন কোম্পানী এসজিএস (আমেরিকা) ইন্সপেক্টরেট অথবা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত বিদেশী কোম্পানী দ্বারা সারের গুণগতমান পরীক্ষা করে সাটিফিকেট ইস্যু করণের কথা এলসিতে উল্লেখ থাকে। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের দেয়া গত ৩১ জুলাই ২৫০৭৩১ নং এলসিতে বাংলাদেশী নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের ইন্সপেকশন কোম্পানী কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেডের নাম উল্লেখ করেছে। যার কারণে এই চক্রটি তাদের টাকা এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা সহজ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিমাসে এই সকল এলসি অডিট করে থাকলেও কিভাবে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচার করছে। নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এলসির নামে টাকা পাচারের সহযোগীতা করছে। নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু টাকা পাচারের সহযোগী না তারা দেশের ১৩ কোটি প্রান্তিক কৃষকের সাথে প্রতারনা করছে। আমদানীকৃত সারে ৫০% থেকে ৫৫% নাইট্রোজেন ও ফসফেট মেশানোর কারণে প্রতি মেট্রিকটনে ৯৫ থেকে ১শ ডলার এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে নিচ্ছে। এছাড়া এই চক্রটি একই ভাবে তিনোশিয়া এবং মরক্কো থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকার টিএসপি সার আমদানী করা হচ্ছে সেই সারের গুণগতমান পরীক্ষার জন্য নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ করা হয়েছে।
কে এই কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেডের মালিক: কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী দুর্বল ইন্সেপেকশন কোম্পানীটির মালিক মোহাম্মদ উল্লাহ। মোহাম্মদ উল্লাহ গত ১৫ বছরের বেশী সময় যাবত বিএডিসি এবং কৃষি মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত সারের এলসির মাধ্যমে এসব অনিয়ম, দূর্নীতি এবং দেশের প্রান্তিক কৃষকদের সাথে প্রতারনা করে আসছে। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত মোহাম্মদ উল্লার ব্যবসায়ীক পার্টনার হলেন বিগত ফ্যাসিস আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের জামাতা পরিচয়দানকারী মোঃ সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন মালয়েশিয়াতে অবস্থান করে বিএডিসির এজেন্ট হিসেবে এই কাজ পরিচালনা করছে।
ইন্সপেকশন কোম্পানীর বিল সাধারণত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রদান করে থাকে। কিন্তু কন্টিনেন্টাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী দুর্বল ইন্সপেকশন কোম্পানীটির বিল প্রদান করছে বিএডিসি।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জিটুজির নামে নিম্ন মানের সার আমদানি, শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

জিটুজির পদ্ধতিতে সার আমদানির নামে শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে দেশ-বিদেশে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয় ইফা কনফারেন্স। সেখানে বিশে^র বিভিন্ন দেশের সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ট্রেডিং কোম্পানির মালিক ও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে জিটুজির পদ্ধতিতে সার আমদানির নামে বাংলাদেশ থেকে যে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে ভেজাল, নিম্নমানের সার আমদানির নামে চলছে রাষ্ট্রের টাকা লুটাপট। কোন প্রকার তোয়াক্কা করছেনা সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের নিয়ম কানুন। যেন দেখার কেউ নেই।
জানাগেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বিশে^র বিভিন্ন দেশের সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জি টু জি’র মাধ্যমে সেই দেশের সরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে সার আমদানি করতে হয়। কোন ভাবেই জিটুজির চুক্তি অনুযায়ী সেই দেশের বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা কোন ট্রেডিং কোম্পানীর কাছ থেকে সার আমদানি করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের কোন নিয়মনীতিকে কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে জিটুজির চুক্তির নামে চায়নার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। (যার ঠিকানা গ্লু ডিষ্ট্রিটেট, ফুজিয়া, চায়না)। বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে রপ্তানিকারক বানিয়ে প্রথম বছর চায়নার বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ইউয়া এবং শ্যাং ফ্যাং নামক দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্ন মানের সার ক্রয় করেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড বিভিন্ন বেসরকারী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ভেজাল এবং নিম্নমানের সার বেশী মূল্যে ক্রয় করছে। বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে এক্সপোর্টার সাজিয়ে এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে সার ক্রয় করলেও পরবর্তীতে দেখা যায় যে বেসরকারীভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডের মাধ্যমে সার সরবরাহ করতে পারবে বলে অনুমতি প্রদান করে। বিএডিসি চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে সে দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সার সার আমদানী এবং সে দেশের যে কোন বন্দর ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ায় তারা নিম্নমানের সার প্রদানের সুযোগ পেয়েছে।

