প্রখ্যাত গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের চিরবিদায়

- আপডেট সময় : ১২:৪৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ১৫৭২ বার পড়া হয়েছে
কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা মাজহারুল আনোয়ারের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। অসুস্থ অবস্থায় রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাজনীতিবিদসহ গণমান্য অনেকেই। শেষ একনজর দেখতে অনেকেই ছুটে গেছেন হাসপাতালে। সাংস্কৃতিক অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পুত্রবধূ শাহানা মির্জা গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিকে নিজ বাসার বাথরুমে যাওয়ার সময় জ্ঞান হারান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে।
সেইখানে ডাক্তার পরীক্ষা করে বলেন, তার পালস পাওয়া যাচ্ছে না। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, তিনি স্ট্রোক করেছেন।
তার মেয়ে দিঠি আনোয়ার দেশের বাইরে থাকায় গাজী মাজহারের মরদেহ হিমঘরে রাখা হবে।
কাল সকাল ১১টায় সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এফডিসিতে। তাঁকে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তাঁকে শেষবার একনজর দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান অনেকেই। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, রাষ্ট্রীয় সম্মাননার বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে। চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা তিনি। তার মৃত্যুতে সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে সব মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার গান রচনা করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন কালজয়ী এই গীতিকার।
একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এ গীতিকার, পরিচালকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে।
তার লেখা কিছু কালজয়ী গান হলো— ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’ প্রভৃতি।