দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন

- আপডেট সময় : ১২:৩৪:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০
- / ১৫৪৭ বার পড়া হয়েছে
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলা ও সুরক্ষার প্রয়োজনে নরসিংদী, নেত্রকোনা, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, ঝালকাঠি ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বর্তমানে লকডাউনে আছেন নরসিংদীবাসী। সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জেলা প্রশাসন নরসিংদীকে লকডাউনের আদেশ জারী করেন। নির্দেশনা অনুযায়ী নরসিংদী জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক ছাড়া জেলা-উপজেলার অন্যসব রাস্তা ও সীমানা দিয়ে ভিন্ন জেলায় যাতায়াতে প্রবেশ ও প্রস্থানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসময় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণজমায়েত, গণপরিবহন, দিনরাতে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্ত এলাকা সীলগালা করে দিয়েছে বিজিবির নেত্রকোনা ব্যাটালিয়ন-৩১। এতে করে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত আদিবাসী লোকজন দু’পাড়ে আসা যাওয়া একেবারেই বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, দুর্গাপুর উপজেলা ভারতের মেঘালয়ের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। এতে করে ভারত থেকে আদবাসীরা তাদের স্বজনদের কাছে আসতে না পারে সেজন্য বিজিবি টহল জোরদার করেছে।
সাতক্ষীরা জেলাকে করোনা ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এই জেলার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলার সকল সীমান্ত এবং আন্তঃ উপজেলা সীমান্ত– জরুরী সেবা ছাড়া সকল প্রকার যানবাহন ও জনচলাচল নিষিদ্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের কয়েকটি জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় ঐসব জেলা লকডাউন ঘোষণার প্রেক্ষিতে সেখানে কর্মরত লোকজন নিজ-নিজ জেলায় ফিরতে চেষ্টা করছে। এরই প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলাকে করোনা ঝুঁকি মুক্ত রাখতে এই জেলার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলার সকল সীমান্ত এবং আন্তঃ উপজেলা সীমান্ত জরুরী সেবা ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন ও জনচলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন,পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। অমান্যকারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গাইবান্ধায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চলছে স্বেচ্ছায় লকডাউন। স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে এ লকডাউন করছেন। সকাল থেকে শহরের ব্রীজরোড়, মমিনপাড়া বাংলাবাজার, মাষ্টারপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বাশ কাঠ নিয়ে বেড়া দিয়ে লক ডাউন করে রাখে। যাতে কেউ এই এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে। অন্য প্রযোজন ছাড়া কেউ যাতে বের হতে পারে। গাইবান্ধায় জেলায় ৫জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হযে আইসোলেশনে রয়েছে। এই আঙ্তকে জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূন জায়গায় স্থানীয়রা নিজেই লকডাইন করে। ছাড়াও সকাল থেকে শহরের মোড়গুলোতে পুলিশে চেক পোষ্ট বসিয়ে শহরের প্রবেশ করতে বাধ্য দেওয়া সহ লোকজনকে ঘরে ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ঝালকাঠিতে চলছে অঘোষিত লকডাউন। জেলা শহরে ঢুকতে সকল সড়কে বেরিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। এমনকি শহরের গুরুত্বপূর্ন মোড়গুলোতেও বাঁশ ও চাটাই দিয়ে বেরিকেড দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জনসমাগম রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে টহলে রয়েছে। বিভিন্ন স্থানের সড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে কঠোরভাবে সবাইকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
অবশেষে কক্সবাজারকেও লকডাউন করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার সন্ধ্যায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে পুরো জেলাকে লকডাউনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন। একই বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলাগুলোও লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে জানানো হয়। ফলে জেলা এবং উপজেলায় বাইরে থেকে কেউ যেমন ঢুকতে পারবে না, তেমনি জেলার বাইরেও কেউ যেতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে প্রতিদিনের মতো সামাজিক দুরত্ব বাজায় রাখাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা, নৌ, পুলিশ ও রেব সদস্যরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ তৎপরতাও।