বন্যা দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

- আপডেট সময় : ১২:১২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
- / ১৫৪১ বার পড়া হয়েছে
জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও পাবনা সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সব নদ-নদীর পানি বেড়ে এখনো বিপদসীমার উপরে বইছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত নানা রোগ।
ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি সামান্য কমলেও এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এ অবস্থায় দিন যতই যাচ্ছে এক মাসেরও বেশি দীর্ঘ বন্যায় কষ্ট বেড়েই চলেছে জেলার ৪ শতাধিক চরের প্রায় ৪ লক্ষাধিক বানভাসী মানুষের। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইতে থাকায় তৃতীয় দফায় আবার টানা ৪ দিন পানি বৃদ্ধির পর এখন পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে মাত্র ৩ সেন্টিমিটার কমে সোমবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার এখনো ৮৫ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যমুনার পানি বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জামালপুরে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে ব্রহ্মপুত্রের পানি। ফলে উন্নতি হয়নি সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির। বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ৭ সেন্টিমিটার কমে সকালে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ও একই সময়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর পানি বাড়ায় জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত, বন্দরখোলা, মাদবরেরচর ও সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরই মাঝে নদী ভাঙ্গনের ফলে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার।
ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যাপরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় সাড়ে ৫শ’ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী হয়ে রয়েছে।
নেত্রকোনায় পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে। তৃতীয়বারের বন্যায় দুর্গত এলাকায় পানিবন্দি মানুষ খেয়ে না খেয়ে কোনমতে দিনযাপন করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
এদিকে, পাবনায় বেড়েই চলছে পদ্মা-যমুনা নদীর পানি। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানাগেছে, সকালে যমুনা নদীর পানি বেড়ে নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর পদ্মার পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ০.৮০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। পানি বন্দি হয়ে পরেছে কয়েক হাজার মানুষ।