সূত্রটি আরো জানায়, চায়না থেকে যে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে সেই সারে ১৮% নাইট্রোজেন এবং ৪৬% ফসফেটসহ মোট ৬৪% থাকার কথা এলসিতে উল্লেখ রয়েছে। বাস্তবে এই ৬৪% সারের সাথে ৫০% থেকে ৫৭% ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার মিশিয়ে জাহাজীকরণ করছে। ডিএপি সারে নাইট্রোজেন ও ফসফেট ৬৪% হিসেবে বিএডিসি চায়না থেকে আমদানিকৃত প্রতি মেট্রিকটন স্যারের মূল্য, জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ ৮৯০ থেকে ৮৯৫ মার্কিন ডলার। কিন্তু চায়না থেকে যে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে আমদানিকৃত সেই ডিএপি সারে নাইট্রোজেন ও ফসফেট রয়েছে মাত্র ৫০% থেকে ৫৭% -এর নিম্নমানের ডিএপি সার মিশিয়ে জাহাজীকরণ করছে। চায়নার বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ থেকে ৪ ধরনের গ্রেডের ডিএপি সার উৎপাদন করে থাকে। সেই কারণে ৬৪% সারের সাথে ৫০% থেকে ৫৭ % সার মিশানো সহজ হচ্ছে।
জানাগেছে, আমদানিকৃত সার জাহাজীকরণের সময় চায়নার লোকাল কোম্পানি বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড প্রতি ৪০ হাজার মেট্রিকটন সারের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার রাতের অন্ধকারে মিশ্রন করে জাহাজ লোড দিচ্ছে। জাহাজীকরণের সময় জাহাজের নিচে প্রথমে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার লোড করে। তার উপরে ২৫ থেকে ২৬ হাজার মেট্রিকটন ৬৪% নাইট্রোজেন ও ফসফেট সংযুক্ত সার লোড করানো হয়। সারের মিশ্রনটা সহজ হয়েছে বাংলাদেশী কোম্পানী কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী একটি অক্ষাত এবং নি¤œমানের কোম্পানীর কারণে। কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর বাড্ডার থানাধীন ট্রপিক্যাল মোল্লা টাওয়ারে। ইন্সেপেকশন কোম্পানী এলসির ক্লজ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সারের মধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট এলসি অনুযায়ী আছে কিনা এবং সারের কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি বুঝে নিয়ে সারের স্পর্শ কাতর এই সাটিফিকেট ইস্যু করা হয়। ইন্সেপেকশন কোম্পানী এলসির ক্লজ অনুযায়ী সার্টিফিকেট ইস্যু করার পর রপ্তানীকারক এই সার্টিফিকেট ব্যাংকে জমা দিয়ে তার বিল উত্তোল করে নেয়। সচরাচর যে কোন পণ্য আমদানীর ক্ষেত্রে ইন্সপেকশন কোম্পানী এসজিএস (আমেরিকা) ইন্সপেক্টরেট অথবা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত বিদেশী কোম্পানী দ্বারা সারের গুণগতমান পরীক্ষা করে সাটিফিকেট ইস্যু করণের কথা এলসিতে উল্লেখ থাকে। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের দেয়া গত ৩১ জুলাই ২৫০৭৩১ নং এলসিতে বাংলাদেশী নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের ইন্সপেকশন কোম্পানী কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেডের নাম উল্লেখ করেছে। যার কারণে এই চক্রটি তাদের টাকা এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা সহজ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিমাসে এই সকল এলসি অডিট করে থাকলেও কিভাবে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচার করছে। নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এলসির নামে টাকা পাচারের সহযোগীতা করছে। নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু টাকা পাচারের সহযোগী না তারা দেশের ১৩ কোটি প্রান্তিক কৃষকের সাথে প্রতারনা করছে। আমদানীকৃত সারে ৫০% থেকে ৫৫% নাইট্রোজেন ও ফসফেট মেশানোর কারণে প্রতি মেট্রিকটনে ৯৫ থেকে ১শ ডলার এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে নিচ্ছে। এছাড়া এই চক্রটি একই ভাবে তিনোশিয়া এবং মরক্কো থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকার টিএসপি সার আমদানী করা হচ্ছে সেই সারের গুণগতমান পরীক্ষার জন্য নাম স্বর্বত্র, অক্ষাত এবং নি¤œমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ করা হয়েছে।
কে এই কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেডের মালিক: কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী দুর্বল ইন্সেপেকশন কোম্পানীটির মালিক মোহাম্মদ উল্লাহ। মোহাম্মদ উল্লাহ গত ১৫ বছরের বেশী সময় যাবত বিএডিসি এবং কৃষি মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত সারের এলসির মাধ্যমে এসব অনিয়ম, দূর্নীতি এবং দেশের প্রান্তিক কৃষকদের সাথে প্রতারনা করে আসছে। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত মোহাম্মদ উল্লার ব্যবসায়ীক পার্টনার হলেন বিগত ফ্যাসিস আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের জামাতা পরিচয়দানকারী মোঃ সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন মালয়েশিয়াতে অবস্থান করে বিএডিসির এজেন্ট হিসেবে এই কাজ পরিচালনা করছে।
ইন্সপেকশন কোম্পানীর বিল সাধারণত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রদান করে থাকে। কিন্তু কন্টিনেন্টাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশী দুর্বল ইন্সপেকশন কোম্পানীটির বিল প্রদান করছে বিএডিসি।