১২ কোটি টাকা বকেয়ার পরও একেএস স্টিলকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ

- আপডেট সময় : ০২:০৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ১৬৩৪ বার পড়া হয়েছে
১২ কোটি টাকা বকেয়া বিল আদায় না করেই আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ কে এস স্টিলকে জাতীয় গ্রীড থেকে হট টেপিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ দেয় কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিশন কোম্পানীর সাবেক এমডি আলী মোহাম্মদ আল মামুন। পরবর্তিতে পদোন্নতি পেয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক হয়ে সেই ঘটনা এতোদিন ধামাচাপা দিয়ে রাখেন। এমনকি নামকাওয়াস্তে একটি তদন্ত করিয়ে মুল অভিযুক্তদের ছাড় দিয়ে তার প্রতিপক্ষ অফিসারদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন।বকেয়া টাকা আদায়ে সুপারিশ করার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বিস্মিত দুদক। তবে এ ব্যাপারে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন আলী মোহাম্মদ আল মামুন।
২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর দৈনিক চালনাধাচ ১২ ঘন্টার পরিবর্তে ২৪ ঘন্টা ব্যবহার ও লোড বৃদ্ধির আবেদন করে, আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ কে এস স্টীল। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি জামানতের টাকা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি। নিয়মানুযায়ী ওই দিন থেকেই বর্ধিত লোডের বিপরীতে বিল পরিশোধ করতে হবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে। কিন্তু ২০১৮ সালের ৮ মে পর্যন্ত তা করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এমনকি টানা ১৬ মাস ধরে বর্ধিত লোডের কোন বিলও ইস্যু করেনি কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি–কেজিডিসিএল। কারণ লোড বৃদ্ধির এই তথ্য রাজস্ব বিভাগকে জানায়নি বিক্রয় বিভাগ। এরই মাঝে বকেয়ার খাতায় জমেছে ১২ কোটি টাকার কাছাকাছি।
গ্যাস বিপনন নীতিমালা অনুযায়ী পুরনো সংযোগের হালনাগাদ তথ্য যাচাই-বাছাই না করে একই গ্রাহককে নতুন কোন সংযোগ দেয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু ২০১৮ সালের ২০ মার্চ জাতীয় গ্রীড থেকে হট টেপিংয়ের মাধ্যমে এ কে এস স্টিলকে নতুন আরেকটি সংযোগ দেয়ার সুপারিশ করেন তৎকালিন এমডি আলী মোহাম্মদ আল মামুন।
এতোবড় অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর, আলাদা তদন্ত করে পেট্রোবাংলা ও দুদক। পেট্রোবাংলার তদন্তে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করা না গেলে বিক্রয় জোনের তৎকালিন ব্যবস্থাপক আ.ন.ম সালেহ, প্রকৌশলী তাজউদ্দিন ঢালী, শংকর দে, নিজাম উদ্দিন খান ও আরিফুল হকের কাছ থেকে টাকা আদায় করার কথা বলা হয়েছে। আর দুদকের তদন্তে বকেয়া টাকা আদায় করতে আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু কোনটিই বাস্তবায়ন হয়নি চার বছরে।
কর্ণফূলীর তৎকালীন এমডি আলী মোহাম্মদ আল মামুন পরবর্তিতে পেট্রোবাংলার পরিচালক হয়ে সম্প্রতি অবসরে গেছেন। পেট্রোবাংলার প্রতিনিধি হিসেবে তিনি কর্ণফূলীর বোর্ড মেম্বার ছিলেন। নিয়মানুযায়ী অবসর যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেজিডিসিএলের পদ থেকেও নাল এন্ড ভয়েট হয়ে যাওয়ার কথা; কিন্তু নজিরবিহীনভাবে তিনি এখনো আছেন। তাই পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা এখনো করছেন। যদিও পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে গেলে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা অফিসে নেই বলে এসএটিভির অনুসন্ধানী টিমকে ভেতরে ঢুকতেই দেয়নি নিরাপত্ত্বারক্ষীরা।