রাষ্ট্রীয় মদদে জি টু জিতে নিম্নমানের সার আমদানি, শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৩:১৭:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৫০৪ বার পড়া হয়েছে
সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের নিয়ম কানুনকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করে জিটুজির পদ্ধতিতে নিম্নমানের সার আমদানির অভিযোগ উঠেছে বিএডিসির বিরুদ্ধে। এছাড়া ভেজাল, নিম্নমানের সার আমদানির নামে পাচার হচ্ছে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয় ইফা কনফারেন্স। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ট্রেডিং কোম্পানির মালিক ও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ইফা কনফারেন্সে জিটুজির পদ্ধতিতে ভেজাল, নিম্নমানের সার আমদানির করে বাংলাদেশ থেকে যে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জি টু জি’র মাধ্যমে সেই দেশের সরকারি ভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে সার আমদানি করে থাকে। জিটুজির চুক্তি অনুযায়ী, সেই দেশের বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা কোনো ট্রেডিং কোম্পানির নিকট থেকে কোনোভাবেই সার আমদানি করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্রের কোনো নিয়মনীতিকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করে জিটুজির চুক্তির নামে চায়নার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। (যার ঠিকানা গ্লু ডিষ্ট্রিটেট, ফুজিয়া, চায়না)। প্রথম বছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে রপ্তানিকারক বানিয়ে চায়নার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউয়া এবং শ্যাং ফ্যাং নামক দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নমানের সার ক্রয় করে বাংলাদেশে প্রেরণ করেছে। বিএডিসির লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড বিভিন্ন বেসরকারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ভেজাল এবং নিম্নমানের সার ক্রয় করে থাকে। পরের বছর থেকেই বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড, আমদানিকারক সেজে ইউয়া এবং শ্যাং ফ্যাং নামক দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে সার ক্রয় করে দেশে প্রদান করে। বেসরকারিভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাগজপত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান সাজিয়ে সার সরবরাহের অনুমতি প্রদান করে। এছাড়া, বিএডিসি চায়নার বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে চায়নার যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সার আমদানি এবং যে কোনো বন্দর ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, চায়না থেকে যে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে, সেই ডিএপি সারে ১৮% নাইট্রোজেন এবং ৪৬% ফসফেটসহ ৬৪% থাকার কথা এলসিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেডকে চায়নার যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সার আমদানি এবং যে কোনো বন্দর ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করায়, তারা ৬৪% স্যারের সাথে নিম্নমানের ৫৭% ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার মিশিয়ে রাতের আধাঁরে জাহাজে লোড করছে। আবার এই ৫৭% ডিএপি স্যারের মধ্যে ফসফেট ৪৩% এবং ১৪% নাইট্রোজেন রয়েছে। ডিএপি সারে নাইট্রোজেন ও ফসফেট ৬৪% হিসেবে চায়না থেকে আমদানিকৃত প্রতি মেট্রিকটন স্যারের মূল্য, জাহাজ ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ ৮৯০ থেকে ৮৯৫ মার্কিন ডলার। প্রতি মেট্রিকটন সারে ৭% নাইট্রোজেন ও ফসফেট কম দেওয়ার কারণে প্রতি মেট্্িরকটন সারে মূল্য কমে যায় প্রায় ১০০ মার্কিন ডলার।
সূত্রটি আরো জানায়, চায়নার বেসরকারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ২ থেকে ৩ ধরনের গ্রেডের ডিএপি সার উৎপাদন করে থাকে। সেই কারণে ৬৪% স্যারের সাথে ৫৭% সার মেশানো সহজ হচ্ছে। আমদানিকৃত সার জাহাজীকরণের সময়, চায়নার লোকাল কোম্পানি বানিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড প্রতি ৪০ হাজার মেট্রিকটন সারের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার রাতের অন্ধকারে মিশ্রন করে জাহাজ লোড দিচ্ছে। জাহাজীকরণের সময় জাহাজের নিচে প্রথমে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন সার লোড করে। তার উপরে ২৫ থেকে ২৬ হাজার মেট্রিক টন ৬৪% নাইট্রোজেন ও ফসফেট সংযুক্ত সার লোড করে থাকে। আগামী ৩০ অক্টোবর চায়না থেকে ৪৪ হাজার মেট্্িরকটনের আরো ৩টি জাহাজ নিম্নমানের সার নিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। সরকারের উচিত এখনই চায়নাতে যে সার জাহাজে লোড করা হচ্ছে সেটা বন্ধ করা। যদি বন্ধ করা না হয় তাহলে সেই সার ব্যবহার করলে দেশের প্রান্তিক চাষীদের ফসল উৎপাদনে ব্যাপকভাবে ক্ষতি হবে।
বিএডিসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান, নিম্নমানের সার দেশে আসার মূল কারণ হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশি একটি অখ্যাত এবং নিম্নমানের কোম্পানিকে ইন্সেপেকশনের জন্য নিয়োগের কারণে। ইন্সেপেকশন কোম্পানি এলসির ক্লজ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সারের মধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট এলসি অনুযায়ী আছে কিনা এবং সারের কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি বুঝে নিয়ে সারের স্পর্শ কাতর বিষয়ে সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। কোম্পানি কোম্পানি এলসির ক্লজ অনুযায়ী সার্টিফিকেট ইস্যু করণের পর রপ্তানিকারক এই সার্টিফিকেট ব্যাংকে জমা দিয়ে তার বিল উত্তোল করে থাকে। সচরাচর যে কোনো পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ইন্সপেকশন কোম্পানি এসজিএস (আমেরিকা) ইন্সপেক্টরেট অথবা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিদেশি কোনো কোম্পানি দ্বারা সারের গুণগতমান পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট ইস্যু করণের কথা এলসিতে উল্লেখ থাকলেও সোনালী ব্যাংকের দেয়া গত ২৫ সেপ্টেম্বর এলসিতে কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক নাম স্বর্বত্র, অখ্যাত এবং নিম্নমানের ইন্সপেকশন এই কোম্পানি উল্লেখ করেছে। যার কারণে এই চক্রটি তাদের টাকা এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা সহজ হয়েছে। নাম স্বর্বত্র, অখ্যাত এবং নিম্নমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং. (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু টাকা পাচারের সহযোগী না তারা দেশের ১৩ কোটি প্রান্তিক কৃষকের সাথে প্রতারণা করছে। আমদানিকৃত সারে ৫০% থেকে ৫৫% নাইট্রোজেন ও ফসফেট মেশানোর কারণে প্রতি মেট্রিক টনে ৯৫ থেকে ১শ ডলার এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে নিচ্ছে। এছাড়া এই চক্রটি একইভাবে তিউনিশিয়া এবং মরক্কো থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকার টিএসপি সার আমদানি করা হচ্ছে, সেই সারের গুণগতমান পরীক্ষার জন্য নাম স্বর্বত্র, অখ্যাত এবং নিম্নমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ করা হয়েছে। সূত্রটি জানায়, কানাডা ও রাশিয়া থেকে যে সার আমদানি করা হয় সেই সার প্রতি জাহাজে ৩০ হাজার মেট্্িরকটন করে সার আমদানির নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রতি জাহাজে তারা ৪৫ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন সার লোড করে নিয়ে আসছে। ৩০ হাজার মেট্রিকটন জাহাজের পরিবর্তে যদি ৪৫ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটনের জাহাজে করে সার আমদানি করা হয় সে ক্ষেত্রে প্রতি টন সারে ১৫ থেকে ২০ ডলার বেশী নেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রতি মেট্রিকটনে যে ১৫ থেকে ২০ ডলার বেশী নেয়া হচ্ছে সেই টাকাটা কে পাচ্ছে। কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক এই অখ্যাত প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর বাড্ডার প্রগতি স্মরনীর ট্রপিক্যাল মোল্লা টাওয়ারে অবস্থিত। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিমাসে এই সকল এলসি অডিট করে থাকলেও কীভাবে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচার করছে?
সূত্রটি জানায়, চায়না থেকে সার দেশে আসার পর জাহাজের উপর টেস্ট করণের জন্য স্যাম্পল নিয়ে টেস্ট রিপোর্ট প্রদান করে। চায়না থেকে যে ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানি করা হচ্ছে সেই সার প্রতি মেট্রিকটনের মূল্য ৮৯৫ মার্কিন ডলার। প্রতি মেট্রিকটন সারে দাম ৮৯০ মার্কিন ডলার। ৮৯৫ মার্কিন ডলার। প্রতি ১% নাইট্রোজেন ও ফসফেট সারের মূল্য ১৩.৯৮৪ মার্কিন ডলার। প্রতি মেট্রিকটন সারে ৭% নাইট্রোজেন ও ফসফেট উপাদান কম প্রদান করায় ১০০ মার্কিন ডলার অতিরিক্ত এলসির মাধ্যমে পাচার করে নিচ্ছে। প্রতি ৪০ হাজার মেট্রিকটন জাহাজে প্রতি ডলার বাংলাদেশি টাকায় ১২২ টাকা হারে ১৮ কোটি ৩০ লাখ পাচার করে নিচ্ছে এই চক্রটি।
এদিকে তিনেশিয়া, মরক্কো থেকে মোজাইক কোম্পানি মধ্যস্থতায় বেশী মূল্যে যে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সার আমদানি করা হচ্ছে। আমদানিকৃত সারের মধ্যে রয়েছে ডাস্ট সার এবং হেভি মেটাল সার। এই সারে রিসাইক্লিন মেশানো হয়। হেভি মেটাল সারে ১০% সোডিয়াম থাকার কথা। সেই সারের মধ্যেও সেই দেশের লোকাল ট্রেডিং কোম্পানি একই প্রক্রিয়ায় প্রতি ৪০ হাজার মেট্রিকটন জাহাজের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন ভেজাল সার মিশ্রন করে জাহাজ লোড দিচ্ছে। এতে শত শত কোটি টাকা এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে নিচ্ছে এই চক্রটি।