দেশের বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি
- আপডেট সময় : ০১:৫২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
- / ১৫১৮ বার পড়া হয়েছে
দেশের বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর পানি বাড়ায় বন্যা কবিলত ২১ জেলার সার্বিক পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এদিকে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ সব ক’টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসী মানুষের। দীর্ঘ এক মাসের বানের পানিতে ঘড়বাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এক মাস ধরে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দীর্ঘ সময় পানিবন্দী থাকায় চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যা কবলিত প্রায় ৪ লাখ মানুষ। পাশা-পাশি গো-খাদ্যের সংকট বেড়েছে বানভাসীদের।
২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আরও ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে সকাল ৬ টায় কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ও শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে জেলার বন্যা কবলতি ৬টি উপজেলার প্রায় ২৫০ গ্রামের ৬৮ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতির–আরো অবনতি হয়েছে। দীর্য প্রায় এক মাসের বন্যায় চরম দুর্ভোগে–জেলার ৭ উপজেলার ৫৯ টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বেড়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মাদারীপুরের শিবচরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শিবচরের ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসক বন্যা দুর্গত এলাকায় আক্রান্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
শরীয়তপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবতীত রয়েছে। গতকাল পদ্মানদীর পানি সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার থাকলেও সকাল ১০টায় সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মানদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মানদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ের ত্রাণ বিতরণ শুরু হলেও বানভাসী মানুষের তুলনায়–অপ্রতুল।
মুন্সীগঞ্জের যেদিকে চোখ যায় সে দিকেই পানি আর পানি। প্রতিনিনিই এসব এলাকার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে ৭.৩ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, মুন্সীগঞ্জ-লৌহজং-মাওয়া-বালিগাও প্রধান সড়ক ও শ্রীনগর-দোহার সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল হুমকীর মুখে পড়েছে।
নেত্রকোনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলার খালিয়াজুড়ির ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
টাঙ্গাইলে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার এবং ধলেম্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪৮সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাজীপুরে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কালিয়াকৈর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি ও ফসলের ক্ষেত। এসব স্থানে মাছের খামার তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে খামারিরা।
বাগেরহাটে গ্রাম রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কেশবপুর গ্রামের শতাধিক চিংড়ি ঘের, ঘরবাড়িসহ লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। ভৈরব নদীর জোয়ারের পানির চাপে সদর উপজেলার কেশবপুর প্রামের মুনিগঞ্জ সেতু সংলগ্ন এলাকা ভেঙ্গে গেছে ।
এদিকে, পাবনায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।