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের এলসি শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, জি টু জিতে আমদানিকৃত কোনো পণ্য লোকাল ইন্সপেকশন কোম্পানি দ্বারা ইন্সপেকশন করার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের আইপিও এবং এস আর তে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, আমদানিকৃত পণ্য ইন্সপেকশন করবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিদেশি ইন্সপেকশন কোম্পানি। যদি কোনো ইম্পোর্টার কিংবা কোনো বায়ার নিজের আমদানিকৃত পণ্যের গুণগতমান বিদেশি ইন্সপেকশন কোম্পানি থেকে বুঝে নিতে সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে তিনি ইন্সপেকশন কোম্পানিকে নিয়োগ করতে পারেন। এছাড়া বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য ইন্সপেকশনের জন্য লোকাল কোনো ইন্সপেকশন কোম্পানিকে দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান লোড পোর্টে সার জাহাজীকরণের সময় এলসি অনুযায়ী সারের নমুনা সংগ্রহ করে নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি বুঝে নিয়ে সারের স্পর্শ কাতর এই সার্টিফিকেট ইস্যু করে। সার্টিফিকেট ইস্যু পর সরকার আমদানি কারকদের মূল্য পরিশোধ করে। এই চক্রটি কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড এই প্রতিষ্ঠান সারের ইন্সপেকশন না করে নিজেদের মতো করে ইন্সপেকশন রিপোর্ট তৈরি করে আমদানি কারকদের প্রদান করে শত শত কোটি টাকা পাচার করে নিচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে আমদানিকৃত কোনো পণ্য ইন্সপেকশন করার জন্য লোকাল কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া ‘কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড’ নামক বাংলাদেশি অখ্যাত এবং নিম্নমানের এই কোম্পানি কে ইন্সপেকশন করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে টাকা পাচার করার জন্য। নাম স্বর্বত্র, অখ্যাত এবং নিম্নমানের এই ইন্সপেকশন কোম্পানি কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটি ঠিকানায় উল্লেখ করা হয়েছে রাজধানীর বাড্ডার ট্রপিক্যাল মোল্লা টাওয়ারে। ইন্সপেকশন কোম্পানীর ফি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করার কথা থাকলেও বিধিবহির্ভূত ভাবে কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানকে ইন্সপেকশনের জন্য ফি পরিশোধ করছে বিএডিসি। সরকারি আইন ভঙ্গ সরকারি সারের বিনির্দেশমালা অনুয়ায়ী সার আমদানি করা হয় এক্ষেত্রে কোন উপকরণ কম হলে সারের দাম সে অনুপাতে কম হবে।
কে এই কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেডের মালিক মোহাম্মদ উল্লাহ
কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশি দুর্বল ইন্সেপেকশন কোম্পানীটির মালিক মোহাম্মদ উল্লাহ। মোহাম্মদ উল্লাহ গত ১৫ বছরের বেশী সময় যাবৎ বিএডিসি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সারের এলসির মাধ্যমে এসব অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দেশের প্রান্তিক কৃষকদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত মোহাম্মদ উল্লার ব্যাবসায়িক পার্টনার হলেন বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের জামাতা পরিচয়দানকারী মোঃ সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন মালয়েশিয়াতে অবস্থান করে বিএডিসির এজেন্ট হিসেবে এই কাজ পরিচালনা করছে। এছাড়া ইন্সপেকশন কোম্পানির বিল সাধারণত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রদান করে থাকে। কিন্তু কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশি দুর্বল ইন্সপেকশন কোম্পানিটির বিল প্রদান করছে বিএডিসি। কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক বাংলাদেশি দুর্বল ইন্সেপেকশন কোম্পানির মালিক মোহাম্মদ উল্লাহ। কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেডের পরীক্ষাগার কোথায়, কোন প্রক্রিয়ায় এবং কি ভাবে রিপোর্ট তৈরি করে থাকে, আমদানিকারকদের কে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে থাকে, কীভাবে রিপোর্ট প্রদান করে থাকে সেসব বিষয়ে জানতে ইন্সেপেকশন কোম্পানির মালিক মোহাম্মদ উল্লাহকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপ কল, খুদেবার্তা প্রদান করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং খুদেবার্তারও কোনো জবাব দেননি। উল্লেখ্য, মোহাম্মদ উল্লাহ বিগত ১৫ বছর যাবৎ বিএডিসির মাধ্যমে এই প্রতারণা করে আসছে।
মোহাম্মদ উল্লার ব্যাবসায়িক পার্টনার হলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের জামাতা মোঃ সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন বর্তমানে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করে এই ব্যাবসা পরিচালনা করছে। চায়নার আমদানিকারক এবং বিএডিসির মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন বিদেশি আমদানিকারকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা গ্রহণ করছে।
অভিযোগ উঠেছে, চায়না, তিনেশিয়া, মরক্কো থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকার সার আমদানি করা হচ্ছে, সেই সারের গুণগতমান পরীক্ষার জন্য নাম স্বর্বত্র, অখ্যাত এবং নি¤œমানের কন্টিনেটাল ইন্সেপেকশন কোং (বিডি) লিমিটেড নামক এই প্রতিষ্ঠানটিকে কেন দেওয়া হয়েছে সেটা তদন্তের জোর দাবি উঠেছে।

















